AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

অবমাননার উপত্যকা


Ekushey Sangbad

১২:৪৬ পিএম, অক্টোবর ২১, ২০১৪
অবমাননার উপত্যকা

একুশে সংবাদ : হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, যেকোনো মানুষের মৃতদেহকেই সম্মান দেখাবে। যখন তোমার সামনে দিয়ে কেউ কোনো মৃতদেহ নিয়ে যাবে, তুমি দাঁড়িয়ে তাকে সম্মান প্রদর্শন করবে। এই হাদিসের মর্মার্থ বইতে যেটুকু পড়েছি তা হলো এই: মৃতদেহটি ইহুদি না খ্রিষ্টানের, হিন্দুর না বৌদ্ধের, না অগ্নি-উপাসকের, আস্তিকের না নাস্তিকের, তা কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়। যিনি পৃথিবীতে এসেছিলেন এবং শেষবারের মতো চলে যাচ্ছেন, শেষ সম্মানটুকু তাঁর প্রাপ্য। খ্যাতি ও ব্যক্তিত্বের সংঘাত সব সমাজে সব কালেই ছিল। বঙ্গীয় সমাজে ছিল ও আছে, ব্রিটিশ সমাজেও আছে ও ছিল। আঠারো শতকের ব্রিটিশ রাজনীতিক, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, কূটনীতিক ও লেখক আর্ল অব চেস্টারফিল্ডের সঙ্গে প্রখ্যাত লেখক স্যামুয়েল জনসনের সম্পর্ক ভালো ছিল না। উভয়েই ছিলেন খর ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। চেস্টারফিল্ডের অমর গ্রন্থ লেটারস টু হিজ সান (তাঁর পুত্রের কাছে চিঠি)। ১৭৪৬ সালের ৯ অক্টোবর চেস্টারফিল্ড তাঁর পুত্রের কাছে লিখেছিলেন: An injury is much sooner forgotten than an insult. কোনো শারীরিক জখম শিগগিরই ভুলে যায় মানুষ, কিন্তু অপমান নয়। কোনো মৃতদেহকে ফুল দিয়ে সম্মান দেখানোই হোক বা গালাগাল দিয়ে অসম্মান বা অমর্যাদা করা হোক—তাতে তঁার কিছুই আসে যায় না। কারণ, তিনি তখন জাগতিক সবকিছুর ঊর্ধ্বে। কিন্তু যে মৃতকে অসম্মান করা হলো, তঁার যঁারা নিকটজন, যঁারা আরও কিছুকাল বেঁচে থাকবেন, তাঁরা স্মৃতিভ্রষ্ট না হওয়া পর্যন্ত ওই মৃতের অবমাননা ভুলতে পারেন না। অবমাননা হলো হিংসাপ্রসূত আচরণ। হিংসা থেকে জন্ম প্রতিহিংসার। প্রতিহিংসা পলিথিনের মতো। তা যতই মাটিচাপা পড়ুক না কেন কোনো দিনই পচে না। প্রজন্মের পর প্রজন্ম প্রতিহিংসা অটুট থাকে। গত সপ্তাহে ভারতের সর্বজন শ্রদ্ধেয় সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম এক প্রতিষ্ঠানের আমন্ত্রণে ঢাকা এসেছিলেন। ধারণা করি, মহাত্মা গান্ধীর রাজনৈতিক দর্শন দ্বারা তিনি প্রভাবিত। ঢাকায় তরুণসমাজের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় জনাব কালাম পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেছেন, পারমাণবিক শক্তি যখন মানবসভ্যতা ধ্বংসের জন্য ব্যবহার করা হয়, তখন তা অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় ভারত, পাকিস্তানসহ সব দেশের একসঙ্গে কাজ করা উচিত। (প্রথম আলো) কোনো হিংস্র প্রকৃতির মানবশত্রু ছাড়া ড. কালামের বক্তব্যের সঙ্গে কেউ দ্বিমত পোষণ করবেন না। আমিও একজন নগণ্য গান্ধীপ্রেমিক। ‘মিসাইল মানব’ আবদুল কালামের সঙ্গে দ্বিমত পোষণের প্রশ্নই আসে না; তবে আমি শুধু এটুকু যোগ করব: হিংসা পারমাণবিক বোমার চেয়ে বেশি ক্ষতিকর এবং হিংসা-প্রতিহিংসা মানবজাতির দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির কারণ। পারমাণবিক বোমা একবারে অনেক মানুষকে হত্যা করে এবং পঙ্গু করে অসংখ্য মানুষকে, ধ্বংস করে একটি নির্দিষ্ট জনপদ। কিন্তু হিংসা দীর্ঘ সময় ধরে অগণিত মানুষকে শেষ করে। হিংসা চিরস্থায়ী প্রতিহিংসার জন্ম দেয়। আণবিক বোমায় ধ্বংস করার পরেও হিরোশিমা ও নাগাসাকি পুনর্গঠিত হয়েছে। কোনো আগন্তুক এখন সেখানে গিয়ে বুঝতেই পারে না যে একদিন ওই নগর দুটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আণবিক বোমায় না জ্বলে যদি ওই দুই নগর হিংসা-প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলত, তাহলে গোটা জাপান দেশটাই জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়ে যেত। এখন যেমন পৃথিবীর কোনো কোনো দেশ সেই পথেই যাচ্ছে। সেসব দেশের রাজনীতির মূলমন্ত্রই হিংসা ও প্রতিপক্ষকে অবমাননা। গত পূজা ও ঈদের কয়েক দিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অধ্যয়ন কেন্দ্রের আমন্ত্রণে বাংলাদেশে এসেছিলেন ভারতের খ্যাতিমান রাজনৈতিক মনোবিজ্ঞানী ও সমাজতত্ত্ববিদ আশীষ নন্দী। কয়েক দিন ধরে শুয়ে শুয়ে আমি তাঁর দি ইনটিমেট এনিমি বইটি পড়ছি। উপনিবেশবাদও তাঁর একটি গবেষণার বিষয়। যাহোক, সেদিনের তাঁর বক্তৃতার বিষয়বস্তু ছিল Humiliation বা অবমাননা। পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিষয়টি খুবই সময় উপযোগী। বাঙালির অন্যকে অপমান করার প্রতিভা অপার। প্রতিপক্ষকে অপমান করতে তার উপলক্ষের অভাব হয় না। রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা থেকে শুরু করে রাস্তার পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে পর্যন্ত কোনো কারণ ছাড়াই অপমান করে বাঙালি উপভোগ করে নির্মল আনন্দ। বাঙালি যে শুধু জীবিতকে অপমান করে আনন্দ পায় তা-ই নয়, মৃতদেহকেও অপমান করতেও তার কোনো দ্বিধা নেই। গত কয়েক সপ্তাহে কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি গত হয়েছেন। তাঁদের একজন আবদুল মতিন। এই জাতিরাষ্ট্র গঠনে তাঁর অবদান কতটা তা যাঁরা জানেন না, তাঁরা যদি তাঁকে উপযুক্ত মর্যাদা না দেন তাঁদের দোষ দেওয়া যাবে না। কিন্তু যাঁরা তাঁর অবদান জানেন এবং জেনেও চেপে যান এবং দায়সারা গোছের শোক প্রকাশ করেন, তাঁদের অবহেলা ক্ষমার অযোগ্য। বাংলা ভাষা আন্দোলন, একুশে ফেব্রুয়ারি ও শহীদ মিনারের সঙ্গে আবদুল মতিনের সম্পর্ক কী—তা বলার ধৃষ্টতা আমার নেই। তার জন্য উপযুক্ত ব্যক্তিরা রয়েছেন; আমার কাছে রয়েছে কিছু জীর্ণ কাগজপত্র। কোনো কোনো মানুষের জন্য রাষ্ট্রীয় সম্মান কোনো আবশ্যক বিষয় নয়। একটা আনুষ্ঠানিকতামাত্র। পেলে এবং কেউ দিলে ভালো, না দিলেও ক্ষতি নেই। আমাদের স্বনামধন্যরা অবশ্য সবই চান। জীবিত অবস্থায় চান কোনো বড় পদ, বন বিভাগের শত শত বিঘা জমি, সরকারি ব্যাংক থেকে অফেরতযোগ্য কোটি কোটি টাকার ঋণ, হিন্দু সম্পত্তি ও খাসজমির ইজারা, বিহারিদের কোনো পরিত্যক্ত বাড়ি ভুয়া দলিলে ৯৯ বছরের মালিকানা, চুরি করা টাকায় অসংখ্য ফ্ল্যাটের স্বত্বাধিকারী হওয়া, খুব বড় বড় স্যুটকেস নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিদেশভ্রমণ প্রভৃতি। কিন্তু তাতেও তাঁদের মন ভরে না। বিপুল সম্পদ তো রেখে গেলেনই, মৃত্যুর পর শহীদ মিনারে গিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্মান পাওয়ার বন্দোবস্তও করে যান। আবদুল মতিনকে রাষ্ট্রীয় সম্মান দেওয়া হয়নি প্রটোকলের প্রবল বাধার কারণে। সেদিন শহীদ মিনারে ও-কথা শুনে আমি বোধ হয় কোনো চ্যানেলকে বলেছিলাম নন-কমিশন্ড সৈনিক হাবিলদার কাজী নজরুল ইসলামকে তিন বাহিনীর প্রধান ও বড় বড় জেনারেলরা খটাস খটাস করে স্যালুট ঠুকলেন কোন প্রটোকলে! আবদুল মতিনকে সরকার মৃদু সম্মানও দিয়েছে, আবার প্রটোকলের দোহাইও দিয়েছে। তবে অনেক মন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় নেতা তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে গিয়েছিলেন। তিনি শেষ দিকে ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। সুবিধাবাদী ও প্রাপ্তিযোগী রাজনীতি করা সম্ভব না হওয়ায় দল থেকে সরে যান। ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা এবং বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী হাজি রাশেদ খান মেনন সৌদি আরবে ছিলেন, তবে রাষ্ট্রীয় সম্মানপ্রাপ্তির ব্যাপারে তাঁর দলের কোনো ভূমিকা লক্ষ করিনি। আবদুল মতিনের পরপরই অকালে চলে গেল ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. পিয়াস করিম। জাতির জীবনে মতিন আর করিমের ভূমিকার তুলনার প্রশ্নই আসে না। গত কয়েক বছরে টক শোতে অংশ নিয়ে কিছু স্পষ্ট ও সাহসী কথা বলে পিয়াস জনপ্রিয়তা অর্জন করে। পিয়াস মারা যাওয়ার পরদিন কাগজে আমি দেখতে পাই পিয়াস নেই, কিন্তু তাকে নিয়ে কথা বলার লোক জুটেছে অনেক। পিয়াসের অনেক মতামতের সঙ্গে আমি একমত ছিলাম না। কিন্তু তার মেধাকে আমি মূল্য দিতাম। প্রচুর বই পড়ত এবং তার বিশ্লেষণী ক্ষমতা ছিল অসামান্য। পিয়াসকে আমি প্রথম দেখি ১৯৭২-এর মাঝামাঝি শেখ ফজলুল হক মণির বাংলার বাণী অফিসে তার বন্ধু ছাত্রলীগের ফেরদৌস আলম দুলালের সঙ্গে। উভয়কেই আমি তুমি ও তুই বলতাম। খবরে জানতে পারি, পিয়াস শেষ রাতের দিকে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করে। কোনোরকমে রাতটা পার হয়, সকালবেলায় মহাজোটের কয়েকটি ছাত্রসংগঠন সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দেয়, পিয়াস করিমের লাশ তারা শহীদ মিনারে নিতে দেবে না। কারণ হিসেবে তাকে বলা হয়, সে জামায়াত-বিএনপির দোসর, পাকিস্তানপন্থী, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী এবং শাহবাগের আন্দোলন সম্পর্কে সমালোচনামূলক বক্তব্য দিয়েছে। কোনো কোনো পত্রিকা তার মৃত্যুসংবাদ রচনার সময় এ কথাটি যোগ করতে ভুল করেনি যে পিয়াসের বাবা ছিলেন একাত্তরে শান্তি কমিটির মেম্বার বা চেয়ারম্যান। এসব কারণে শহীদ মিনারের মতো পবিত্র অঙ্গনে তার অপবিত্র লাশ নেওয়া যাবে না। তার লাশ শহীদ মিনারে নেওয়া ঠেকাতে পর্যাপ্ত পাহারাদারের ব্যবস্থা করা হয়। এবং বিস্ময়কর যা তা হলো সবচেয়ে সুকুমার শিল্পের যাঁরা সাধক, তাঁরা পর্যন্ত রংতুলি নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন। পিয়াসের মৃতদেহ কবর দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন ফরিদপুরে বলেছেন, ‘শহীদ মিনারে পিয়াস করিমের লাশ নেওয়ার অর্থ হলো দেউলিয়াপনা। পিয়াস করিমের নাম আগে আমরা শুনিনি। পরে জানলাম, তিনি নাকি বিএনপির নেতা এবং মধ্যরাতে টক শো করে বেড়ান। মধ্যরাতে পুলিশ ও চোর ছাড়া কেউ জেগে থাকে না। রাত ১২টার পর যাদের বুদ্ধি খোলে তারা হয় চোরের দোসর, না হয় পুলিশের দোসর।’ (যাযাদি) খুব কম গেলেও আমিও মধ্যরাতে টক শোতে যাই। আমার সঙ্গে অধিকাংশ সময় কোনো মাননীয় মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা থাকেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে সংসার করতে হয়। জীবিকার জন্য অনেক কিছু করতে হয়, প্রয়োজনে চুরি পর্যন্ত। পিয়াস যদি কয়েক মিনিটের জন্য মাটির তলা থেকে জীবন পেয়ে বেঁচে উঠত, তাকে বলতাম, তুই না হয় চোরের সহযোগী ছিলি, আমাকেও চোরের খাতায় নাম লিখিয়ে দিয়ে গেলি! পিয়াসের হতভাগ্য বাবাকে চিনতাম না, তবে তার চাচা আবদুর রহিমকে চিনতাম। আওয়ামী লীগ সরকারই স্বাধীনতার পরে তাঁকে করেছিল পুলিশের আইজি। পরে তাঁকে দিয়ে একটি কমিশনও গঠন করা হয়েছিল, যার কাজ ছিল মুক্তিযুদ্ধে যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের তালিকা করা। আমরা তাঁকে সাহায্য করেছি। আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বাবা সিরাজুল হক সাহেব ছিলেন বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত বিশ্বস্ত। এককালে জাঁদরেল আইনজীবী হিসেবে সবিতা রঞ্জনপাল ও সিরাজুল হক ছিলেন স্বনামধন্য। আনিসুল হক রোববার সাংবাদিকদের বলেছেন: ‘সদ্য প্রয়াত ড. পিয়াস করিমকে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রচারপত্র বিলি করার সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনী আটক করেছিল। পিয়াস করিমের বাবা সে সময় আওয়ামী লীগ নেতা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁকে জোর করে শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান বানানো হয়েছিল। ২০-২১ বছর আগে মারা যাওয়া একজন ব্যক্তি সম্পর্কে যে ধরনের কথা বলা হচ্ছে, তা শুনলে খুব কষ্ট লাগে, দুঃখজনক।...একাত্তরের মাঝামাঝি সময়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রচারপত্র বিলি করার সময় পিয়াস করিমকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ধরে নিয়ে কুমিল্লা সার্কিট হাউসে আটকে রেখেছিল। পিয়াস সম্পর্কে যা বলছি তা জেনেশুনে ও দায়িত্ব নিয়েই বলছি। সে সময় তার বয়স ছিল ১৩ বছর। পরে পিয়াসের বাবা অ্যাডভোকেট এম এ করিম পাকিস্তান সেনাবাহিনীর শর্ত মেনে বন্ডসই দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন। পাকিস্তানি বাহিনীর শর্ত ছিল, তারা পিয়াস করিমকে মুক্তি দেবে, তবে সে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কোনো কাজ করতে পারবে না। পিয়াস করিমের বাবা এম এ করিম একাত্তরে কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে এসে পাকিস্তানি বাহিনীর শর্ত মেনে ও বাধ্য হয়েই তিনি স্থানীয় শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান হন। এর পরও তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের রক্ষার চেষ্টায় তাদের ডান্ডি কার্ড (পরিচয়পত্র) দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা করেছেন।’ (সমকাল) এ তো গেল পরপারে যাওয়া বাবা ও ছেলের কাহিনি। কিন্তু যাঁরা এখনো মরেননি এবং ২০৪১ সালের আগেই হয়তো মারা যাবেন, তাঁদের উপায় কী? এ এক মারাত্মক পরিহাস! মারা গেলে যাঁদের মরদেহ নেওয়া যাবে না শহীদ মিনারে, জীবিত থাকতে তাঁদের ছবি টাঙিয়ে দেওয়া হলো সেই শহীদ মিনারেই। তাঁরা মহাজোটের তারিফ করে টক শোতে টেবিল চাপড়াতে না পারেন, কেউ কেউ এই সরকারের পতনও চাইতে পারেন ২০১৯-এর আগেই এরশাদ সাহেবের মতো, কিন্তু তাঁরা স্বাধীনতাবিরোধী ও পাকিস্তানপন্থী—সে প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ এক আশ্চর্য অবমাননার উপত্যকা। বিখ্যাত ব্রিটিশ লেখক তাঁর পিলগ্রিমস প্রগ্রেস-এ যা বলেছেন: দ্য ভ্যালি অব হিউমিলিয়েশন। সৈয়দ আবুল মকসুদ: গবেষক, প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক৷ একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২১-১০-০১৪:
Link copied!