AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

চলমান অবরোধ-হরতালে প্রতিদিনের ক্ষতি ২,২৭৮ কোটি টাকা


Ekushey Sangbad

১২:১০ পিএম, জানুয়ারি ২৫, ২০১৫
চলমান অবরোধ-হরতালে প্রতিদিনের ক্ষতি ২,২৭৮ কোটি টাকা

একুশে সংবাদ : চলমান অবরোধ-হরতালে প্রতিদিন দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি হচ্ছে ২ হাজার ২৭৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। আর ১৬ দিনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩৬ হাজার ৪৪৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, যা গত বছরের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ দশমিক ৭০ শতাংশ। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলন করে ক্ষয়ক্ষতির এমন চিত্র তুলে ধরেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। ব্যবসায়ীদের এই সংগঠন বলছে, হরতাল-অবরোধে দেশের সবগুলো খাতই আক্রান্ত হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। এই সংকট নিরসনে রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনার মাধ্যমে অবশ্যই সমঝোতায় আসতে হবে, যেন অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। কারণ শক্তি প্রয়োগ করে কোনো সমস্যার সমাধান হয় না। তাই সংকট নিরসনের একমাত্র পথ হচ্ছে সংলাপ। এ জন্য দুই নেত্রীকে সংলাপে বসার আহ্বানও জানিয়েছে সংগঠনটি। আবার শুধু এখনকার সমস্যা সমাধানের পথ বের করলেই চলবে না, যেকোনো রাজনৈতিক সংকট এমনভাবে সমাধান করতে হবে, যেন ভবিষ্যতে একই ধরনের সংকট তৈরির কোনো সুযোগ না থাকে। রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই কার্যালয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পড়েন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি হোসেন খালেদ। তিনি বলেন, ‘বর্তমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সংলাপই একমাত্র পন্থা। পৃথিবীর কোনো দেশেই চাপ কিংবা শক্তি প্রয়োগ করে সমস্যার কাঙ্ক্ষিত সমাধান হয়নি। বিদ্যামান সংকট মোকাবিলায় অবিলম্বে সংলাপ আয়োজনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে মতৈক্যে পৌঁছাতে হবে।’ .হোসেন খালেদ আরও বলেন, ‘আমরা গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার আওতায় সবার মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং নির্দিষ্ট স্থানে সভা-সমাবেশ করার অধিকার থাকায় বিশ্বাসী। কিন্তু রাজনৈতিক আন্দোলন কোনো অবস্থাতেই সহিংস হওয়া উচিত নয়। রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন প্রত্যাশা করি।’ দুই নেত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, ‘আমি এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছি। আমাদের যদি সেই সুযোগ দেওয়া হয়, আমরা অবশ্যই তাঁদের সঙ্গে বসে আমাদের কষ্টের কথা বলব। এমনকি যদি তাঁদের উপদেষ্টাদের সঙ্গেও বসতে বলে, আমরা তা-ই করব।’ লিখিত বক্তব্যে হোসেন খালেদ বলেন, বর্তমানের রাজনৈতিক অচলাবস্থার কারণে প্রতিদিন দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি হচ্ছে ২ হাজার ২৭৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। তবে এ সময় প্রতিদিন শিল্পকারখানায় সক্ষমতার চেয়ে ২৫ শতাংশ কম পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে। সে হিসাবে ক্ষতির পরিমাণ আড়াই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। এর ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে প্রাক্কলিত জিডিপিতে শিল্প খাতের এক দিনের অবদান ৮৭৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। রাজনৈতিক অস্থিরতায় শিল্প খাতে সক্ষমতার ২৫ শতাংশ নষ্ট হয়ে প্রতিদিন উৎপাদন কম হচ্ছে ২১৮ কোটি ৯৬ কোটি টাকা। এর প্রভাবে শিল্পকারখানায় শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রবণতা বাড়বে। বিনিয়োগ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে ঢাকা চেম্বার বলেছে, ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে এবং ৮ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে জিডিপির ৩০ শতাংশ বিনিয়োগ প্রয়োজন। এ জন্য বিনিয়োগ করতে হবে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। এই বিনিয়োগ পেতে হলে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। পোশাক খাতের প্রসঙ্গে হোসেন খালেদ বলেন, এক দিনের অবরোধ-হরতালে ৬৯৫ কোটি টাকার পোশাক রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হয়। ক্ষতি হয় ১৪৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। চলমান অচলাবস্থায় পোশাকশিল্প ভাবমূর্তির সংকটে পড়ছে, যা টাকার অঙ্কে নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। এ অবস্থা চলতে থাকলে ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, মিয়ানমার, ভারতসহ প্রতিযোগী দেশগুলো এর সুযোগ নিতে পারে। কয়েকটি খাতের ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরে ডিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, প্রতিদিনের হরতাল-অবরোধে কৃষি খাতে ২৮৮ কোটি, পোলট্রিশিল্পে ১৮ কোটি ২৮ লাখ, হিমায়িত খাদ্য খাতে ৮ কোটি, পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ৩০০ কোটি, পর্যটনশিল্পে ২০০ কোটি, আবাসন খাতে ২৫০ কোটি, শপিং কমপ্লেক্সসহ দোকানপাট খাতে ১৫০ কোটি, প্লাস্টিক পণ্য খাতে ১৭ কোটি ৮৫ লাখ, বিমা খাতে ১৫ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। অবরোধে পরিবহন খাতে অচলাবস্থার কারণে গ্রামাঞ্চলে সার, পানি সেচের জন্য জ্বালানি তেল, বালাইনাশক সময়মতো পৌঁছাচ্ছে না। এর প্রভাবে আসন্ন বোরো মৌসুমে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার আশঙ্কা করেছে ঢাকা চেম্বার। আবার অবরোধে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রায় ২৬ হাজার কনটেইনার আটকা পড়েছে। এতে শিল্পকারখানায় কাঁচামাল সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। বিভিন্ন স্থলবন্দর থেকে ব্যবসায়ীরা আমদানি পণ্য খালাস করতে না পারায় তাঁদের প্রতিদিন অন্তত ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। শেয়ারবাজার প্রসঙ্গে ঢাকা চেম্বার বলেছে, রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিনিয়োগকারীরা আবারও আস্থা হারাচ্ছেন। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরা বেশি ক্ষতির শিকার হন গুজবের কারণে। লাগাতার অবরোধ-হরতাল গুজব ছড়াতে সাহায্য করবে। হোসেন খালেদকে প্রশ্ন করা হয়, চলমান অবরোধ-হরতালে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নেবেন কীভাবে? জবাবে তিনি বলেন, ‘এ ক্ষতি পোষানো সম্ভব না। আজকে যে ক্ষতি হচ্ছে, কাল সেটা পোষানো যাবে না। দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এটা ফিরে পেতে সময় লাগবে। কৃষিপণ্য তো পচে যাবে। সেটা ফিরে পাব কীভাবে?’ চলমান অস্থিরতায় ব্যবসায়ীরা আবারও কোনো উদ্যোগ নেবেন কি না, জানতে চাইলে হোসেন খালেদ বলেন, ‘আগেও আমাদের চেষ্টার কোনো কমতি ছিল না। সম্মিলিতভাবে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়েছি। এবারও প্রয়োজন হলে তেমন উদ্যোগ নেব।’ সংবাদ সম্মেলনে বেশ কিছু সুপারিশও করেছে ঢাকা চেম্বার। এর মধ্যে আছে দেশের জ্যেষ্ঠ নাগরিক, ব্যবসায়ী ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ ও বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি ‘সিটিজেন কাউন্সিল’ গঠন। দলীয় রাজনৈতিক পরিচয়ে নেই এমন ব্যক্তিরা কাউন্সিলে থাকবেন। এই কাউন্সিল সব রাজনৈতিক দলকে সমানভাবে মূল্যায়ন করে গ্রহণযোগ্য সুপারিশ প্রণয়ন করবে, যা প্রয়োজনে জাতীয় সংসদেও উপস্থাপন করা যেতে পারে। এ ছাড়া রপ্তানিমুখী শিল্পকে হরতালের আওতামুক্ত রাখা, আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ব্যাংক হারে খাতভিত্তিক পুনঃ অর্থায়ন ও ঋণ শ্রেণীকরণের আগে পরিশোধ ও পুনঃতফসিলের সুযোগ দেওয়া এবং চলমান অবস্থায় বিদ্যুতের দাম নতুন করে না বাড়ানোর সুপারিশও করেছে ঢাকা চেম্বার। হরতাল–অবরোধে আর্থিক ক্ষতি (কোটি টাকায়) পোশাক রপ্তানিতে বাধা ৬৯৫ পরিবহন ও যোগাযোগ ৩০০ কৃষি খাত ২৮৮.১ আবাসন খাত ২৫০ পর্যটন খাত ২১০ বাজার খাত ১৫০ পোশাক খাত ১৪৭.৫ উৎপাদন খাত ১০০ রাজস্ব খাত ৩৩ সিরামিক খাত ২০ পোলট্রি শিল্প খাত ১৮.২৮ প্লাস্টিক দ্রব্য খাত ১৭.৮৫ বিমা খাত ১৫ হকার্স খাত ১৫ পণ্য খালাস খাত ১০ হিমায়িত খাত ৮ রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সংলাপই একমাত্র পন্থা। সে জন্য দুই নেত্রীকে সংলাপে বসার আহ্বান ‘‘এ ক্ষতি পোষানো সম্ভব না। আজকে যে ক্ষতি হচ্ছে, কাল সেটা পোষানো যাবে না হোসেন খালেদ সভাপতি, ঢাকা চেম্বার একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২৫-০১-০১৫:
Link copied!