AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

উচ্চশিক্ষায় সেমিস্টার পদ্ধতি একবিংশ শতাব্দীর সেরা : ড. অরুণ কুমার গোস্বামী


Ekushey Sangbad

০৪:৫৬ পিএম, জানুয়ারি ২৬, ২০১৫
উচ্চশিক্ষায় সেমিস্টার পদ্ধতি একবিংশ শতাব্দীর সেরা : ড. অরুণ কুমার গোস্বামী

একুশে সংবাদ : উচ্চশিক্ষায় সেমিস্টার পদ্ধতিকে একবিংশ শতাব্দীর সেরা হিসেবে অভিহিত করেছেন অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার গোস্বামী। সম্প্রতি সাউথ এশিয়ান স্টাডি সার্কেল, জবি শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে তিনি ‘সেমিস্টার সিস্টেম : দ্য এক্সপেরিয়েন্স অব জগন্নাথ ইউনিভার্সিটি’ শিরোনামে একটি গবেষণা প্রবন্ধ তুলে ধরেন। এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যাল সায়েন্স রিসার্চ ইনস্টিটিউটে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপনার জন্য তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। উচ্চশিক্ষায় সেমিস্টার পদ্ধতি নিয়ে বাংলাদেশে এটিই প্রথম গবেষণাকর্ম। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের ওপর গবেষণাটি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান, সাউথ এশিয়ান স্টাডি সার্কেলের জবি শাখার পরিচালক, কলামিস্ট ও গবেষক অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার গোস্বামী। তার সঙ্গে সেমিস্টার পদ্ধতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন আমাদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আশরাফুল ইসলাম। আশরাফুল ইসলাম : গবেষণার বিষয় হিসেবে সেমিস্টার পদ্ধতিকে বেছে নেওয়ার কারণ কী? ড. অরুণ কুমার গোস্বামী : উচ্চশিক্ষায় সেমিস্টার পদ্ধতি একবিংশ শতাব্দীর সেরা পদ্ধতি হিসেবে বিশ্বে সমাদৃত। তবে এ পদ্ধতি নিয়ে বাংলাদেশে কেউ গবেষণা করেননি। আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একমাত্র জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণাঙ্গভাবে সেমিস্টার পদ্ধতি চালু করেছে। সেটাকে কাছ থেকে দেখেছি। বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সেমিস্টার পদ্ধতি কতটুকু সাড়া জাগিয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এই পদ্ধতিকে কীভাবে গ্রহণ করছেন এবং কতটুকু উপকৃত হচ্ছেন। এসব বিষয়কেই গবেষণার বিষয় হিসেবে বেছে নেওয়া। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শুরু থেকেই সেমিস্টার পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টির আইনের সঙ্গে এ বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪০ বছর পার হলেও উচ্চশিক্ষায় তেমন বড় কোনো অর্জন নেই। গ্লোবাল র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্লেখযোগ্য কোনো অবস্থান নেই। আশরাফুল ইসলাম : কোন কোন বিষয়কে সামনে রেখে গবেষণা করেছেন? ড. অরুণ কুমার গোস্বামী : আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সুযোগ সুবিধা কম পায়। এসব সীমাবদ্ধতার মধ্যে সেমিস্টার পদ্ধতি কতটুকু সফল হচ্ছে, তা নিয়ে গবেষণাটি করা যেতে পারে বলে মনে করেছি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দুটি ব্যাচে সেমিস্টার পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অভিজ্ঞতা, শিক্ষা কারিকুলাম, সিলেবাস, শিক্ষকদের পাঠদান পদ্ধতি ও মূল্যায়ন। শিক্ষার্থীদের ফিডব্যাক। এছাড়া শিক্ষা পদ্ধতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এ গবেষণাটি করা হয়েছে। যেমন, এ পদ্ধতিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ক্লাসে অংশগ্রহণ, ক্লাস-পরীক্ষায় কতটুকু সন্তুষ্ট এবং এ পদ্ধতি তাদের জন্য উপযোগী বলে মনে করে, এসব দিক বিবেচনায় রেখে গবেষণাটি করা হয়েছে। আশরাফুল ইসলাম : বাংলাদেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টার পদ্ধতি চালু আছে কি না? ড. অরুণ কুমার গোস্বামী : বর্তমানে দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টার পদ্ধতিতে পাঠদান চলছে। বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু কিছু বিভাগে সেমিস্টার পদ্ধতি চালু রয়েছে। শুধু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যাত্রাকাল থেকেই এ পদ্ধতি চালু রয়েছে। তবে বাংলাদেশে এখন সেমিস্টার