পায়ের নয়, মনের জোরই ষোলো আনা !
একুশে সংবাদ : দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। বাবা নেই। পড়ার প্রতি তাঁর আগ্রহ প্রবল। পায়ে জোর নেই ঠিক। কিন্তু মনের জোর আছে ষোলো আনা।
সেই জোরেই এসএসসি পাস করেছেন। এখন তিনি উচ্চমাধ্যমিকে পড়ছেন। এত দিন টেনেটুনে তাঁর মা খরচ চালিয়েছিলেন। সম্প্রতি মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁর পড়া এখন বন্ধ হতে চলেছে।
মেয়েটির নাম সুমাইয়া আক্তার (১৮)। শেরপুর সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে কুমরি কাটাজান গ্রামে তাঁদের বাড়ি। সেই ছোট্টটি থাকতে টাইফয়েড হয়ে তাঁর পা দুটি অচল হয়ে যায়। কলেজে যেতে তাঁকে অনেক কষ্ট করতে হয়। দুই হাতের ওপর ভর করে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সড়কে ওঠেন। পরে সেখান থেকে অটোরিকশায় চড়ে নয় কিলোমিটার পথ পেরিয়ে কলেজ। কলেজে যাওয়া-আসা করতে ব্যয় হয় ৫০ টাকা। সুমাইয়া শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।
সুমাইয়া জানান, মা রাবিয়া খাতুন অন্যের বাড়িতে কাজ নেন। সারা দিন কাজ করে রাবিয়া ১০০ টাকা মজুরি পান। মেয়ের কলেজে যাতায়াতে সেই মজুরির ৫০ টাকাই চলে যায়।
সুমাইয়াদের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, ছোট একটি টিনের ঘর। ঘরের ভেতর একটি চৌকি। এর পাশে একটি টেবিল। টেবিলে বই সাজানো। মেঝেতে ছোট ছোট হাঁড়ি-পাতিল।
সুমাইয়া বলেন, ‘ছোট থাইকা মারে অন্যের বাড়িতে কাম করতে দেখতাছি। মায়ের আয়ে সংসার চলে। হেই মা-ই অহন অসুস্থ। প্রতিদিন কলেজে যাইতে ইচ্ছা করে। কিন্তু খরচের কথা ভাইবা যাওয়া অয় না।’
শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক শাহিউম্মুল বানীন জানান, সুমাইয়া খুবই আত্মবিশ্বাসী। লেখাপড়াতেও বেশ মনোযোগী। অর্থাভাবে প্রতিদিন কলেজে আসতে পারে না। সপ্তাহের দুদিন সে কলেজে আসে।
একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২২-১০-০১৪:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :