এক সংগ্রামী নারীর না জানা কথা...
একুশে সংবাদ : ‘পেপারত মোর ছবি দিয়া কী করেন বাহে মোর কোনো উপকারে কইরবের পান না তোমরা। এমনই দুঃখের কথা নির্দ্বিধায় বলে গেলেন জীবন-জীবিকার তাগিদে চলা এক সংগ্রামী নারী আমেনা বেগম। দিন যায় রাত হয় তার অবিরাম চলা শেষ হয় না। রাত পোহালেই তাকে দেখা যায় গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে।
এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে ভ্যানগাড়িতে করে মালপত্র নিয়ে দিনমান ছুটে চলতে তাকে দেখা যায়। আমেনা বেগম জীবন সংগ্রামী এক নারী বয়স প্রায় পঞ্চাশোর্ধ্বে। ঘরবাড়ি নেই বললেই চলে। তিনি থাকেন নাগেশ্বরী পৌর এলাকার সাতানী পাড়া গ্রামের অন্যের জায়গায় কোনো রকম একটি চালার মত ঝুপড়ি ঘরে তার সন্তান সন্ততি নিয়ে। স্বামী আব্দুর রহমান মারা যাওয়ার পর তিনি বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতেন। কিন্তু পরের বাড়িতে কাজ করার চেয়ে নিজে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার মনোভাব নিয়ে তিনি স্থানীয় গ্রামীণ ব্যাংক থেকে কিছু টাকা ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। কাঠের তৈরি ছোট্ট একটি ভ্যানগাড়িতে বিস্কুট, চানাচুর, মসলা, আচার, তেল, মরিচগুড়া, হলুদগুড়া, বিভিন্ন প্রকার ডাল, সাবান ইত্যাদি মালামাল নিয়ে নিজে ভ্যানগাড়ি চালিয়ে গ্রামে গ্রামে ফেরি করে বিক্রি করেন এসব জিনিসপত্র। তিনি তার জীবনের দুঃখগাঁথা কথাগুলোর বর্ণনা করতে গিয়ে খুবই দু:খ প্রকাশ করেন। মেয়ে মানুষ হইয়াও তিনি পুরুষের মত ঘানি টানছেন। তার এ ব্যবসা সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি বলেন ভ্যানগাড়িতে এসব ক্ষুদ্র মালামাল নিয়ে প্রতিদিন এ গ্রাম ও গ্রাম ছুটে বেড়াই কিন্তু তেমন বেচা কেনা হয় না।
এখন প্রতিটি পাড়া গাঁয়ে রাস্তার মোড়ে কিংবা লোকালয়ে ছোট বড় দোকান পাট গড়ে উঠেছে। তাছাড়া গ্রামের ধনী বড় লোক পরিবারগুলো আমার কাছে খরচ কেনেন না বলে অভিযোগ করেন। তারা বাজার থেকে অনেক টাকার মালামাল কিনে ঘরে রাখে। সারাদিন গ্রাম ঘুরে ৩শ থেকে ৪শ টাকার মালা মাল বিক্রি করি এতে সামান্য কিছু লাভ হয়। আসল মুলধন ঠিক রেখে লাভের অংশের টাকা দিয়ে কোনোমতে তিনি সংসার চালাচ্ছেন। তিনি আরও জানান, অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে খাওয়া চেয়ে কিংবা ভিক্ষাবৃত্তির চেয়ে ছোট ব্যবসা করেও অভাবের সাথে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকা অনেক ভালো।তবে তিনি সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তা পেলে আরও উন্নতি লাভ করতে পারবেন প্রত্যাশা করেছেন।
একুশে সংবাদ ডটকম/আর/০১-০৩-০১৫:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :