গুঁড় তৈরিতে প্রস্তুত ঝিনাইদহের গাছিরা
একুশে সংবাদ : কার্তিক মাস শুরুর সঙ্গে সঙ্গে খেজুর গাছ ছেঁটে গুঁড় তৈরি করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ঝিনাইদহের গাছিরা।
রোববার জেলার পশ্চিমাঞ্চল আসাননগর, বোড়াই ও রাঙ্গিয়ারপোতাসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে রস উৎপাদনের জন্য খেজুর গাছ ছাঁটার দৃশ্য চোখে পড়ে।
শীত মৌসুমে খেজুর রস থেকে পাটালি তৈরি করে বিক্রি করা অধিক লাভজনক হওয়ায় এবছরও গুঁড় তৈরি করার দিকে ঝুঁকছে গাছিরা।
আশা করা যাচ্ছে আগামী এক সপ্তাহ পর থেকেই প্রতিটি গাছ থেকে রস পাওয়া যাবে।
গত বছর খেজুরের গুঁড় এবং পাটালি বিক্রি করে প্রায় ৫৫ হাজার টাকা লাভ করেন বলে জানান কৃষক রহিম। এবছর আরও বেশি দামে গুঁড় এবং পাটালি বিক্রি করা যাবে বলেও আশা করছেন তিনি।
কথা হয় একই গ্রামের কৃষক মোহর উদ্দীনের সঙ্গে। তিনি জানান, গত বছর দশ কেজি ওজনের এক কলস গুঁড় উৎপাদন করতে খরচ হয়েছিল চার শ’ টাকা এবং বিক্রি হয়েছিল সাত শ’ টাকায়। তবে জ্বালানীর দামসহ আনুসাঙ্গিক ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এবছর খরচ আরও কিছু বেশি হতে পারে।
এরই মধ্যে অনেক কৃষক গুঁড় তৈরির সরঞ্জাম এমনকি জ্বালানীও সংগ্রহ করে ফেলেছেন বলে জানা গেছে। সদর ইউনিয়নের বংকিরা গ্রামের আব্দুল মিয়া জানান, খেজুর রস থেকে গুঁড় তৈরির কাজ শুরু করতে প্রাথমিক সরঞ্জাম- কলস এবং জ্বালানী সংগ্রহ হয়ে গেছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ঝিনাইদহে আনুমানিক তিন লাখ খেজুর গাছ রয়েছে। এর মধ্যে সদরের ১৭টি ইউনিয়নেই রয়েছে পঞ্চাশ হাজারের বেশি। সদর ইউনিয়নের কৃষকরা শীত মৌসুমে এসব গাছ থেকে প্রায় পাঁচ লাখ কেজি গুঁড় উৎপাদন করে থাকেন।
ঝিনাইদহ জেলা বন কর্মকর্তা অনিতা মন্ডল জানান, বৃহত্তর যশোর জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় দশ বছর আগে ঝিনাইদহে প্রায় ৮০ হাজার সৌদি খেজুর গাছের চারা রোপন করা হয়। এখন সেসব গাছ থেকেই রস উৎপাদন করছেন কৃষকরা। পাশাপাশি কৃষক এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও ব্যক্তিগত উদ্যোগে খেজুর গাছের কিছু চারা রোপন করেছেন।
খেজুর রস থেকে গুঁড় তৈরির সম্ভাবনার কথা জানান ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হজরত আলী। তিনি বলেন, বর্তমানে খেজুর গাছের পরিচর্চায় সরকারিভাবে কোনো অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয় না। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় খেজুর রস সংগ্রহ করে উন্নত পদ্ধতিতে কারখানায় গুড় তৈরি করা হলে দেশের বাইরে রপ্তানি করা যেতে পারে।
একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২১-১০-০১৪:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :