সংসার চলে কাঁঠালপাতা বিক্রি করে
একুশে সংবাদ : 'ভাড়া করা বাসায় আমরা বসবাস করি। নিজেদের কোনোা জায়গা-জমি নেই। সংসারে আমরা দুই ভাই আর মা-বাবা আছে। সংসারের খরচ চালানোর জন্য আমরা সবাই কাঁঠালের পাতা বিক্রি করি। আর কাঁঠালের পাতা বিক্রি করে যে টাকা আয় হয়, সেই টাকা দিয়ে চলে আমাদের সংসার।'
এভাবেই কথাগুলো বললেন ঝিনাইদহ শহরের পুরাতন ডিসি কোর্টের পাশে কাঁঠালের পাতা বিক্রেতা সোয়াদ আলী নামের ১০ বছরের কিশোর।
ঝিনাইদহ শহরের উজির আলী স্কুলের পাশেই ভাড়া করা বাসায় বসবাস করেন রওশন আলী। বড় ছেলে জুয়েল হোসেন। আর ছোট ছেলে সোয়াদ আলী। তার নিজের কোনো জায়গা-জমি নেই। সংসার চালানোর তাগিদে তিনি এবং তার দুই ছেলে নিয়ে কাঁঠালের পাতা বিক্রি করেন। প্রতিদিন তিনি গ্রামে বেরিয়ে পড়েন কাঁঠালের পাতার সন্ধানে। আর সাথে নিয়ে যান বড় ছেলে জুয়েল হোসেনকে। যদি পূর্বের দিন ঠিক থাকে কোন গ্রামে কাঁঠালের পাতা পাওয়া যাবে, তাহলে বেশি গ্রাম তাকে ছোটাছুটি করতে হয় না। তবে প্রায় প্রতিদিনই সকালে ছোট ছেলে সোয়াদকে শহরে পাতা বিক্রির কাজে রেখে যান।
সোয়াদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সে শহরের ক্যাসেল ব্রিজের নিকট একটি স্কুলে নার্সারি শ্রেণীতে পড়েছে। স্কুল কামাই করলে স্যাররা বকাবকি করেন। আর পাতা বিক্রির কাজে সময় না দিলে বাবা বকাবকি করেন। এ কারণেই লেখা-পড়া করা হয়নি। এ কাঁঠালের পাতা তাদের গ্রাম থেকে কিনে আনতে হয়। কাঁঠাল গাছের পাতার ধরন বুঝে গাছের মালিককে টাকা দিতে হয়। তবে তাদের এ ব্যবসায় কোনো কোনো দিন লোকসানও হয়। কিন্তু ব্যবসা লোকসানের জন্য থেমে থাকে না।
সোয়াদ আরো জানায়, মা শাবানা খাতুন লেখাপড়া জানেন না। তার নানা কামাল হোসেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। বাড়ি নোয়াখালীতে হলেও ঝিনাইদহ সদর উপজেলার খাজুরা গ্রামে তার বসবাস। তার স্কুলে পড়ালেখা করার ইচ্ছে থাকলেও অভাব-অনটনের এ সংসারে তা সম্ভব হচ্ছে না। সমাজের বিত্তবান মানুষ যদি একটু সাহায্যের হাত বাড়ান তাহলে হয়তো সোয়াদের এ ইচ্ছা পূরণ হওয়া সম্ভব বলে মনে করেন অনেকে।
একুশে সংবাদ ডটকম/আর/১৩-১২-০১৪:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :