AB Bank
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

৭০ বছরে জাতিসংঘ, সফলতা কতটুকু


Ekushey Sangbad

০৯:২৬ এএম, অক্টোবর ২৪, ২০১৪
৭০ বছরে জাতিসংঘ, সফলতা কতটুকু

একুশে সংবাদ : আজ ২৪ অক্টোবর। ৬৯ বছর পূর্ণ করে ৭০ বছরে পা রাখছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক সংগঠন জাতিসংঘ। এ উপলক্ষে বিশ্বজুড়ে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ১৯৪৫ সালের এই দিনে বিশ্বের সে সময়কার অধিকাংশ স্বাধীন রাষ্ট্রের সম্মতিতে আত্মপ্রকাশ করে জাতিসংঘ। জাতিসংঘ সনদে সই করে এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রাষ্ট্রের মর্যাদা পায় ৫১টি দেশ। বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা ১৯৩টি। বাংলাদেশ জাতিসংঘের ১৩৬তম সদস্য। সময়ের প্রয়োজনে জাতিসংঘের প্রশাসনিক কাঠামোয় অনেক পরিবর্তন এসেছে। অঙ্গ সংস্থা বেড়েছে এবং এসব সংস্থার কার্যক্রম এখন বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত। জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর সুবিধাভোগী বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ। সেবাখাতে অনন্য অবদান রেখে চলেছে বহু সংস্থার প্রাণকেন্দ্র জাতিসংঘ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহ বাস্তবতা বিশ্বকে যেন আর মোকাবিলা করতে না হয় অর্থাৎ বিশ্বশান্তির কথা মাথায় রেখেই সৃষ্টি হয় জাতিসংঘ। এ সংগঠন প্রতিষ্ঠার পেছনে রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস। সেদিকে যাব না। ২০ শতকের জাতিসংঘ ২১ শতকে এসে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় কতটুকু অবদান রাখতে পারছে- এ প্রশ্নের উত্তরের খোঁজে এগিয়ে যাবে লেখা। প্রথমে উল্লেখ করতে চাই সম্প্রতি শেষ হওয়া জাতিসংঘের ৬৯তম সাধারণ অধিবেশনের প্রসঙ্গ। এ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘২০ শতকের জাতিসংঘ কাঠামো ২১ শতকে অচল, তার সংস্কার প্রয়োজন।’ জাতিসংঘের সংস্কারের ব্যাপারে বহুদিন এ রকম স্পষ্ট ভাষায় কেউ প্রস্তাব রাখেননি। মোদিকে ধন্যবাদ। তার দাবি যুগোপযোগী। ১৯৪৫ সালের বিশ্ব প্রেক্ষপট আজকের প্রেক্ষাপট এক নয়, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তখনকার বিবেচনায় সবচেয়ে ক্ষমতাধর পাঁচটি রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া ও ফ্রান্স জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্য হয়। বাকিদের মর্যাদা সাধারণ সদস্য। সবচেয়ে বড় পার্থক্য হলো, এই পাঁচ রাষ্ট্র কোনো বিষয়ে একমত না হলে, কোনো বিষয়ে জাতিসংঘ কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে না। পদক্ষেপও নিতে পারবে না। ২১ শতকে এসে পরিবর্তীত বিশ্ব পরিস্থিতিতে কেন এই নীতি মেনে চলতে হবে? পরাশক্তিদের ক্ষমতা সংরক্ষণের বিষয়টি মেনে নিয়েই অপেক্ষাকৃত অনগ্রসর দেশগুলো জাতিসংঘের সদস্য হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো- ক্ষমতা সংরক্ষণের এই আইন কি গণতান্ত্রিক? যদি গণতান্ত্রিক হয়, তবে কেন সাধারণ সদস্য ভেটো ক্ষমতার মালিক হতে পারবে না? স্থায়ী পাঁচ সদস্যের কোনো পরিষদে যোগ দিতে বা সদস্য হতে নির্বাচন করতে হয় না। তাদের ক্ষমতা চিরস্থায়ী। কিন্তু একটি সাধারণ রাষ্ট্রের কোনো পরিষদে যোগ দিতে নির্বাচন করতে হয়। এজন্য দেনদরবার করা লাগে। বিষয়টি কতটুকু গণতান্ত্রিক তা ভেবে দেখার সময় এসেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী সম্ভবত সে দিকেই নজর দেওয়ার কথা বলেছেন। তা ছাড়া পাঁচটির বেশি স্থায়ী সদস্য জাতিসংঘে কেন থাকবে না- এ প্রশ্নের মীমাংসা কে করবে, তারও কোনো কূল-কিনারা খুঁজে পাওয়া যায় না। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, চীন এখন অর্থনীতির সবচেয়ে বড় দেশ। পিছিয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তৃতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে ভারত। পরে জাপানের অবস্থান। যুক্তরাজ্যের অবস্থান দশে। এ তো গেল অর্থনীতির কথা। সামরিক শক্তিতেও ভারত অনেক এগিয়েছে। বিশ্বে জাপানের প্রভাবও কম নয়। ইউরোপের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে জার্মানি। এখন প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক- তারা কেন জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রের মর্যাদা পাবে না? এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নিরব বিতর্ক চলছে। এ বিষয়গুলো জাতিসংঘের সামগ্রিক কর্মকা-ে প্রভাব ফেলছে। বিশ্বশান্তির ব্যাপারে অনেক ইস্যুতে মতৈক্য হচ্ছে না প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে। ২১ শতকের কয়েকটি বড় যুদ্ধে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর ঐকমত্য ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা কয়েকটি মিত্র ইরাকে হামলা চালায়। একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের ওপর জাতিসংঘের সমর্থন ছাড়া হামলা করা যায় না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র গায়ের জোরে তা করেছে। শান্তির কথা বলে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ চালালেও তা শেষ পর্যন্ত ভয়াবহ শান্তি বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যে কারণে গোটা বিশ্বকে এখন ভুগতে হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আফগানিস্তানে হামলাও আন্তর্জাতিকভাবে বিতর্কিত হচ্ছে। এসব হামলা বা যুদ্ধে চীন ও রাশিয়া অংশ নেয়নি। অর্থাৎ জাতিসংঘের সমর্থন ছাড়াই সে দেশে হামলা হয়েছে। বিষয়টি বিশ্ব মতকে উপেক্ষা করার শামিল বলা যায়। কোনো রকম আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে যখন ফিলিস্তিনে একের পর এক হামলা চালিয়েছে ইসরাইল, তখন জাতিসংঘ ‘দুঃখ প্রকাশ, শোক জানানো’ ধরনের বক্তব্য-বিবৃতি দিয়েই দায় শোধের চেষ্টা করেছে। কিন্তু মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরাইলের শাস্তি দাবি করেনি যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। কিন্তু কেন? এর উত্তর একেক জনের কাছে একেক রকম হলেও আমি মনে করি, ইসরাইলের বন্ধু রাষ্ট্রের কাছ থেকে জাতিসংঘ কোনো সাড়া পায়নি। ফলে দেশটির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাতে ব্যর্থ হয়েছে জাতিসংঘ। এ ছাড়া আমরা দেখেছি, যুক্তরাষ্ট্র যখন সিরিয়ায় হামলা চালানোর জন্য প্রস্তুত বলে ঘোষণা দিল, তখন তারা জাতিসংঘের সম্মতি নেয়নি। এক্ষেত্রে রাশিয়া স্পষ্ট ভাষায় যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা করে এবং দেশটির মধ্যস্থতায় এক ধরনের সমঝোতা হয়। এ কথা এখন দিবালোকের মতো সত্য, সিরিয়ার বিদ্রোহীদের অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছে যুক্তরাষ্ট্র। সিরিয়ার বর্তমান সরকার স্বৈরশাসক হোক বা না হোক- তা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু সেখানে বিদেশি শক্তির কোনো একটি পক্ষকে সমর্থন করা কি সমীচীন? জাতিসংঘ সদন অন্তত তা বলে না। এ রকম অনেক বিষয়ে জাতিসংঘ কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ তার আদর্শ কতটা পালন করতে পারছে, তা নিয়ে পাহাড়সম সংশয় থেকে যায়। এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের সংস্কার প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। শক্তির বিচারে নয়, সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ হয়ে উঠুক একটি আদর্শ গণতান্ত্রিক সংগঠন- এটিই সবার কাম্য। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২৪-১০-০১৪:
Link copied!