প্রেমের পাঁচ কবিতা
একুশে সংবাদ :
রেমিকারা কখনও প্রাক্তন হয় না || মাজহার সরকার
প্রেমিকারা কখনও প্রাক্তন হয় না
প্রেমিকার বিয়ে হলে, টেবোটেবো গাল শিশুর মা হলে
প্রজননস্পৃহ স্বামীর কাছে দিনকে দিন সুন্দর দেখালে
সে আরও বেশি বেশি করে আমাদের প্রেমিকা হয়ে ওঠে।
পৃথিবীতে মানুষ পেয়েছে প্রচুর
কিন্তু প্রেমিক চেয়েছে প্রেমিকার কাছ থেকে কিছু
পৃথিবীতে শুধু তাই আছে,
যা কিছু প্রেমিকা দিয়েছে, প্রেমিকার মুখে মাতৃভাষা-
লাগে আরও মধুর।
সন্দেহ কি!
প্রেমিকারা চলে গেলে আমাদের অভিষেক- গায়ত্রী বেলাভূম
হৃদয়ে সান্ত্বনা হয়ে আসে-
প্রেমিকারা তার সাথে ভালোবেসে বেসে হাঁটে।
নিজেদের মধ্যে সুখগুলো বলাবলি করে। স্তন্য দেয়।
রাস্তার এপার থেকে ওপার যায়- হাসে।
তার স্বামী ছিল ক্ষুধার্ত, তাই পেলো দুটো
ফুলো ফুলো বনরুটি- প্রজাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য
আমাদের প্রেমিকার গর্ভে দফায় দফায় অপত্য সৃষ্টি করলো।
চিৎকার থামে না, চিৎকারের শব্দ থামে
সারাদিন শহরে ঘুরে ফিরে- কেবল প্রেমিকার সাথে
আমাদের হয় দেখা
প্রেমিকা নয় সব! তবু প্রেমিকা- প্রেমিকার মতো লাগে।
সুলতানা এই কবিতাটি পড়ত || জোবায়ের মিলন
হেমন্তের একটা নিজস্বতা আছে। তার জানা আছে একটা নিজ কৌশল; যাকে আমরা স্বাতন্ত্র বা যাদুও বলতে পারি। এ রকম কৌশল অন্য কোন ঋতুর নেই। থাকলেও সে ভিন্ন আমেজ ও ভিন্ন মেজাজ। হেমন্তের স্বাদ একেবারেই আলাদা। কাশ ফুলে ফুলে অস্পৃশ্য নারীর বেশে সেজে থাকতেই তার বড় ইচ্ছা। ওলান থেকে সদ্য নিসৃত দুধের মতো তার রূপ তাকে অন্য রকম করে রাখে আমাদের কাছে- আমরা যারা হেমন্তের ভাই অথবা বোন- প্রকৃতি সূত্রে। ঐ সাদা’য় তাকে যে খরখরা লাগে তেমন কখনো কেউ বলেছে কি-না জানা নেই। কাশ ফুলে সবারই অন্য মোহ! তাই জানি। হেমন্তের আরেক অলংকার ‘কোদালি আকাশ’। দুই কানে নাকে হাতে বাজুতে যখন সে থোকা থোকা মেঘ পরে ঘুরে বেড়ায় সমস্ত আকাশ- সকালে, বিকেলের আধো বেলায় তখন পৃথিবীর সর্বোৎকৃষ্ট রোমান্টিক চলচ্চিত্র উপভোগের চেয়েও অধিক রোমান্টিক হয়ে ওঠে পাগল মন। চোখ উড়ে বেড়ায় মেঘের এ-থোকা থেকে ও-থোকায়; ভাবনার ভিতর অন্য নৌকা ভাসে... । তার সাথে যদি কোন কোন রাতে হেমন্ত যোগ করে যুবতী চাঁদ তবে সে হেমন্ত নিজেই হয়ে ওঠে ইতিহাসের ক্লিওপেট্রা। কিংবা আধুনিক ম্যারিলিন মনরো। তখন তাকে নিয়ে ঘর ভাঙে কত-না যুবকের! যুবতীরা হেমন্তে শাণিত হয় আরও…
ছত্রাক || গিরীশ গৈরিক
কান্নাকাটির শব্দ আমার ভালো লাগে না
তাই নিজের কান্না পেলে কানে তুলা ঢুকিয়ে রাখি
অবশ্য চোখের জলের নোনতা স্বাদ আমার ভালোই লাগে
কখনো কখনো মগজের মেঠোপথের কবরে শব্দের হাট বসে
সেই কবরের ওপরে জোছনার বাকল পরে বসে থাকে একজন মানুষ
তাকে দেখে কোনো ভাবে লিঙ্গান্তর করা সম্ভব নয়
তবে এটা নিশ্চিত সে গর্ভে বাচ্চা দিতেও পারে আবার নিতেও পারে
আমি তার কাছে যেতেই সে একটি প্রশ্ন নিক্ষেপ করে
গত রথের মেলায় অন্ধ ভিখারীর থালার টাকা কে চুরি করেছিল
আমি মাথা নিচু করে পাল্টা প্রশ্ন করি
ফুল যদি পবিত্র হয় তেব কেন তার ভেতরে পোকার জন্ম হয়
তারপর তিনি যাদুলন্ঠন জ্বেলে দিলেন
চারিপাশে আঁধার ঘনিয়ে এল
গোপন চিঠি || আলম শামস
দূর, বহু দূর থেকে বলছি
তোমার সকাল দুপুর সন্ধ্যা কেমন কাটছে
খুব জানতে ইচ্ছে করে। তোমার শরীরের গতি প্রকৃতি
রক্তের সঞ্চালন, মনের আকুলতা ও হৃদয়ের ব্যাকুলতা
জানিয়ে পত্র দিও। আর-
তোমার মেঘনা যমুনা ও প্রবহমান গঙ্গা রেখো অতি গোপনে
নিশাচর প্রহরির পাহারায়;
যেন পিশাচ কিংবা শকুনের দৃষ্টি না পড়ে সেখানে।
আমি এক শুভক্ষণে খুঁজে নেবো আমার বিশ্বাস।
মূল্যহীন কিছু অক্ষর || শরমিন সুপ্তি
কী মূল্য আছে এই অক্ষরগুলোর?
এগুলো তো কেবল আঁকাবাঁকা কিছু দাগ।
এমন কিছু কি এরা বলতে পারে
যা তোমার ভালো লাগবে?
এমন কিছু কি এরা দিতে পারে
যা তুমি আকাঙ্ক্ষা করো?
তেমন করে কি এরা ভালোবাসতে পারে,
যেভাবে আমি তোমায় ভালোবেসেছি?
এরা এমন কিছুই করতে পারে না
যা এনে দেবে তোমায় আমার একান্ত আপন করে;
ছন্দের এই মিলন শুধুই অর্থহীন,
কিন্তু তোমার কাছেও কি তাই?
একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২৬-০১-০১৫:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :