দুর্যোগ মোকাবেলায় নৌবাহিনীর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
নিজস্ব প্রতিবেদক: ভৌগোলিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলায় অগ্রণী ভূমিকা পালন এবং নৌবাহিনীর সুনাম ও ঐতিহ্য ক্ষুণ্ন হয় এমন কিছু না করতে বাংলাদেশ নৌবাহিনী নতুন কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার বাংলাদেশ নৌবাহিনী একাডেমিতে মিডশিপম্যান-২০১৩-এর একটি ব্যাচ এবং ডিরেক্ট এন্ট্রি অফিসার্স (ডিইও) ২০১৪-এর বি-ব্যাচের শীতকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজের ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ক্যাডেটদের জাতির ভবিষ্যত নেতা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তারা দেশের স্বার্থকে ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে স্থান দেবেন।
তিনি বলেন, আপনারা এমন কোনো কাজ করবেন না, যাতে নৌবাহিনীর সুনাম ও ঐতিহ্য ক্ষুণ্ণ্য হয়। প্রধানমন্ত্রী নৈতিক গুণাবলীসহ মানবিক হওয়ার পাশাপাশি নিজেদের দক্ষ অফিসার হিসেবে গড়ে তোলার জন্যও ক্যাডেটদের প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, আপনাদের মনে রাখতে হবে, আপনারা জাতিকে সেবা দিতে যাচ্ছেন। তাই আপনাদের পেশাগত দায়িত্ব ও কর্তব্যের স্বার্থে একজন দক্ষ অফিসার হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। প্রিয় মাতৃভূমির জন্য জীবন উৎসর্গকারী পূর্বসূরিদের ত্যাগ ও গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস স্মরণ করার জন্যও ক্যাডেটদের উপদেশ দেন।
তিনি বলেন, আমাদের সরকারের মেয়াদে খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে ১৬টি জাহাজ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। দুটি হেলিকপ্টার ও দুটি সামুদ্রিক টহল এয়ারক্র্যাফট যুক্ত করার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। দুটি সাবমেরিন নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই চূড়ান্ত হয়েছে। ২০১৬ সালের মধ্যে সাবমেরিনগুলো নৌবাহিনীতে যুক্ত হবে বলে আমরা আশা করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণে বাংলাদেশ স্বনির্ভরতা অর্জন করেছে। খুলনা শিপইয়ার্ড ও নারায়ণগঞ্জ ডক ইয়ার্ডে অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ নির্মিত হচ্ছে। নৌবাহিনীর দক্ষ ব্যবস্থাপনায় এগুলোতে প্রকৌশল কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে।
সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক ও যুগোপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার তাঁর সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মতো বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর উন্নয়নেও তাঁর সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে দেশের বিশাল সমুদ্র এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ অপরিহার্য। আর এ ক্ষেত্রে নৌবাহিনীর সদস্যদের বিরাট দায়দায়িত্ব রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সময়ের বিবর্তনে নৌবাহিনী একটি মর্যাদাশীল বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ বাহিনী সুখ্যাতি অর্জন করেছে।
শেখ হাসিনা আজকের রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজের মাধ্যমে যারা বাংলদেশ নৌবাহিনীকে কমিশন পেয়েছেন তাদের অভিনন্দন জানিয়ে ত্যাগ ও নিষ্ঠার মাধ্যমে তারা বিশ্ব পর্যায়ে বাংলাদেশের মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী একটি খোলা জীপে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং সালাম গ্রহণ করেন। এ সময় নৌবাহিনী প্রধান ভাইস এডমিরাল এম ফরিদ হাবিব ও বাংলাদেশ নৌবাহিনী একাডেমির কমান্ডেন্ট কমোডর নাজমুল হাসান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, তিন বাহিনী প্রধানগণ, কূটনীতিক, পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তা এবং মিডশিপম্যানদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
একুশে সংবাদ ডটকম/মামুন/২১.১২.২০১৪
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :