AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

'এখন সবাই চট করে অর্থশালী হতে চায়'


Ekushey Sangbad

০৬:১২ এএম, অক্টোবর ২৪, ২০১৪
'এখন সবাই চট করে অর্থশালী হতে চায়'

একুশে সংবাদ : সম্প্রতি প্রয়াত হয়েছেন প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ, জাতীয় অধ্যাপক এ এফ সালাহ্উদ্দীন আহমদ। ফটোজিয়ামআজিজুল রাসেল: স্যার, তিনটি রাষ্ট্র দেখেছেন আপনি, দেখেছেন ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণ, ভারতীয় উপমহাদেশের জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, দেশ বিভাগ, বাঙালির জাতীয়তাবাদী আন্দোলন। একজন প্রথিতযশা ইতিহাসবিদ হিসেবে এ সম্পর্কে কী বলবেন? সালাহ্উদ্দীন আহমদ: আমি কেমন ইতিহাসবিদ তা জানি না। সেটা বিচার করবে তোমরা, মহাকাল। আমি শুধু সত্যানুসন্ধানের চেষ্টা করেছি। সমাজ ও মানুষের বিবর্তন কীভাবে হয়েছে, তা জানতে চেয়েছি। বয়স তো কম হলো না। ৮০ বছরের স্মৃতি তো স্পষ্ট মনে আছে। সবকিছু নাটকের মতো দেখলাম। এখন এই সময়ের রাজনীতি সহনশীলতাহীন। রাজনীতিতে সহনশীলতার অভাব শুরু হয়েছিল সেই বিশ শতকের শুরু থেকেই। উপমহাদেশের রাজনীতির দুটো ধারা। একটি ধর্মনিরপেক্ষ, আরেকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী। বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনে আমি কখনো বিশ্বাস করিনি। নানাবিধ কারণে এ অঞ্চলের মানুষ পাকিস্তান আন্দোলনকে সমর্থন করেছিল। কারণ ছিল অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক। দেশ ভাগ হলে অর্থনৈতিক মুক্তি হবে, ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে—এ রকম ছিল চিন্তা। ১৯৪০-এ যখন প্রথম রেজল্যুশন হয়, তখন বলা হয়েছিল, দুটি পৃথক রাষ্ট্র হবে। একটি পূর্বে, আরেকটি পশ্চিমে। কিন্তু পাকিস্তানপন্থী নেতারা জিন্নাহর সঙ্গে চক্রান্ত করে সে রেজল্যুশন বদলালেন। তখন থেকেই মানুষের মনে প্রশ্ন জাগল। শেখ মুজিবের আত্মজীবনী পড়লেই এগুলো স্পষ্ট বোঝা যায়। কনভেনশনে, যেখানে রেজল্যুশন বদলানো হচ্ছে সেখানে তিনি উপস্থিত ছিলেন। তখন থেকেই তাঁর মনে সন্দেহ ও আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, পশ্চিম পাকিস্তান আমাদের লুটতরাজ করবে, কলোনি বানিয়ে রাখবে। তাঁর আশঙ্কা সত্য প্রমাণিত হলো দেশ ভাগের পর। আমাদের এখানে ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে একটা নতুন ধর্মনিরপেক্ষ আন্দোলনের সূচনা হলো। এর আগে আমাদের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনগুলো ছিল ধর্মভিত্তিক। এরপর থেকেই ধারাবাহিকভাবে স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে যেতে থাকি আমারা। আমাদের সভ্যতার মূল কথাই হলো পারস্পরিক লেনদেন, সহনশীলতা, হারমনি। ধর্ম নিয়ে দাঙ্গাহাঙ্গামা আগে এত প্রকট ছিল না। এটি শুরু হয়েছে উনিশ শতকের শেষভাগ থেকে। এখানে যাঁরা জ্ঞানচর্চা করছেন, অনেকেই অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি ধরে রাখতে পারেননি। দেখা যায় প্রথম জীবনে অসাম্প্রদায়িক ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনে উজ্জীবিত এমন অনেকেই শেষ জীবনে এসে আশ্রয় নিয়েছেন ধর্মীয় উগ্র মৌলবাদী রাজনীতিতে। এটা কেন হয়? সালাহ্উদ্দীন: এটা হয়। ব্রাহ্মসমাজের অনেকের ক্ষেত্রেও এ রকম দেখবে। অনেক ইয়ং বেঙ্গলের বেলায়ও এটা ঘটেছে। এই যে পরিবর্তন, এর পেছনে রাজনৈতিক ও সামাজিক অনেক কারণও রয়েছে। অনেকে আছেন, রায়টের অভিজ্ঞতা তাঁদের মনে ক্ষত সৃষ্টি করেছে; যে কারণে পরবর্তীকালে তাঁরা আরও সাম্প্রদায়িক হয়ে উঠেছেন। এগুলো তো আছেই, তার পরও আমরা এগুলো কাটিয়ে উঠছি আস্তে আস্তে। এই যে জঙ্গিবাদের উত্থান, এর পেছনে রাজনৈতিক কারণও রয়েছে। কমিউনিজমকে ঠেকাতে আমেরিকা মৌলবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ায় ওসামা বিন লাদেনের মতো জঙ্গিদের সৃষ্টি হয়েছে। পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ—সব জায়গায়ই এখন সাম্প্রদায়িকতার জয়জয়কার। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কি কোনো সম্ভাবনা নেই এ অঞ্চলে? সালাহ্উদ্দীন: সম্ভাবনা সব সময়ই থাকে। আমি আশাবাদী মানুষ। মানবিক মূল্যবোধ, মানুষে মানুষে ঐক্য—তা তো আছেই। সাম্প্রদায়িকতা তো আর জোর করে চাপানো যায় না। কোরআনেও আছে, মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। সৃষ্টির সেরা জীবের প্রধান সম্পদই তো মূল্যবোধ, মানবতাবোধ ও চিন্তাশীলতা। মানুষকে মানুষ হয়ে ওঠার জন্য এসব মূল্যবোধের চর্চা এবং মানবতাবাদের সাধনা করতে হবে। এখানকার ধর্ম আর সমাজ যা-ই বলো না কেন, মানবতাবাদী ধারাই তো প্রবল। শ্রী চৈতন্য দেখো, লালন দেখো, বাউল আর সুফি সাধকদের দেখো। তাঁদের মূল দর্শন মানবতাবাদ। বাংলার সমাজে এই মানবতাবাদ আজকের না, যুগযুগ ধরে এই ধারা চলে আসছে। আজিজুল: একটা অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়, আমাদের এখানে মানসম্মত গবেষণা তেমন হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে দলীয়ভাবে। জ্ঞান তৈরির থেকে দলবাজিতেই আগ্রহ বেশি... সালাহ্উদ্দীন: আমাদের আসলে একটা এনলাইটেন্ড সরকার দরকার। এটা না হলে জ্ঞান, শিক্ষা এসবের প্রতি তারা কখনো আগ্রহী হবে না। এটা আমদের নেই। সে কারণে সব ক্ষেত্রেই মান কমে যাচ্ছে। এখন সবাই চট করে অর্থশালী হতে চায়। জ্ঞান চর্চা করা, জ্ঞান সৃষ্টি করা, এতে উৎসাহের অভাব আছে। হয়তো সুযোগ-সুবিধারও অভাব রয়েছে। পড়াশোনার একটা পরিবেশ তো দরকার হয়। প্লেটোর কথায় যেতে হয়। তিনি বলেছিলেন, ফিলোসফার কিং প্রডিউসেস এনলাইটেন্ড গভর্নমেন্ট। এনলাইটেন্ড গভর্নমেন্ট প্রকৃত শিক্ষা প্রচলন করতে পারে। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২৪-১০-০১৪:
Link copied!