জিকির ও দোয়ার ফজিলত
একুশে সংবাদ : ‘জিকির’ আরবি শব্দ। অর্থ স্মরণ করা।করুণার আধার মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের করুণা সর্বব্যাপী, আর তার রহমত সার্বজনীন। যিনি তার বান্দার জিকিরের প্রতিদান জিকিরের মাধ্যমেই দিয়ে থাকেন।
আল্লাহ পাক বলেন, “সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমিও তোমাদের স্মরণ করব।”(সূরা বাকারাহ্: ১৫২)। অর্থাত্ তোমরা যদি আমাকে আমার হুকুমের আনুগত্যের মাধ্যমে স্মরণ করো, তাহলে আমিও তোমাদের সাওয়াব ও মাগফিরাত দানের মাধ্যমে স্মরণ করব। আল্লাহ সুব্হনাহু তায়ালা যে উদ্দেশ্য সামনে রেখে মানবজাতি সৃষ্টি করেছেন, সে উদ্দেশ্য সাধিত হলে তিনি রাজি ও খুশি হবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ‘রাহমানুর রাহিম’ গুণবাচক নামধারী রাব্বুল আলামীন তার বান্দা কর্তৃক তাকে স্মরণের বিপরীতে তিনিও তার বান্দাদের স্মরণ করবেন বলে কালামে পাকে যে ঘোষণা দিয়েছেন এটাই হলো আল্লাহর রবুবিয়্যাতের নমুনা।
জিকিরের সম্পর্ক অন্তরের সাথে। তবে জিহ্বা যেহেতু অন্তরের মুখপাত্র, কাজেই মুখে স্মরণকেই জিকির বলে। জিকিরের ব্যাখ্যায় জনৈক মনীষীর উক্তি— “তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমার আনুগত্য ও ইবাদত করো, আমি তোমাদের স্মরণ করব আমার রহমত নাজিল করে।” (আহকামুল কুরআন)। মূলত জিকির শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে। কিন্তু অর্থ ভিন্ন হলেও শব্দটি এক অভিন্ন তাত্পর্যের লক্ষ্যাভিসারী। হজরত সায়ীদ ইবন জুবাইর (রা.) বলেন, “জিকিরের অর্থই হচ্ছে আনুগত্য ও নির্দেশ মান্য করা। অর্থাত্ যে ব্যক্তি আল্লাহর নির্দেশের আনুগত্য করে না, সে আল্লাহর জিকিরই করে না। প্রকাশ্যে যত বেশি নামাজ এবং তাসবীহ্ই পাঠ করুক না কেন।” আল্লাহর জিকির বলতে ঐশীগ্রন্থ পবিত্র আল-কুরআনুল কারীমে যে সব বিধি-বিধান বিধৃত হয়েছে, সে সবসহ ইসলামী শরীয়াতের সকল হুকুম-আহকাম পরিপূর্ণভাবে পালন করা। আবার জিকির দ্বারা তাসবীহ্, তাহ্লীল, দোয়া, এস্তেগফারকেও বোঝায়। মূলত এসবের সমষ্টিই হলো জিকির।
আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং নিজ আদেশে বান্দাদের তার নিকট যাঞ্চা ও দোয়া করার প্রেরণা যুগিয়েছেন। তিনি এরশাদ করেছেন— “তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।” এ আয়াত দ্বারা আল্লাহপাক তার নেক বান্দাসহ পাপী, নিকটবর্তী ও দূরবর্তী সব ধরনের বান্দাকে তাদের অভাব, আশা-আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করার ব্যাপারে উত্সাহিত করেছেন। অপর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, “তোমরা রবের নামে জিকির করো এবং সব কিছু থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে তার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করো।” (সূরা মুজাম্মিল: ৮)। ‘তাসবীহ্’ বা এস্তেগফার পড়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে রাব্বুল আলামীন কালামে পাকে বলেন, “আর তোমরা সূর্যাস্তের পূর্বে এবং সূর্যোদয়ের আগে তোমাদের প্রভুর গুণাগুণপূর্ণ তাসবীহ্ পাঠ করো এবং নিশিকালে সিজদার পর তার তাসবীহ্ পাঠ করো।” (তাফসীরে ইবনে কাসীর)। তাই প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আল্লাহ তায়ালার হামদ্, তাসবীহ্ ও তাক্বীর পাঠ করা উচিত।
একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২৮-১০-০১৪:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :