ভাই হত্যার প্রতিশোধ নিতেই হত্যাকাণ্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক: ভাই হত্যার প্রতিশোধ নিতেই হত্যাকাণ্ড এবং জেলে বসেই হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।
রাজধানীর হাজারীবাগে চামড়া ব্যবসায়ী আফজাল হোসেন সাত্তার হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মাসুদকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)।
বৃহস্পতিবার ভোরে র্যাব-২ এর একটি দল রাজধানীর শেওড়াপাড়া এলাকায় শ্বশুরবাড়ি থেকে মাসুদকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক মাকসুদুল আলম।
জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে মাসুদের বড় ভাইকে নবাবগঞ্জ সেকশন ঢালে কুপিয়ে হত্যা করে সাত্তারের তিন ভাই। এরই সূত্র ধরে সাত্তারকে খুনের পরিকল্পনা করে সে।
মাকসুদুল আলম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাসুদ জানান যে, বাংলাদেশের একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী ধানমন্ডির ইমন জেলে বসেই এই হত্যার পরিকল্পনা করেন এবং মাঠ পর্যায়ে সুসংঘটিতভাবে তার পরিকল্পনার বাস্তবায়ন হয় ১৪ ডিসেম্বর দুপুরে। গত চার মাস ধরেই জেল থেকে ইমন তার ঘনিষ্ট হাজারীবাগের ইব্রাহিম, খলিল, বুলু এবং মাসুদের সঙ্গে এই পরিকল্পনা শুরু করেন। বিভিন্ন সময়ে জেলে বসে মোবাইল ফোনে পরিকল্পনার দিক নির্দেশনা দেন ইমন। আর তারই ধারাবাহিকতায় বুলু, লিংকন এবং মাসুদ সাত্তারের উপর নজরদারি শুরু করেন। একাধিক মাঠকর্মী নিয়োগ করে তার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে থাকেন। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার হত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
এক পর্যায়ে বুলু, মাসুদ এবং লিংকন মরিয়া হয়ে ওঠেন এবং গনি নামক একজন শুটারকে এই কাজ সম্পাদনে সম্পৃক্ত করেন। এ বিষয়ে ইমনই জেলে থেকে সকল নির্দেশনা দেন।
মাকসুদুল আলম জানান, গনির নিজের তিনটি অবৈধ অস্ত্র আছে বলে বুলু তাকে জানায়। এ ক্ষেত্রে গনি হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করবে বলে নিশ্চিত করে বুলু। সম্পূর্ণ অপারেশন দলটি নিরাপদে অবস্থান নেওয়া এবং তাদের নিরাপদে এলাকা ত্যাগ করার বিষয়টি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করার দায়িত্ব ছিল মাসুদের। এরই ফলশ্রুতিতে গত ১৪ ডিসেম্বর ইমনের পরিকল্পনায় ঘটনা বাস্তবায়ন হয়।
মাকসুদুল আলম আরো জানান, এ ঘটনায় গনি সর্বপ্রথম সাত্তারকে গুলি করে। এ ছাড়াও তিন মসজিদ এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে মাসুদ, মনির, রজত, রানা, তাপস এবং লিংকন অবস্থান নেন। ঘটনার পূর্বে তারা সাত্তারের গতিবিধি লক্ষ্য করে এবং ঘটনার পর সবাই যার যার মত করে পালিয়ে যান। ইমনের পরিকল্পনার সম্পূর্ণ বিষয়টি বুলু অপারেশনে অংশগ্রহণকারী মাঠকর্মীদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে সুসংগঠিতভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন বলে মাসুদ জানান। ইতিমধ্যে মামলার এজারভূক্ত আসামি হিসেবে বুলুকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে এবং বর্তমানে বুলু রিমান্ডে আছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ ডিসেম্বর যোহর নামাযের পর দুপুর আনুমানিক পৌনে ২টার দিকে ঝিগাতলার তিন মাজার মসজিদ এলাকায় আফজাল হোসেন সাত্তার নামের এক চামড়া ব্যবসায়ী জনসম্মুখে এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন। পরবর্তীতে নিহতের পরিবার ছয়জনকে আসামি করে হাজারীবাগ থানায় মামলা দায়ের করে। মাসুদ মামলার ৫ নম্বর আসামি। মাসুদ মূলত ঝিগাতলায় বসবাস করেন।
একুশে সংবাদ ডটকম/মামুন/১৯.১২.২০১৪
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :