AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ব্যস্ত গাছিরা, বিলুপ্তির পথে খেজুর গাছ


Ekushey Sangbad

০৪:১৬ পিএম, ডিসেম্বর ১২, ২০১৪
ব্যস্ত গাছিরা, বিলুপ্তির পথে খেজুর গাছ

একুশে সংবাদ : খেজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন গ্রাম-বাংলার ‘গাছিরা’। শুরু হয়েছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের প্রতিক এই খেজুর গাছকে ঘিরে গ্রামীণ জনপদে উৎসব মুখর পরিবেশ, নতুন উদ্যমে সৃষ্টি এই নুতন আমেজে মেতে উঠেছে খেজুররস প্রেমীরা। শীতের দিন মানেই যেন গ্রামাঞ্চলের খেজুর রস ও নলেন গুড়ের মৌ মৌ গন্ধ। শীতের আগমনে শুরু হয় খেজুর গাছ কেটে রস আহরণ। যারা গাছ কাটে তাদের বলা হয় গাছি। খেজুর গাছের অগ্রভাগের একটি নির্দিষ্ট অংশ চিরে বিশেষ ব্যবস্থায় ছোট কলসি (ভাড়) বাঁধা হয়। ফোঁটায় ফোঁটায় রসে পূর্ণ হয় সে কলসি। তাই খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহে গাছ তোলা কাটাসহ বিভিন্ন রকমের পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে গেছে গাছিরা। ছোট বড় বিভিন্ন রকমের খেজুর গাছে অত্যান্ত ঝুঁকি নিয়েই তোলা কাটা করতে হয়। কোমরে মোটা রশি বেঁধে গাছে ঝুলে ঝুলে করতে হয় এ কাজ। পেশাদার গাছিদের তেমন কোনো সমস্যা হয় না বলে জানালেন গাছিরা। আশ্বিনের শুরুতে গাছ তোলা ও পরিচর্যা করার সঠিক সময়। তবে খেজুর গাছের চাহিদাটা ইট ভাটায় বেশী হওয়ায় গ্রামের লোকজন অভাবের তাড়নায় গাছ গুলো দেদারছে বিক্রি করে দিচ্ছেন। তাই তুলনামূলক ভাবে খেজুর গাছ প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার পথে। তাই আগের মতো মাঠ জুড়ে আর দেখা যায় না এই খেজুর গাছ। তারপরও গ্রামের মাঠে আর গ্রাম্য মেঠো পথের দ্বারে কতক গাছ দাঁড়িয়ে আছে কালের স্বাক্ষী হয়ে। আমাদের গ্রাম বাংলায় অতীতে খেজুর রসের যে সুখ্যাতি ছিল তা ক্রমেই কমে যাচ্ছে। খেজুরের রস শীতের সকালে বসে মুড়ি মিশিয়ে গ্লাস ভরে খেতে বেশ মজা পায় শিশুরা। সন্ধ্যার রস আরো মজাদার। বেশ লোভনীয় নলেন পাটালি ও গুড়। খেজুর গুড় বাঙালীর সংস্কৃতির একটা অঙ্গ। ক’দিন পরেই প্রতিটি ঘরে খেজুরের রস দিয়ে পিঠা পুলি পায়েস তৈরীর ধূম পড়বে। ঢেঁকি ঘরে চাল কুটার ধুম পড়ে যাবে,শোনা যাবে ঢক ঢক শব্দ। মুড়ি, চিড়া, পিঠা খাওয়া কৃষক পরিবার থেকে শুরু করে সবার বাছে বেশ প্রিয়। এ সব আশা নিয়ে শীত মৌসুমে গাছ কাটার কাজে গাছিদের বেশ ব্যস্ত সময় পার হয়। দেশের কয়েক হাজার গাছির সারা বছরের রুজিরুটির নির্ভর করে এ পেশার উপর। কথা হয়েছিল দক্ষিণ বঙ্গের এক গাছির সাথে। তিনি জানান, ‘শীত আসা মাত্রই আমরা খেজুর গাছ ছিলানোর জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লেগেই থাকি। পাঁচ মাস খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করে তা জ্বালিয়ে গুড় বানিয়ে বাজারে বিক্রি করে বেশ আর্থিক স্বচ্ছলতা আসে আমাদের।‌‌‌‌‌’ এসময় গাছিদের মুখে ফুটে ওঠে রসালো হাসি। নিজেদের প্রয়োজনীয় খাবারের চাহিদা মিটিয়ে বাকিটা বিক্রি করে যে অর্থ পাওয়া যায় তা দিয়ে পুরো বছর চলে। এখনো শীত জেঁকে না বসলেও গাছিরা গাছ কাটার জন্য দা তৈরী, ঠুঙি, দড়ি ও মাটির কলস (ভাড়) কেনার কাজ সেরে নিচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, আগের মতো খেজুর গাছ আর নেই। প্রতিদিন ইট ভাটা ও পালের কারখানার জ্বালানির কাজে নির্বিচারে নিধন হচ্ছে প্রতিনিয়ত এলাকার শত শত খেজুর গাছ। তবে পরিসংখ্যান বলছে, গ্রামীণ অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এর পরও গাছিরা তাদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কেবল গুড়, সুস্বাদু খাবার ও শুধূ রসনা তৃপ্তির সুমিষ্ট রসের জন্যই নয়, আমাদের জীবনের প্রয়োজনে, পরিবেশ ও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় খেজুর গাছের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। এদিকে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খেজুর গাছ ও গুড় আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। ইট-পাথরের বিলাস-বহুল নগরীর চাহিদা মেটাতে গিয়ে আজ দেদারসে বিক্রি হচ্ছে খেজুর গাছ। সেজন্য শীতকাল এলেই গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস আর হাতের নাগালে পাওয়া যায় না।গাছিদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বনটাও যেন হারিয়ে যাওয়ার পথে। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/১২-১২-০১৪:
Link copied!