গুনাহ থেকে বাচার উপায়
একূশে সংবাদ : পবিত্র কোরআনের সূরা আননিসার ৩১ নং আয়াতে আল্লাহপাক ঘোষণা করেছেন, 'যদি তোমরা সেসব বড় গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে পার যা থেকে তোমাদের বেঁচে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তবে আমি তোমাদের ছোটখাটো ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো ক্ষমা করে দেব এবং মর্যাদাপূর্ণ স্থানে তোমাদের প্রবেশ করাব।' মহান আল্লাহপাক এই অকাট্য ও সুস্পষ্ট ঘোষণার মাধ্যমে কবীরা গুনাহ বা গুরুতর অপরাধসমূহ থেকে আত্দসংবরণকারীদের বেহেশতে প্রবেশ করানোর চূড়ান্ত দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি আরও বলেন : '(তারাই মুমিন-বিশ্বাসী) যারা কবীরা গুনাহসমূহ ও অশ্লীলতা থেকে বেঁচে থাকে এবং গোসসা এলেও মাফ করে দেয়।' সূরা আশ শূরা-৩৭
আর এক স্থানে আল্লাহ বলেন : 'যারা কবীরা গুনাহসমূহ ও অশ্লীল কার্যাদি থেকে নিবৃত্ত থাকে, তাদের জন্য আপনার প্রভুর ক্ষমা অপরিসীম।' -সূরা আন নজম-৩২। রসুল (সা.)-এর হাদিসে বলা হয়েছে, 'বড় বড় গুনাহ থেকে সংযত থাকতে পারলে নিত্যদিনের পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ, জুমার নামাজ পরবর্তী জুমা পর্যন্ত এবং রমজান মাসের ফরজ রোজা পরবর্তী রমজান পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ের পাপসমূহের কাফফারাস্বরূপ মার্জনা লাভের নিশ্চয়তা বিধায়ক।' -মুসলিম, তিরমিজি।
মুসলমানদের নিজেদের আত্দরক্ষার জন্য গুরুতর অপরাধগুলো কি তা খুঁজে বের করা অতীব জরুরি। কবীরা গুনাহর সংখ্যা নিয়ে ওলামায়ে কেরামের মধ্যে কিছুটা মতের বৈপরীত পরিলক্ষিত হয়। কেউ কেউ বলেছেন : 'কবীরা গুনাহ বা জঘন্য প্রকৃতির পাপ সাতটি।' তাদের প্রদর্শিত দলিল হচ্ছে, নবী পাক (সা.) ঘোষণা দিয়েছেন : 'তোমরা সর্বনাশা সাতটি পাপ থেকে বেঁচে থাক।' তন্মধ্যে তিনি উল্লেখ করেছেন- (১) শিরক অর্থাৎ আল্লাহর সঙ্গে আর কাউকে শরিক সাব্যস্ত করা। (২) জাদু-বাণ মারা (৩) শরিয়তের হদ ছাড়া অবৈধভাবে কাউকে খুন করা (৪) এতিমদের বিষয়-সম্পত্তি আত্দসাৎ করা (৫) সুদ খাওয়া (৬) যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে আসা (৭) সতীসাধ্বী, সরল সোজা মুমিন রমণীদের প্রতি ব্যভিচারের মিথ্যা অপবাদ দেওয়া। -বোখারি ও মুসলিম। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, 'কবীরা গুনাহ সাতটি নয় বরং প্রায় সত্তরটি।' হজরত আবদুর রাজ্জাক ও তাবারি তাদের তাফসিরে বলেন : 'আল্লাহর শপথ! ইবনে আব্বাস (রা.) যথার্থই বলেছেন।' পবিত্র হাদিসে কবীরা গুনাহ কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যায় সীমিত করা হয়নি। বরং অকাট্য দলিল প্রমাণের আলোকে স্থিরিকৃত হয়, সেসব অপকর্মই কবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত, যেসবের জন্য ইহজীবনে হদ বা শাস্তি প্রদানের বিধান রাখা হয়েছে।
একূশে সংবাদ ডটকম/আর/১৯-১০-০১৪:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :