AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

রোগ-জীবাণু ছড়াচ্ছে হাসপাতালের নোংরা টয়লেট


Ekushey Sangbad

১০:৪৬ এএম, অক্টোবর ১৭, ২০১৪
রোগ-জীবাণু ছড়াচ্ছে হাসপাতালের নোংরা টয়লেট

একুশে সংবাদ : যে প্রতিষ্ঠানটি রোগ-ব্যাধি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টিতে সারাদেশে কাজ করে, রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হচ্ছে কিনা তদারকি করে এবং সারাদেশের চিকিৎসকদের পরিচালনা করে সেই স্বাস্থ্য অধিদফতর নিজেই সচেতন নয়। সরকার জাতীয়ভাবে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস পালন করে সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে বললেও খোদ স্বাস্থ্য অধিদফতরকেই যেন সচেতন করতে পারেনি। স্বাস্থ্য অধিদফতর ভবনের প্রায় সব কয়টি টয়লেট নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন। নেই হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। একই চিত্র রাজধানীর সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে। নোংরা অপরিষ্কার টয়লেটে দুর্গন্ধের কারণে যেতে হয় নাক চেপে। টয়লেটের সবখানে উপচে পড়ে মলমূত্র। রোগীদের কথা আপাতত বাদ, সুস্থ লোক ওই টয়লেটে গেলে অসুস্থ হয়ে যাবে। আর রোগী হবে আরো অসুস্থ। রাজধানীর বাইরের সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও নেই হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। টয়লেট নির্মাণের পর কবে তা পরিষ্কার করা হয়েছে বলতে পারবে না কেউ। বাধ্য হয়ে নোংরা এসব টয়লেট রোগীরা ব্যবহার করছে। এমনকি ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীদের টয়লেটের অবস্থা একই। গত বুধবার বিশ্বব্যাপী পালিত হলো হাত ধোয়া দিবস। বাংলাদেশেও সরকারি-বেসরকারিভাবে দিবসটি পালন করা হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, নিয়মিত হাত ধোয়া হলে সংক্রামকসহ ২০টি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এই চিকিৎসকরাই কেউ কেউ সরকারি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ও হাসপাতালের পরিচালক, কেউ কেউ জেলা সদর হাসপাতাল কিংবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধানের দায়িত্বে রয়েছেন। তাদের হাত দিয়ে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। অথচ সামান্য টাকার সাবান ও বেসিন নির্মাণ করার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেন না তারা। টয়লেটগুলো পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারেও তাদের নজর নেই। সারাদেশে যে ইবোলা ভাইরাস আতংক চলছে, এই অবস্থায় সংক্রামক ব্যাধিটি থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত হাত ধোয়া আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রাজধানীর সরকারি ৫টি হাসপাতাল পরিচালক জানান, হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করাটা খুবই জরুরি। একটু সচেতন হলেই ২০টি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তারপরও আমরা বিষয়টিকে গুরুত্ব দেই না। তারা অতি সত্বর হাসপাতালে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে ঘোষণা দেন। খোদ স্বাস্থ্য অধিদফতরে মহাপরিচালক, পরিচালক ও কোন কোন উপ-পরিচালক ছাড়া দর্শনার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ব্যবহারের জন্য টয়লেটের অবস্থা খুবই করুণ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে বাথরুম নোংরা ও অপরিষ্কার। বেসিন থাকলেও হাত ধোয়ার জন্য সাবান নেই। মলমূত্র ত্যাগ করে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দর্শনার্থীরা বের হচ্ছেন হাত না ধুয়ে। দুই জন কর্মকর্তা বলেন, এখানকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি আর কেনাকাটা বাণিজ্যে ব্যস্ত। এদিকে খেয়াল রাখার সময় কই তাদের। এই অফিসের টয়লেট দেখলেই বলে দেয়া যায় সারাদেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, জেলা সদর ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টয়লেটের চিত্র কেমন। বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ও সিভিল সার্জনরা নিয়োগ বদলি ও কেনাকাটা বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত। তারা সরকারি হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হাত ধোয়া ও পরিবেশ নিয়ে ভাবেন না। রোগীরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে সংক্রামকসহ ২০ ধরনের রোগের ঝুঁকিতে থাকে। তাদের সঙ্গে আসা দর্শনার্থী ও অভিভাবকরাও থাকেন ঝুঁকিতে। মেডিক্যাল অফিসার, আবাসিক সার্জন ও কনসালটেন্টরা একই ঝুঁকিতে রয়েছেন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে দৈনিক ৪ হাজার রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। তাদের জন্য নেই টয়লেট ও বেসিন। জরুরি বিভাগে প্রতিদিন সহস্রাধিক সংকটাপন্ন রোগী আসে। সেখানেও হাত ধোয়া ও টয়লেটের ব্যবস্থা নেই। যে একটি টয়লেট আছে, তাও ব্যবহার করার মতো নয়। ভেতরের টয়লেটগুলোও নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর। নেই হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিয়মিত হাত ধোয়া খুবই জরুরি; কিন্তু বিষয়টিকে কেউ তত গুরুত্ব দেয় না। অতি শিগগির হাসপাতালে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে তিনি জানান। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, ফুলবাড়িয়া সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, জাতীয় হূদরোগ ইনস্টিটিউট, কিডনি ও মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, পঙ্গু হাসপাতাল, মহাখালী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, ক্যান্সার ইনস্টিটিউট ও বক্ষব্যাধি হাসপাতালে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা নেই এবং বাথরুমগুলোর করুন অবস্থা। যা রোগীদের পক্ষে ব্যবহার করা কঠিন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, শুধু নিয়মিত হাত ধুলেই ২০টি রোগ থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া যায়। এ সামান্য কাজেই বিরাট সাফল্য। সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও ক্লিনিকে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে মন্ত্রী জানান। রাজশাহী প্রতিনিধি জানায়, স্থানীয় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ রাজশাহীর সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোতে হাত ধোয়ার কোনো বেসিন নেই। তবে অপারেশন থিয়েটার এবং চিকিৎসকদের অফিস কক্ষে হাত ধোয়ার বেসিনসহ জীবাণুমুক্ত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রয়েছে। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালের ওয়ার্ড সরেজমিন ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। শুধু তাই নয়, রামেকসহ সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোর বাথরুমের অবস্থাও খুবই করুণ। বাথরুমের দুর্গন্ধে রোগীরা আরো অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে অভিযোগ করেছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। রাজশাহী জেলার ৯টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর অবস্থাও একই বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন বলেন, ব্যাপারটা অবশ্যই স্পর্শকাতর। সংক্রামক রোগী অথবা যেসব রোগীর শরীর স্পর্শ করার পর ওই রোগীর জীবাণু অন্যান্য রোগীর শরীরে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে সে ক্ষেত্রে ওয়ার্ডে ব্যবস্থা না থাকলেও সংশ্লিষ্ট চিকিত্সক অবশ্যই বিশেষ ব্যবস্থায় হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করেন। বরিশাল প্রতিনিধি জানায়, দক্ষিণাঞ্চলে সর্ববৃহৎ হাসপাতাল শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের জন্য হাত ধোয়ার কোন ব্যবস্থা নেই। এ হাসপাতালের ১২টি ওয়ার্ডের প্রায় ২৮টি ইউনিট রয়েছে। প্রত্যেক ইউনিটে রয়েছে বাথরুম ও টয়লেট। রোগীদের হাত-মুখ ধোয়ার জন্য শুধু একটি ইউনিটে বেসিন রয়েছে। বাকি সবই পুরনো আমলের পানির ট্যাপ। এ সব পানির ট্যাপ বিকল থাকায় রোগীরা বাইরের পানি ব্যবহার করে থাকে। বরিশাল সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর চিত্র প্রায় অভিন্ন। জেলার নদী বেষ্টিত মেহেন্দীগঞ্জ, হিজলা, মুলাদী, বাবুগঞ্জ, বাকেরগঞ্জ ও বানারীপাড়া-গৌরনদীতে খোঁজ নিয়ে একই চিত্রের খবর জানা গেছে। কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালের হাত-মুখ ধোয়ার সিংহভাগ বেসিন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে আছে। এছাড়া টয়লেট ও বাথরুমগুলোয় ময়লা জমে দুর্গন্ধে শ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম। পানির সংকটসহ নানান সমস্যায় রোগী ও রোগীর স্বজনদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি জানান, এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা নেই। বাথরুমে মলমূত্র ভাসছে। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/১৭-১০-০১৪:
Link copied!