ঢাকায় পার্বত্য কমপ্লেক্স করা হবে: বীর বাহাদুর
বান্দরবান প্রতিনিধিঃ পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত আদিবাসীদের স্ব স্ব সম্প্রদায় কেন্দ্রীক প্রথাগত আইন, রীতি-নীতি লিপিবদ্ধ করতে হবে। সরকার আদিবাসীদের প্রথা, রীতি-নীতির প্রতি সম্মান রেখে বিধান করেছে। পার্বত্য চুক্তি অনুয়াযী পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠন করা হয়েছে।
ঐতিহ্যবাহী ১৩৭ তম রাজ পূণ্যাহ্ উপলেক্ষ্যে আয়োজিত রাজা, হেডম্যান ও কারবারীদের মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।
হেডম্যান উনিহ্লা’র সঞ্চালনায় রাজা উচপ্রু’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, জেলা প্রশাসক কে.এম.তারিকুল ইসলাম। অন্যান্যের মধ্যে মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন সরকারী কর্মকর্তাবৃন্দসহ রাজ পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ্য চহ্লাপ্রু, সাশৈপ্রু ও মংঙেপ্রু মারমা।
রাজ্যভাগের শুরু থেকে বান্দরবানের জেলা সীমানা ছাড়াও রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী ও কাপ্তাই উপজেলার আংশিক অংশের মোট ১৪টি মৌজা জুড়ে বোমাং সার্কেলের অধীনে রয়েছে। জেলার ৯৫টি মৌজাসহ বোমাং সার্কেলের মোট মৌজা ১০৯ টি।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলা হেডম্যানদের প্রতিনিধি দীপময় তালুকদার, মিজ সানুচিং মারমা। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার মংনু মারমা, লামার মংক্যচিং মারমা, রুমার শৈ চেং থুই মারমা, থানছির মুইশেতুই, রোয়াংছড়ির মেচিং মারমা। সচেতন নাগরিক সমাজ ও সাংবাদিকদের পক্ষে অংশগ্রহণ করেন বান্দরবান রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মংসানু মারমা।
বক্তারা সভার মাধ্যমে ভূমি বিরোধ,বেদখল, বন বিভাগের অধিগ্রহণকৃত ভূমির পরিমাপ ও খাজনা এবং বন সৃজন না করাসহ প্রভৃতি বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিকার চেয়েছেন। এছাড়া জুম চাষীদের জন্য সার ও প্রয়োজনীয় কৃষি সরঞ্জামাদি, প্রতিটি মৌজায় হেডম্যান কার্যালয় স্থাপন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা সভায় ও রাবার হর্টিকালচারসহ অন্যান্য কাজে ভূমি লীজের ক্ষেত্রে হেডম্যানদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করাসহ কারবারী, হেডম্যান ও রাজার সম্মানী ভাতা বৃদ্ধির দাবি করেন।
জেলা প্রশাসক তাঁর বক্তব্যে লীজের ক্ষেত্রে হেডম্যানদের সম্পৃক্ত করার কথা জানিয়ে বলেন সর্বক্ষেত্রে হেডম্যানদের উপস্থিতি সম্মতি স্বাক্ষর ছাড়া কোন লজি অনুমোদন দেওয়া হবেনা। এসময় তিনি জুমিয়াদের কৃষি কাজে সার, কীটনাশকসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিশ্চিত করারও আশ্বাস দেন।
বিশেষ অতিথি ক্য শৈ হ্লা বলেন, পার্বত্য চুক্তির পর হতে এ পর্যন্ত সময়ে যদি কোন ভূমির বন্দোবস্তি হয়ে থাকলে তা বাতিল করা হবে। তিনি জানান, জুমচাষের ভূমির ট্যাক্সের পরিমাণ কম বা বেশি হতে পারে। ট্যাক্স দেওয়া ভূমি ভোগ দখলের অধিকার জুমিয়ার রয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর বাহাদুর আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে কারবারী, হেডম্যান ও রাজাদের সম্মানী ভাতা প্রথম প্রদান করা হয়। ভাতা বৃদ্ধির ব্যাপারে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। এসময় তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় রাজধানী বেইলী রোডে পার্বত্য কমপ্লেক্স করা হবে। এরফলে পার্বত্যবাসীর ঢাকায় একটি স্থায়ী ঠিকানা সৃষ্টি হবে।
রাজা সভাপতির বক্তব্যে ইউএনডিপির কার্যক্রমে পাড়ার কারবারীদের সম্পৃক্ত না করাসহ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও হেডম্যানদের এমনকি তাঁকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন না করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি প্রতিমন্ত্রীসহ অতিথিদের সভায় উপস্থিতির জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
একুশে সংবাদ ডটকম/টিং শৈ প্রু (মংটিং)/২০.১২.১৪।
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :