AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ইট মারলে পাটকেল খেতে হবে: জাহাঙ্গীর কবির নানক


Ekushey Sangbad

০৪:৪০ পিএম, জানুয়ারি ১৪, ২০১৫
ইট মারলে পাটকেল খেতে হবে: জাহাঙ্গীর কবির নানক

একুশে সংবাদ : দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক বছর পূর্তির দিন থেকে হঠাৎ উত্তপ্ত রাজনৈতিক অঙ্গন। ফিরে এসেছে হরতাল-অবরোধ, বিঘিœত স্বাভাবিক জীবন। কিন্তু অনড় দুই পক্ষ। ইজতেমার মধ্যেও অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। খালেদা জিয়ার দাবি মানা হবে, এমন কোনো আভাসও দিচ্ছে না সরকার। বরং ক্ষমতাসীন দলের আরও কঠোর হওয়ার ঘোষণা জনমনে তৈরি করেছে উদ্বেগের। আওয়ামী লীগ কী ভাবছে, বিরোধী দলের মোকাবেলায় কী পরিকল্পনা নিচ্ছে তারাÑএ বিষে মুখোমুখি হয়েছেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হাবিবুল্লাহ ফাহাদ। ৫ জানুয়ারি সরকার বিএনপিকে সমাবেশ করতে দেয়নি কেন? সরকার অনুমতি দেয়নি কথাটি ঠিক নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের অনুমতি দেয়নি। কারণ ৫ জানুয়ারি বিএনপি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। বিএনপি তো বলছে তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করত। লন্ডন থেকে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়্যারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্যে পরিষ্কার হয়েছে, খালেদা জিয়া নাশকতা করতে চেয়েছিলেন। তাদের মনে রাখা উচিত, ইটটি মারলে পাটকেলটি খেতে হবে। ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মাঠে ছিল কেন? আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি দলীয় নেতা-কর্মীরা জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সতর্ক অবস্থানে ছিল। আমরা সতর্ক পাহারায় ছিলাম। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব তো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর... জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারি দল হিসেবে আমাদেরও রয়েছে। আন্দোলনের নামে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যা যা করা দরকার তার সবই করা হবে। বিএনপি চেয়ারপারসনকে সরকার অবরুদ্ধ করে রেখেছে, দলটির নেতারা এই অভিযোগ করছেন। খালেদা জিয়াকে পুলিশ বাসায় যেতে বলেছিলেন, তিনি যাননি। এজন্য পুলিশ তার নিরাপত্তা বাড়িয়েছে। তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে এটা ভুল। আসলে বিএনপির মতো ভূঁইফোড় সংগঠনের রাজনৈতিক ভিত্তি নেই। বিএনপিকে ভুঁইফোড় সংগঠন বলছেন কেন? এই সংগঠনটি রাতের অন্ধকারে সঙ্গিন উঁচিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখলদারের দল। ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠনকারী দল। গণতন্ত্র হত্যাকারীর দল। মানুষের অধিকার হরণের দল। জনগণের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসা শোষকের দল। খালেদা জিয়া দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন এমন অভিযোগ করছেন আপনারা, কিন্তু কেন? বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সরকার ও সরকারের বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার বিরুদ্ধে বিদেশি বিভিন্ন সংগঠনের কাছে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। এ ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় আপনারা কী করছেন? দেশবাসীর কাক্সিক্ষত উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করার যেকোনো ষড়যন্ত্র জনগণ দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবেলা করবে। সে যেই হোক, জনজীবনে শান্তি, নিরাপত্তা ও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার যেকোনো কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে শৈথিল্য প্রদর্শন করবে না। খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তারের কথা বলা হচ্ছে, কেন? দেশের স্থিতিশীল পরিবেশ ও শান্তিশৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে যেকোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হবে। প্রয়োজনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকেও গ্রেপ্তার করা হবে। জনগণের শান্তি ভঙ্গকারীর অবস্থান পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের লাল দালানের চৌদ্দ শিকে হতে পারে। বিএনপির অভিযোগ সরকারের দমন-পীড়নের কারণে তারা মাঠে নামতে পারছেন না... সরকার কারো ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে না। বরং ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করার নামে ভোটের আগে ও পরে সারা দেশে যে নৈরাজ্য, হত্যাযজ্ঞ বিএনপি চালিয়েছে তাতে সেদিন বেশি দূরে নয়, বাংলার জনগণ খালেদা জিয়াকে খুনির কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে। সরকার গুম-খুন চালাচ্ছেÑএ অভিযোগ বিএনপি নেত্রীর। আপনারা কী বলছেন? খালেদা জিয়ার শাসনামলে আওয়ামী লীগের ২৬ হাজার নেতা-কর্মী হত্যা ও গুম হয়েছে। ক্লিনহার্টের নামে অনেক নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। ধর্ষিত হয়েছিল অগণিত মা-বোন। ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও নৃ-জাতিগোষ্ঠী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের শিকার হয়েছিলেন। র‌্যাবের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে... আজকে বেগম খালেদা জিয়া র‌্যাবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কথা বলছেন। অথচ এই র‌্যাব তৈরি করেছিলেন তিনি নিজেই। নিজের তৈরি জিনিসটিকে তিনি কলঙ্কিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন, যা বাংলার জনগণ কোনোভাবেই মেনে নেবে না। বিএনপি অভিযোগ করছে দেশের মানুষ শান্তিতে নেই... বিএনপির এ ধরনের বক্তব্য অগণতান্ত্রিক, অসংলগ্ন ও অপ্রাসঙ্গিক। দেশের মানুষ যখন শান্তিতে আছে, খালেদা জিয়া তখন অশান্তিতে আছেন। তার অশান্তির কারণ হচ্ছে, ক্ষমতায় থেকে লুটপাট ও যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করতে না পারা। তার মানে বিএনপির এতসব অভিযোগ কোনোটাই ঠিক নয়? মোটেও না, আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল। দেশ ও জনগণের উন্নয়নই আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য। এদেশের মাটি ও মানুষের দল আওয়ামী লীগ পরাধীন শাসনামল থেকে আজ পর্যন্ত মনে করে জনগণই সব ক্ষমতার উৎস, বুলেট নয়, ব্যালটই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা বদলের একমাত্র মাধ্যম। তিনি বলেন, দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্মাণে ও গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানের ক্ষেত্রে ইতিবাচক দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য দেশের সব স্তরের মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে নতুন পরিবর্তন করার কথা বলছে... নতুন পরিবর্তনের কথা বলে তিনি (খালেদা জিয়া) কি নতুন করে হাওয়া ভবন তৈরির ইঙ্গিত করেছেন। পুনরায় তার কুপুত্র তারেক রহমানকে দুর্নীতির বরপুত্র রূপে বাংলার জনগণের সামনে উপস্থাপন করতে চান। খালেদা জিয়া ক্ষমতা হারিয়ে উন্মাদ হয়ে গেছেন। তাই তিনি এখন জনগণকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। চাপে ফেলতে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে মামলাগুলো চাঙ্গা করছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে... এগুলো বলে খালেদা জিয়া আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর চেষ্টা করছেন। উঠপাখির মতো মাথা গুঁজে রক্ষা পাবেন না তিনি। চারদলীয় জোট সরকার ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেওয়া সব মামলা খারিজ হয়ে গেছে। সংবিধান সংশোধন করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবি তুলছে বিএনপি। আওয়ামী লীগ কী ভাবছে? বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার দেশের জনগণের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা করার জন্য বদ্ধপরিকর। সংবিধান পরিবর্তনের অধিকার আছে একমাত্র সংসদের। বেগম খালেদা জিয়া যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি করেন সেটার ফলাফল তো উচ্চ আদালত দিয়েই দিয়েছেন। তারপরেও যদি কিছু করতে হয় সেটা সংসদের মাধ্যমেই করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিএনপি... নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। নির্বাচন কমিশন যে কয়টি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করেছে আমরা তার বিরোধিতা করিনি। স্বাগত জানিয়েছি। আগামীতে নির্বাচন কমিশনকে আরও শক্তিশালী করতে সরকার কাজ করবে। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তারেক রহমান যেসব তথ্য দিচ্ছেন এগুলোকে কীভাবে দেখছেন? মিথ্যাচারের মতো কুৎসিত ব্যাধিতে বিএনপি আক্রান্ত হয়েছে। গণতান্ত্রিক নীতি পরিহার করে তারা সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে। খালেদা জিয়ার কুপুত্র তারেক উন্মাদ, বিকারগ্রস্ত, দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া ফেরারি আসামি। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এই নাবালক যে কটূক্তি করেছে তা আমি উচ্চারণও করতে চাই না। তারেক রহমানের বক্তব্যের জন্য ক্ষমা না চাইলে কি খালেদা জিয়াকে আর সমাবেশ করতে দেবেন না? বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তারেক রহমান যে কটূক্তি করেছে তার জন্য খালেদা জিয়া ক্ষমা না চাইলে জনগণ তাদের কোথাও সমাবেশ করতে দেবে না। এটা আমাদের কথা নয়। যারা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন, তাদের কথা। এতে আওয়ামী লীগের কিছু করার নেই। অবরোধের পর বিএনপি হরতালের কথা ভাবছে। পরিস্থিতি কি সংঘাতের দিকে এগোচ্ছে না? অবরোধে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি, ভয়-ভীতির সঞ্চার এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও বাস পোড়ানোর মতো নাশকতামূলক কর্মকা- করে বিএনপি জনগণকে ঘরে বন্দি করে রাখতে চেয়েছিল। তবে অযৌত্তিক এই অবরোধে জনগণের কোনো সমর্থন নেই, জনগণ অবরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। হরতালও প্রত্যাখ্যান করবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপির উদ্দেশে কী বলবেন? বিএনপিকে সংঘাতের পথ পরিহার করে গণতান্ত্রিক রাজনীতি অনুশীলন ও সংস্কৃতিতে ফিরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। গণতন্ত্রপ্রিয় দেশবাসীর কাক্সিক্ষত শান্তি, নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন, অগ্রগতি ও গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বাধাগ্রস্ত না করে সুস্থ রাজনীতির চর্চা করা উচিত। দেশের সব গণতন্ত্রকামী, প্রগতিশীল ব্যক্তিসহ দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে গণতন্ত্রবিরোধী যে কোনো অশুভ শক্তির অপতৎপরতা সম্পর্কে সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে। খালেদা জিয়া অবরোধ আহ্বানের পর সারা দেশে তো স্বাভাবিক যান চলাচল বিঘিœত হয়েছে। জনগণের তো ভোগান্তি হচ্ছে। এর দায় পুরোপুরি খালেদা জিয়ার। জনগণ তার এই অবরোধ যে মানে না, রাজধানীসহ শহরগুলোতে প্রতিদিনের যানজটই তার প্রমাণ। মানুষ সাহস করে ঘরের বাইরে বের হয়ে এসেছে। ধীরে ধীরে সারা দেশেই স্বাভাবিক হয়ে আসবে পরিস্থিতি।-সাপ্তাহিক এই সময়-এর সৌজন্যে। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/১৪-০১-০১৫:
Link copied!