AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব


Ekushey Sangbad

০৩:০৫ পিএম, ডিসেম্বর ২০, ২০১৪
হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব

একুশে সংবাদ : প্রতি যুগে পরিবর্তন আসে, সেটা মেনে নিতে হয়; কিন্তু আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার তেমন কোনো পরিবর্তন ৪০ বছরে হয়নি। প্রাইমারি বা হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীরা এখনও ইংলিশ বিষয়টিকে বাঘের মতো ভয় পায়। অথচ ভালো বিষয় নিয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করতে গেলে ইংলিশের কোনো বিকল্প নেই। কিছু নেতার জনসভায় লেখাপড়ার সব মাধ্যম বাংলায় করার প্রতিশ্রুতি অবাক করার মতো। রাস্তাঘাটের নাম, প্রতিষ্ঠানের নামে বাংলার ব্যবহার মেনে নেয়া যায়; কিন্তু লেখাপড়ার সব বিষয়ে বাংলার ব্যবহারটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। পৃথিবীর কোনো থিওরিতে কোনো বিজ্ঞানী বা লেখক বাংলার ব্যবহার করেননি। আমাদের ছেলেমেয়েরা বিদেশে গিয়ে সব সময় বিপাকে পড়ছে ইংলিশে দুর্বলতার কারণে, পিছিয়ে থাকছে অন্য দেশের তুলনায়। আমাদের কপাল খুব ভালো যে, সৃষ্টিকর্তা আমাদের ছেলেমেয়েদের অসম্ভব মেধাশক্তি দান করেছেন, যার কারণে তারা সব বাধা অতিক্রম করছে সাফল্যের সঙ্গে। শিশুদের ছোট থেকে যদি চর্চা করানো যায়, তাহলে পরে তাদের কাছে বিষয়গুলো আর কঠিন মনে হবে না। আমাদের শিশুরা শৈশব হারিয়ে ফেলেছে তাদের অজান্তে, চার বছর বয়স থেকে শুরু হয় তাদের ভর্তিযুদ্ধ, তারপর কোচিং, এরপর পিএসসি আবার কোচিং, তারপর জেএসসি আবার কোচিং, এরপর এসএসসি এবং এইচএসসি। এরপর আসে জীবনের সবচেয়ে বড় ভর্তিযুদ্ধ কোচিং। এত চাপের পরও তারা হাসে, খেলে, গান করে-এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় পাওয়া। আমি আগেই বলেছি, সৃষ্টিকর্তা আমাদের ছেলেমেয়েদের অসম্ভব মেধাশক্তি দান করেছেন, যার কারণে তারা সফল্যের সঙ্গে সব বাধা অতিক্রম করছে। কোনো চাপ তারা কঠিন মনে করে না, সেটা যেমনই হোক। বাংলাদেশে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে কোচিং সেন্টারের সংখ্যা বেশি, স্কুলভর্তি থেকে বিসিএস পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের কোচিং সেন্টার দেখা যায় সর্বত্র। আর এসব কোচিং সেন্টারে ছাত্রছাত্রীরা তাদের শৈশব-কৈশোর হারিয়ে ফেলছে ভালো গ্রেড লাভের আশায়। এ কোচিং সেন্টার চালাচ্ছেন স্কুল-কলেজের শিক্ষকরাই। একটু ভালো উন্নত জীবনযাপনের জন্য তারা স্কুল-কলেজের কাজটা কোচিং ক্লাসে সারছেন। আর যেসব ছাত্রছাত্রী কোচিং সেন্টারের খরচ বহন করতে পারছে না, তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হয়েছে গাইড বই নামে। শিক্ষকরা এখন আর ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে নিজেদের সাফল্যের প্রতিবিম্ব দেখেন না, দেখেন সোনার ডিম পাড়া হাঁস হিসেবে। এদেশে একটি ছাত্রের পেছনে স্কুল, কোচিং যাতায়াত বাবদ যে পরিমাণ অর্থ খরচ হয়, ক্ষেত্রবিশেষ তা দিয়ে বিদেশে কোনো বোর্ডিং স্কুলে পাঠিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পৌঁছানো সম্ভব। শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের চারপাশে যা কিছু ঘটছে, তার জন্য অনেককেই দেশের সরকারের ব্যর্থতা বলে দাবি করতে দেখেছি। পিএসসি বা জেএসসির মতো কিছু ব্যর্থতা থাকলেও আমার মতে, সরকারের ব্যর্থতা তারা শুধু আমাদের অভিযোগ করতে শিখিয়েছে, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তা মোকাবিলা করতে কখনও উৎসাহী করেনি। যুদ্ধক্ষেত্রে মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও সাধারণ মানুষ যেমন সৈনিক পেশা বেছে নিচ্ছে, শিক্ষকরাও তাদের শিক্ষকতা পেশা বেছে নিয়েছেন, পারিশ্রমিকটা কখনোই মুখ্য নয়। এদেশে কেউ কাউকে বাধ্য করে না পেশা নির্বাচনে। ফলে পেশাগত দিকে অসৎ হয়ে পারিশ্রমিকের খোঁড়া অজুহাত মেনে নেয়া কঠিন। আমাদের সহযোগিতায় কিছু মানুষ অসৎ পথে চলছে, তাদের দেখে আরও কিছু মানুষ উৎসাহী হয়ে সেই পথ বেছে নিচ্ছে। এভাবে অসৎ কাজটা এখন একটা রীতিতে পরিণত হয়ে গেছে, যার মূল উৎপাটন করা একা সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। দায়িত্বটা আসলে সবার। আমাদের উচিত চুপ করে সহ্য না করে প্রতিবাদ করা, সেটা যত ছোট অন্যায় হোক। খুব ছোটবেলায় একটা ছড়া পড়েছিলাম, সেটার একটা চরণ এখন খুব মনে পড়ছে- 'আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে'। তাই আমরা যদি এক এক করে সবাই জেগে উঠে প্রতিবাদ শুরু করি, আমার বিশ্বাস আমরা থামাতে পারব এবং আমাদের জেগে উঠতেই হবে, নিজের জন্য না হলেও আমাদের সন্তানের উন্নত ভবিষ্যৎ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২০-১২-০১৪:
Link copied!