AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

কোন পথে যাচ্ছে দেশ?


Ekushey Sangbad

১০:৩৯ এএম, জানুয়ারি ২৪, ২০১৫
কোন পথে যাচ্ছে দেশ?

একুশে সংবাদ : টানা অবরোধের প্রতিক্রিয়ায় রাজধানীতে সবজির দাম বেড়েছে গড়ে দ্বিগুণ। দাম বাড়লেও এ বাড়তি অর্থ যাচ্ছে না কৃষকের পকেটে। তারা তাদের পণ্যের ন্যায্যমূল্য দূরের কথা উৎপাদন খরচও উঠাতে পারছেন না। ক্রেতার অভাবে পণ্য বিক্রি করে কখনও কখনও হাটে যাওয়া-আসার খরচ উঠছে না। অবরোধের কারণে পরিবহন খরচ গড়ে তিন-চার গুণ বেড়ে যাওয়ায় নামমাত্র মূল্যে কেনা সবজি রাজধানীতে বিক্রি হচ্ছে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ দামে। রাজনৈতিক সংঘাতের মধ্যে যেসব ব্যবসায়ী বিভিন্ন জেলা থেকে পণ্য কিনে ঢাকায় আসছেন তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। কখনও পুড়ছে পণ্যবাহী ট্রাক। এসব ঝুঁকি মাথায় রেখে ট্রাক মালিক ও ট্রাকচালকরা যেমনি কয়েকগুণ ভাড়া আদায় করছেন, তেমনি ব্যবসায়ীরাও ঝুঁকির বিষয়টি ভেবে মূল্য নির্ধারণ করছেন। ফলে ভোক্তাদের পক্ষ থেকে বেশি অর্থ ব্যয় করা হলেও তার সুফল পাচ্ছেন না কৃষক। মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে প্রতিটি সবজির দাম কেজিপ্রতি ৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। সবজির পাশাপাশি চাল, ডাল, তেলসহ সব নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে অবরোধের কারণে। রাজধানীর দোকানদাররা বলছেন, অবরোধের কারণে বেচাকেনা কম। মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের লাভেও টান পড়ছে। অবরোধ দেশের কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিকে যেভাবে পিষ্ট করছে, তা দুর্ভাগ্যজনক। সবজি বিক্রি করে সমৃদ্ধির মুখ দেখার বদলে সর্বস্ব হারানোর আশঙ্কায় ভুগছেন অনেক কৃষক। অবরোধের কারণে বিদেশে সবজি রফতানি প্রায় বন্ধ হওয়ার পথে। রাজধানী ও প্রধান প্রধান নগরে পণ্য পাঠানো বিঘ্নিত হচ্ছে অবরোধের কারণে। রাজনীতির অশুভ লড়াইয়ে কৃষক কোনো পক্ষের না হলেও তাদের পেটেই লাথি মারা হচ্ছে। প্রায় দুই সপ্তাহের অবরোধ কৃষি অর্থনীতিকে যেভাবে জিম্মি করে ফেলেছে, তা অব্যাহত থাকলে অনেক চাষিই সবজি চাষে উৎসাহ হারাবেন। দেশের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম খাত হিসেবে অভ্যুদয়ের যে হাতছানি রয়েছে, তা ধোঁয়াশা হয়ে উঠছে। গ্রামীণ অর্থনীতির মেরুদন্ডে ও আঘাত হানছে অবরোধ। ফলে প্রশ্ন জাগে কোন দিকে যাচ্ছে দেশ? বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংঘাত শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও উদ্বেগ বাড়িয়েছে। প্রধান দুই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কা-জ্ঞানহীন আচরণ সামাল দিতে তৎপর হয়ে উঠেছেন বন্ধু দেশগুলোর কূটনীতিকরা। সহিংসতা ও নাশকতার উত্তাপ জাতিসংঘকেও উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংঘাত বৃদ্ধির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশন। সংস্থাটি সব রাজনৈতিক দলকে সংঘাত বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, সংঘাতে এরই মধ্যে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে এবং তা আরও বাড়তে পারে বলে তারা শঙ্কিত। ১৫ জানুয়ারি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের কার্যালয়ের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, ১৩ জানুয়ারি মঙ্গলবার একটি যাত্রীবাহী বাসে দেয়া আগুনে পুড়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। একই দিন বিএনপির এক জ্যেষ্ঠ নেতা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং তার গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে। পরদিন গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বাসে দেয়া আগুনে পুড়ে মারা গেছেন একজন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে তা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে যাতে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় সে বিষয়ে তাগিদ দেয়া হয়েছে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের বিবৃতিতে। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ, চলাচল ও বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করারও আহ্বান জানিয়েছে কমিশন। বিবৃতিতে সংযম প্রদর্শন ও এখনই সংঘাত বন্ধে সংশ্লিষ্ট সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানানোর পাশাপাশি হত্যার ঘটনাগুলোর যাতে নিরপেক্ষ তদন্ত হয় সে বিষয়েও তাগিদ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের চলমান সংঘাত বন্ধে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের বিবৃতিতে শুধু বিশ্ব সম্প্রদায় নয়, দেশবাসীর আর্তিই তুলে ধরা হয়েছে। কা-জ্ঞানহীন সংঘাত কেড়ে নিচ্ছে মূল্যবান প্রাণ, জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে। রাজনৈতিক দলগুলো এ সংঘাত বন্ধের উদ্যোগ না নিলে শুধু দেশবাসী নয়, বিশ্ব মানবতার কাছেও তাদের অভিযুক্ত হতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে তাতে উদ্বিগ্ন না হয়ে পারা যায় না। জনগণ মনে করে বর্তমান পরিস্থিতি দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে তৃতীয় অরাজনৈতিক শক্তি ক্ষমতায় আসীন হবে- এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। জনগণ শান্তি চায়, তারা আগুনে পুড়ে অঙ্গার হতে চায় না। আশা করি দেশের কল্যাণের দিকে তাকিয়ে, জনগণের মঙ্গলের কথা বিবেচনা করে সরকার ও বিরোধী দল জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্যে পৌঁছাবে। সহিংসতার পথ পরিহার করে শান্তির পথে চলবে। মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক চেয়ারম্যান, রাজউক ঢাকা। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২৩-০১-০১৫:
Link copied!