পদ্ধতি আরো জনপ্রিয় হচ্ছে। আস্তে আস্তে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পদ্ধতি চালু হবে আমি বলে মনে করি । যদি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে তাকান, তাহলে দেখবেন, দেশের প্রায় ৫৫টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টার পদ্ধতিতে পাঠদান করা হয়। প্রথমে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানিতে একটি শিক্ষাবর্ষকে দুটি ভাগে ভাগ করে প্রতিটি ভাগকে একটি সেমিস্টার ধরে পাঠদান শুরু হয়েছিল। বর্তমানে উন্নত বিশ্বের প্রায় সব দেশে এমনকি উন্নয়নশীল বিশ্বেরও অধিকাংশ দেশে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে। এ পদ্ধতি সারা বিশ্বে একবিংশ শতাব্দীর সেরা পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আশরাফুল ইসলাম : সেমিস্টার পদ্ধতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন? ড. অরুণ কুমার গোস্বামী : সেমিস্টার পদ্ধতি প্রডাকটিভ সিস্টেম। এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক অ্যাকটিভিটি বাড়িয়ে দেয়। ইয়ারলি সিস্টেমে শিক্ষার্থীরা নিজেদের অনেক ফ্রি মনে করে পুরোটা বছর পার করে। পরীক্ষার সময় তারা লেখাপড়া করে। কিন্তু সেমিস্টার সিস্টেম শিক্ষার্থীকে সারা বছর ব্যস্ত রাখে। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার প্রতি মনোযোগী করে তোলে। পাশাপাশি পরীক্ষার অতিরিক্ত চাপ কমাতে সাহায্য করে। আমাদের দেশে শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধার অপ্রতুলতা রয়েছে। তবে যেসব সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান, তার সর্বোচ্চ ব্যবহার করে সেমিস্টার পদ্ধতিতে উচ্চশিক্ষাকে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। আশরাফুল ইসলাম : বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সেমিস্টার পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা কতটুকু? ড. অরুণ কুমার গোস্বামী : আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় এ পদ্ধতি অনুপযোগী। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষাপদ্ধতিতে সমন্বয়ের অভাব, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার অভাব। যদিও বর্তমানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট সেবা, সাইবার সেন্টার, ই-বুক, ই-জার্নালসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এটাই যথেষ্ট নয়। এ ছাড়া অনেক আগের শিক্ষা কারিকুলাম ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি হালনাগাদ করলে বহির্বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা সম্ভব। সেমিস্টার সিস্টেমের পড়াশোনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যখন ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিয়ে থাকেন, তখন কজন শিক্ষার্থী তাদের পড়াটা বুঝল, সে বিষয়ও মূল্যায়ন করে দেখার মতো সময় থাকে না। কোনো একটি কোর্স শেষ করতে সেমিস্টার পদ্ধতিতে ছয় মাস সময় পাওয়া যায়। এত কম সময়ে কোর্সটির গভীরে প্রবেশ করা সম্ভব হয় না। শিক্ষার্থীরাও ক্লাসের চাপে নিজের মতো করে পড়ার সুযোগ কম পায়। ফলে পরীক্ষার আগের দিন নোট মুখস্থ করে পরীক্ষার খাতায় লিখে দিয়ে আসছে। আশরাফুল ইসলাম : সেমিস্টার পদ্ধতিকে আরো কার্যকর করার জন্য কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে বলে আপনি মনে করেন? ড. অরুণ কুমার গোস্বামী : সেমিস্টার পদ্ধতিকে আরো কার্যকর করতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পর্যাপ্ত ক্লাসরুম, ল্যাবগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ, সিলেবাস ধরে ক্লাসগুলো নির্বিঘ্নভাবে ও শিক্ষাঘণ্টা হিসেব করে তা অনুষ্ঠিত হওয়া, মিডটার্ম, প্রেজেন্টেশন ইত্যাদি সত্যিকার অর্থে অনুষ্ঠিত হওয়া, ক্লাস সাইজ (শিক্ষার্থী) কাম্য মাত্রায় নির্দিষ্ট রাখা, পর্যাপ্ত আইসিটি সুবিধা তৈরি করা, শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পঠন-পাঠনের সর্বোত্তম সুযোগ তৈরি করে দেওয়াসহ প্রভৃতি বিষয় বিবেচনায় এনে যথাযথ পদক্ষেপ নিলে সেমিস্টার পদ্ধতি আরো কার্যকরী করা সম্ভব হবে। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২৬-০১-০১৫:
Link copied!