AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ছড়া অন্তপ্রাণ এক ছন্দপথিক || আল মাহমুদ


Ekushey Sangbad

০৪:৫৮ পিএম, নভেম্বর ২২, ২০১৪
ছড়া অন্তপ্রাণ এক ছন্দপথিক || আল মাহমুদ

একুশে সংবাদ : আমি বাসায় চুপচাপ বসে ছিলাম। এমন সময় হঠাৎ আবিদ এসে হাজির। জীবনের এই বিশেষ বেলায় আবিদ আজম ছেলেটা বোধহয় আমার একমাত্র তরুণ বন্ধু এবং সাহায্যকারী। আমার উপকার করাটা যেন তার নিত্যদিনের কর্তব্য। ফলে ও এলে আমি কেমন যেন ভরসা পাই। হাতে একটা বই নিয়ে আমার পাশে বসল। আমি কার বই জানতে চাইলে জানালো, জগলুল হায়দার নামক একজন ছড়াকারের বই। ছোঁ মেরে বইটা ওর হাত থেকে নিয়ে প্রচ্ছদে দেখলাম লেখা ‘তা রা রা তা রা রা তারারে’। বারে এটা আবার কেমন নাম! প্রচ্ছদ উল্টিয়ে আমি রীতিমতো অবাক! এত সুন্দর অলংকরণ আর মানানসই প্রচ্ছদ ভাবাই যায় না। জানলাম এই অসাধারণ কাজ মাহবুব কামরানের। আজকাল এত সুন্দর অলংকরণসমৃদ্ধ মানসম্পন্ন বই বের হয় ভাবতে খুব ভালো লাগে। কিন্তু আমার চোখে যে আলো তাতে পুরোটা দেখতে পারি না। আহারে আমি তো এখন কত কিছুই এভাবে দেখতে পাই না! বইটা আবিদের হাতে দিয়ে নির্দেশ দিলাম ‘পড়’। আবিদ সুন্দর করে পড়ল : কৌতূহলে কোলের ছেলে প্রশ্ন করে মাকে- কেমন করে কোলটা ভরে মা পেয়েছেন তাকে? মা বলে এই বুকের খনির মাঝে তুই ছিলি বাপ আশার ভাঁজে ভাঁজে। তারপর? তারপর! একদিন এক গভীর নিশি যামি- স্বপ্ন হাটে হঠাৎ তোকে কুড়িয়ে পেলাম আমি। কবিতাটা আবৃত্তি শেষ হতে না হতেই আমার চোখের পানি আটকে রাখতে পারিনি। ছড়াকার জগলুল হায়দারের ‘কেমন করে’ নামক এ লেখাটি আমার মতো একজন বৃদ্ধ কবিকে কাঁদিয়ে ছেড়েছে। এই লেখাটি আমার হৃদয়-মন ছুঁয়ে গেছে; আমি অনেকবার এর আবৃত্তি শুনেছি আর কেঁদেছি। কখনো কখনো কাঁদতে আমার ভালো লাগে। কি সহজ-সরল একটা প্যাটার্নে অসাধারণ এক কথা জগলুল বলে দিলেন। কিন্তু কে এই জগলুল হায়দার? জানতে পেরেছি আপাদমস্তক ছড়াঅন্তপ্রাণ এই ব্যক্তিত্ব বাংলাদেশ ছড়া একাডেমির অন্যতম পরিচালক। এই সময়ে নাকি পত্রপত্রিকায় তার লেখা সবচেয়ে বেশি ছাপা হচ্ছে। তিনি এক দশক ধরে লেখালেখি করলেও তার বইয়ের সংখ্যা পঁচিশটির অধিক। যে লোকটি ছড়া নিয়ে পড়ে আছেন তাকে নানান বিবেচনায় আমাদের ছড়াকার হিসেবে স্বীকার করে নেয়া উচিত। এ সময়ে বাংলা সাহিত্যে ব্যাপক হারে ছড়াচর্চা হচ্ছে, যা শুনে আমি ভীষণ আনন্দিত। আমার তো মনে হয় এই জগলুল হায়দাররাই এ সময়ের ছড়া-কাব্যের মাঠকে সরগরম করে রেখেছে, এজন্য সাহিত্যে এ রকম লেখকদের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। আলোচ্য বইয়ের ছড়াগুলো শুনে আমার মনে হয়েছে জগলুল তার কাজের ব্যাপারে অনেকটা মনোযোগী। অ্যালার্ম ঘড়ি, জ্যাক আর জুঁই, ভেন্টিলেটার, রোদ দেখা আর জাগতে জাগতে ঘুম নামক ছড়াগুলো আমার ভালো লেগেছে। আমি জোর গলায় বলি একটি সার্থক ছড়ায় ভেতরে কবিতা থাকতে হবে। জগলুলের সে রকম প্রচেষ্টা রয়েছে। একাগ্রচিত্তে জগলুল যে কাব্যচর্চা করে যাচ্ছে এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা- তবে কি লিখছে সে ব্যাপারেও তাকে সচেতন থাকতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে পাঠক যেন না ঠকে। খুব ভালো হতো স্নেহের ছড়াকার জগলুল হায়দারের সব বই নিয়ে যদি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে আলোচনা করতে পারতাম। আমি চোখে দেখি না। তাছাড়া আমার হাতে তার আর কোনো বইও অবশ্য নেই। এই যে একজন লেখক প্রাপ্তির হিসাব না করে ছড়া চর্চা করে যাচ্ছে- একে উৎসাহিত করলে অন্যায় হবে না? সার্থক ছড়া লিখতে প্রয়োজন হলো অফুরন্ত কবিত্ব শক্তি- যা এখনকার ছড়াকারদের ভেতরে কারো কারো মধ্যে থাকতে পারে। জগলুলের ছড়ার ভেতরে নতুন বিষয়-আশয় উপস্থাপনার বিষয়টি আমার শ্রবণ ইন্দ্রিয় এড়ায়নি, কোথাও কোথাও যে খটকা লাগেনি তাও নয়। চেষ্টা-আন্তরিকতা পাঠ ও পঠন ছড়াকার জগলুল হায়দারকে বিশিষ্ট করে তুলতে পারে। একজন দায়িত্বশীল কবির ভেতরে যে ধরনের ইতিহাস-ঐতিহ্য-শেকড়-দেশপ্রেম তথা রাজনীতি সচেতনতা থাকে জগলুল হায়দারের মধ্যে তা অনেকটা বিদ্যমান, আমি এ ধরনের সাহিত্যকর্মীর কর্মপ্রয়াসকে আন্তরিকভাবে সমর্থন করি। ছড়া-কবিতার জয় হোক। লেখক : কবি একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২২-১১-০১৪:
Link copied!