আমাদের মতো ওরাও বাঁচতে চায়
হাসানপুর গ্রামে প্রবেশ করলেই সারি সারি বৃক্ষে বিভিন্ন পাখির আদলে সাইনবোর্ড বানিয়ে এসব উপদেশ বাণী লিখে রেখেছে গ্রামের পাখিপ্রেমিক সচেতন মানুষরা। এখন সত্যি পাখিদের জন্য গ্রামটি অভয়ারণ্য।
জেলার মহাদেবপুর উপজেলা সদর থেকে ৬ কি. মি. উত্তর-পূর্বদিকে হাসানপুর গ্রাম। তবে এটা এখন পাখিগ্রাম হিসেবেই বেশি পরিচিত।
এ গ্রামের মানুষরা স্ব-উদ্যোগে গড়ে তোলে পাখিদের অভয়ারণ্য। হাজার হাজার পাখির আগমন ঘটে এখানে। পাখির কলকাকলি ও কিচির-মিচির শব্দে ঘুম ভাঙে এলাকাবাসীর।
কী গ্রীষ্ম, কী বসন্ত, আর কী শরৎ বারো মাসই এ গ্রাম সব ধরনের পাখির জন্য অভয়ারণ্য। শিকারিদের কাছ থেকে এ গ্রামের পাখিরা শতভাগ নিরাপদ। এ গ্রামের হরেকরকম পাখির মধ্যে রয়েছে, বক, রাতচোরা, মাছরাংগা, পানিকাউর, ঘুঘু, পানকৌড়ি, শামুকখোল ইত্যাদি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, দুই হাজার সাল থেকে এ গ্রামের গাছে গাছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বসবাস করতে শুরু করে। আর তখন থেকেই গ্রামবাসীরা পাখি শিকার না করে নিরাপত্তা দিতে শুরু করে। এ গ্রামের মানুষ নিজেরা তো পাখি শিকার করেই না, অন্যদেরও এলাকায় পাখি শিকার করতে দেয় না। এভাবে পাখির এক অভয়ারণ্য গড়ে তুলেছে পাখিগ্রামের বাসিন্দারা।
এখন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মনোরম এ পরিবেশ দেখতে প্রতিদিন কয়েকশ পাখি প্রেমিক মানুষ এখানে ভিড় জমাচ্ছে। গ্রামের মানুষ যেন এই পাখিগুলোকে পরম আত্মীয়ের মতো আগলে রেখেছে। কোনো শিকারি ভুলক্রমে এ গ্রামে প্রবেশ করলে গ্রামবাসীর প্রতিরোধের মুখে ফিরে যেত বাধ্য হন।
এই গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা ইউনুসার রহমান হেবজুল জানান, গ্রামবাসী বিশেষ করে যুবকরা পাখিদের প্রতি ভালবাসা দেখিয়ে এক বিরল নজির স্থাপন করেছে। কোনো পাখির ছানা ঝড় ঝাপটায় বাসা থেকে পড়ে অসুস্থ হলে গ্রামের যুবকরাই ওই পাখির ছানাকে তুলে সেবাযত্নের মাধ্যমে সুস্থ করে বাসায় তুলে দেয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুর রহমান জানান, এ অভয়ারণ্য রক্ষায় ব্যক্তিগত তত্ত্বাবধায়নে ইতোমধ্যেই সহযোগিতা করা হয়েছে। এটির উন্নয়নে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২০-১০-০১৪:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :