AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

তাবলিগি জামাত ও ইসলাম


Ekushey Sangbad

১২:০৬ পিএম, অক্টোবর ২৬, ২০১৪
তাবলিগি জামাত ও ইসলাম

একুশে সংবাদ : ইসলাম বিশ্বজনীন ও সার্বজনীন ধর্ম। যা কোনো ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র, বংশ, বর্ণ কিংবা সময়ের সঙ্গে সীমাবদ্ধ নয়। দুনিয়ার মধ্যে ইসলামকে টিকিয়ে রাখার জন্য যুগে যুগে মহান রাব্বুল আলামিন এক লাখ বা দুই লাখ পয়গাম্বরের বিশাল জামাত প্রেরণ করেছেন। তারা মানবজাতিকে একাত্মবাদ ও অনাবিল শান্তির (জান্নাত) দিকে আহ্বান করেছেন। রসুল (সা.) বলেন, সব নবী আপন আপন গোত্রের (হেদায়েতের) জন্য প্রেরিত হতো। আর আমি প্রেরিত হয়েছি সমগ্র মানবজাতির (হেদায়েতের) জন্য। অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আমি কৃষ্ণ ও গোরা সবার প্রতি প্রেরিত হয়েছি। ইবনে মাজাহ শরিফের এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রসুল (সা.) বলেন, আমার জন্য সমগ্র জমিনকে মসজিদ ও পবিত্রতা অর্জনের উপকরণ বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, বলুন! হে মানুষ! আমি তোমাদের সবার জন্য আল্লাহর (প্রেরিত) রসুল। (সূরা আনআম : ১৫৮) অপর আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে, কত মহান তিনি, যিনি তার বান্দার ওপর ফুরকান (কোরআন) অবতীর্ণ করেছেন যাতে তিনি বিশ্ব জাহানের জন্য সতর্ককারী হতে পারে। (সূরা ফুরকান : ১) উলি্লখিত আয়াত ও হাদিস থেকে সুস্পষ্ট প্রতীয়মান হয়, নবী রসুলদের আল্লাহতায়ালা তাদের উম্মতের জন্য হেদায়েতকারী, ভীতি প্রদর্শনকারী ও সুসংবাদকারী হিসেবে প্রেরণ করেছেন। পরিশেষে শেষ নবী হজরত মুহম্মদ (সা.) তিনি বিশ্বজনীন ও সার্বজনীন। এক কথায় কেয়ামত পর্যন্ত বিশ্ববাসীর হেদায়েতের জন্য প্রেরিত হয়েছেন। তিনি তার আদর্শ ও উন্নত চরিত্রমাধুরী দিয়ে সাহাবায়ে কেরামদের এক বিশাল জামাতকে পরবর্তী উম্মতের জন্য হেদায়েতের আলোকবর্তিকা স্বরূপ গড়ে তুলেছেন। তার সাহচর্য প্রাপ্ত এই জামাত নিজেদের আরাম-আয়েশ ত্যাগ করে, পরিবার-পরিজনকে আল্লাহর হাওলা করে নিজেদের জীবনবাজি রেখে বিশ্বের আনাচে-কানাচে দীনের দাওয়াত নিয়ে বের হয়ে পড়েন। তাদের জানা ছিল না কোনো পথঘাট। ছিল না কোনো পরিচিত লোকজন। কণ্টকাকীর্ণ দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে তারা দেশ থেকে দেশান্তর ভ্রমণ করে বেড়িয়েছেন। গড়ে তুলেছেন বিশ্বের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মসজিদ, মাদারেস, মারাকেজ ও খানকা। সেসব মারাকেজ ও মাদারেস থেকে যুগে যুগে বহু মহামনীষী তৈরি হয়েছে। তৈরি হয়েছে দীনের দিকে আহ্বানকারী মুহাদ্দেসিন, মুফাসসেরিন, মুবাল্লেগিনদের এক বিশাল জামাত। যেমন ইমাম আবু হানিফা (র.), ইমাম শাফী (র.), ইমাম মালেক (র.), ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (র.), ইমাম বোখারি (র.), ইমাম মুসলিম (র.), শায়খ শরফুদ্দীন আবু তাওয়ামাহ (র.), শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলভি (র.), শাহ আশ্রাফ আলী থানভি (র.), হুসাইন আহমদ মাদানি (র.), হজরত ইলিয়াস (র.), মুর্শিদে কামেল আল্লামা দেলওয়ার হুসাইন (র.), (ফেনুয়ার হুজুর)সহ প্রমুখ উলামায়েকেরাম। দিনের সংরক্ষণের জন্য হজরত কাসেম নানতবী (র.) প্রতিষ্ঠা করেছেন দারুল উলুম দেওবন্দ। আর দীনের ইশাআ'ত (প্রচার ও প্রসার) করার জন্য হজরত ইলিয়াস (র.) গঠন করেছেন তাবলিগি জামাত। এই তাবলিগ জামাতের প্রতিটা নিবেদিতপ্রাণ সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও নিজেদের দায়িত্ব আদায় করার মানসে সম্পূর্ণ নিজ জিম্মায় বিশ্বের আনাচে-কানাচে বিচরণ করে বেড়াচ্ছেন। শত মুজাহাদা ও কোরবানি করে মানুষের ঘরে ঘরে শান্তির বাণী পৌঁছে দিচ্ছেন। পরিণামে তাদের শুনতে হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের কটূবাক্য। কিন্তু এই নিবেদিতপ্রাণ দীনি ভাইয়েরা নববী আদর্শে বলীয়ান হয়ে তাদের জন্য বদ দোয়া না করে হেদায়েতের জন্য আল্লাহর দরবারে শেষ রাতে উঠে কান্নাকাটি করছেন। এই দীনি ভাইদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আমাদের মতো গরিব দেশে প্রতি বছর আয়োজন হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমার। বিশ্ব ইজতেমার উসিলায় সমগ্র বিশ্বে দেশের সুনাম-সুখ্যাতি ও পরিচিতি বাড়ছে। নিজের দেশের আর্তমানবতার সেবা হচ্ছে। পথহারা মানুষ দীনের দিক-নির্দেশনা পাচ্ছে। পরস্পর ভ্রাতৃত্ববন্ধন অটুট হচ্ছে। লাখ লাখ জনতার এই ইজতেমার রক্ষণা-বেক্ষণের কাজটি করছেন স্বয়ং আল্লাহপাক। ফলে প্রতিটি দীনি ভাইয়ের অন্তরে আছে এক অজানা প্রশান্তি। নেই কারও মনে কোনো আক্ষেপ। যেখানে ধনী-গরিব, দেশি-বিদেশি সবাই একই ময়দানে উলামায়ে কেরামদের বয়ান শুনছেন। আর কায়মনে মাওলাপাকের জিকির-আসকারে নিজেদের আবদ্ধ রেখেছেন, আখেরি মোনাজাতের দিন দেশের আবাল-বৃদ্ধসহ সর্বস্তরের জনগণ এই দোয়ায় শরিক হওয়াকে নিজেদের সৌভাগ্যবান মনে করছেন। এই বিশ্ব ইজতেমার বিরুদ্ধাচরণ মানে নিজের ধর্ম-দেশ, এক কথায় নিজেই নিজের বিরুদ্ধাচরণ করা ছাড়া আর কিছুই নয়। আল্লাহপাক আমাদের সবাইকে সঠিক পথে পরিচালিত হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমিন। লেখক : খতিব, বায়তুল আমান জামে মসজিদ, বারিধারা, ঢাকা। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২৬-১০-০১৪:
Link copied!