AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

নিজামীর মৃত্যুদন্ডাদেশ


Ekushey Sangbad

১২:৫৮ পিএম, অক্টোবর ২৯, ২০১৪
নিজামীর মৃত্যুদন্ডাদেশ

একুশে সংবাদ : একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীকে মৃত্যুদন্ডাদেশে দন্ডিত করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ।আদেশে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে বলা হয়।   বুধবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যর বেঞ্চ এ রায় দেন। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক।   নিজামীর বিরুদ্ধে ১৬টি অভিযোগের মধ্যে আটটি প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে চারটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া বাকি চার অভিযোগে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।   এর আগে সকাল ১১টার কিছু পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর সদস্য বিচারপতি আনোয়ারুল হক ২০৪ পৃষ্টার এ রায় পড়া শুরু করেন। এর আগে সকাল ১১টায় বিচারপতিরা এজলাসে প্রবেশ করেন।   ১ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে— একাত্তরের ৩ আগস্ট নিজামী চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট হলে শহর ছাত্রসংঘের এক সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেন। তিনি সেখানে পাকিস্তান রক্ষার পক্ষে বক্তব্য দেন। ওই সভায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রসংঘের সভাপতি আবু তাহের হিন্দু সম্প্রদায়কে নিশ্চিহ্ন করার আদেশ দেন। নিজামী ওই সভায় উপস্থিত থেকেও আবু তাহেরের বক্তব্যের বিরোধিতা না করে মৌন সম্মতি দেন।   ২ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে— একই বছরের ২২ আগস্ট নিজামী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক একাডেমি হলে আল-মাদানি স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন। তিনি এ সভায় দলীয় নেতাকর্মীদের স্বাধীনতাকামীদের নিশ্চিহ্ন করতে উদ্বুদ্ধ করেন। এরপর তারা সারাদেশে সংগঠিত হয়ে অপরাধ করতে থাকেন। যার দায় নিজামীর।   ৩ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে— একই বছরের ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন প্রাঙ্গণে এক ছাত্রসমাবেশে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেন নিজামী।   ৪ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে— একই বছরের ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর যশোর বিডি হলে ছাত্রসংঘের সভায় তিনি জিহাদের সমর্থনে বক্তব্য দেন। নিজামী ওই সভায় বক্তব্য দিয়ে নিরীহ স্বাধীনতাকামী বাঙালি হত্যার নির্দেশ দেন।   ৬ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে— নিজামীর নির্দেশে পাকিস্তান বাহিনীর সহযোগিতায় একই বছরের ৮ মে পাবনার সাঁথিয়া থানার করমজা গ্রামে লোক জড়ো করে নির্বিচারে সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুরসহ অসংখ্য লোককে হত্যা করা হয়। নারীদের ধর্ষণ করা হয়।   ৭ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে— একই বছরের ২৭ ও ২৮ নভেম্বর পাবনার সাঁথিয়া থানার ধোলাউড়ি গ্রামে ডা. আবদুল আওয়ালের বাড়ি ও আশপাশের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ৩০ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেখান থেকে চারজনকে ধরে নিয়ে ইছামতি নদীর পাড়ে নিয়ে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়। সেখানে শাহজাহান আলী নামে একজনকে গলা কেটে ফেলে রাখা হয়। সৌভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান।   ৮ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে— ঈশ্বরদি থানার আটপাড়া ও বুথেরগাড়ি গ্রামে ১৬ এপ্রিল হামলা চালিয়ে ১৯ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।   ১৬ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে— আলবদর বাহিনীর প্রধান হিসেবে নিজামী একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের ঊষালগ্নে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ করা হয়।   ২০৪ পৃষ্ঠার সংক্ষিপ্ত রায়ের প্রথমাংশ পাঠ করেন বিচারপতি আনোয়ারুল হক। এরপর সকাল ১১টা ৩৫ মিনিটে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন রায়ের পর্যবেক্ষণগুলো পাঠ শুরু করেন। এরপর মূল রায় পাঠ করেন চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহমান।   এর আগে চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম রায় নিয়ে বিলম্ব ও অন্যান্য প্রসঙ্গের ভূমিকায় বলেন, আমরা আইনের বাইরে টক শো বা রাস্তায় রায় নিয়ে কথা বলতে পারি না। সংবিধান ও আইনের মধ্যে থেকেই এ রায় পাঠ করা হচ্ছে। রায় ঘোষনার সময় এজলাসে উপস্থিত ছিলেন নিজামী ।কাঠগড়ায় ওঠানোর আগে হাজতখানায় নিজামীকে বেশ চিন্তিত দেখা গেছে। মুখে হাত দিয়ে বসা ছিলেন তিনি।   এজলাশে আইনজীবীদের মধ্যে উপস্থিত রয়েছেন নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন, অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান, অ্যাডভোকেট ফরিদ উদ্দিন আহমদ খান ও অ্যাডভোকেট আসাদ উদ্দিন।   এদিকে রাষ্ট্রপক্ষে রয়েছেন, চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, প্রসিকিউটর মোহাম্মাদ আলী, তুরিন আফরোজ, জিয়াদ আল মালুম ও মোখলেসুর রহমান বাদল।   মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার দশম রায় এটি। আগের নয়টি মামলায় জামায়াতের সাবেক ও বর্তমান আটজন এবং বিএনপির দুই নেতাকে দণ্ডাদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।   উল্লেখ্য, গত ২৪ জুন এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য থাকলেও আসামি মতিউর রহমান নিজামী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে আদালতে উপস্থিত করা হয়নি। এ কারণে রায় পিছিয়ে চতুর্থবারের মতো অপেক্ষমাণ রাখা হয়।   গত বছরের ১৩ নভেম্বরও অপেক্ষমান (সিএভি) রাখা হয়েছিল মামলাটি। সেদিন আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থানের দিন ধার্য থাকলেও হরতালের কারণে না আসায় সময় আবেদন খারিজ করে মামলার কার্যক্রম শেষ করে দেন ট্রাইব্যুনাল।   এরপর ২০ নভেম্বর উভয়পক্ষের আইনজীবীদের সমাপনী বক্তব্য শেষে রায় অপেক্ষমান রাখেন আদালত।   নিজামীর বিরুদ্ধে একাত্তর সালে পাবনার বিভিন্ন জায়গায় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগসহ মোট ১৬টি অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়েছে। এসব অভিযোগের মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়রে ওপর এবং ছাত্র-শিক্ষকসহ বিভিন্ন সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। এসব অপরাধ কখনো তার নির্দেশে আবার কখনো তার আদেশে সংগঠিত হয়েছে। একুশে সংবাদ ডটকম/এফরান/২৯.১০.০১৪:
Link copied!