প্রেমের পঙ্ক্তিমালা
আমাকে কেউ ॥ ওবায়েদ আকাশ
আমাকে কেউ ভাবছে না আজকাল
এমন কথা কেমন করে বলি-
যারা ঢিল ছুড়ছে, ফুল ছিঁড়ছে, আবার
পাতার সৌন্দর্য দেখে ছুটে যাচ্ছে বনে, তাদের
এমন কথা কেমন করে বলি-
তুমি গান ধরছ, ঘুম পাড়ছ
বৃষ্টির মর্মরে তোমার জেগে উঠছে বাড়ি
আমাকে কেউ ভাবছে না আজকাল
তোমার পরনে কলাপাতার শাড়ি
ভালোবাসি মেহেক ॥ মৌসুমী রহমান
নিশ্চিত মৃত্যুর ব্যাধি
বহন না করেও মানুষ মৃত্যুর ভ্যানে
সারা শহর ঘুরে বেড়ায়।
ভেবেছিলাম
ভালোবাসা ডুবে যাচ্ছে মাথিনের কূপে;
ঘুমাচ্ছে ভ্যালেনটাইনসের পুরোনো কফিনে।
তার পরও লড়াকু সৈনিক
হাসিমুখে বলে,
প্রতিদিনই ভালোবাসি মেহেক, তাই তো
জীবন পকেটে নিয়ে
স্বপ্ন বাঁচাতে ছুটতে হয়
ভালোবাসতে বাসতে কারো বা
গন্তব্য থেমে যায় দেয়ালের ওপাশে।
ছায়াটা জল মেখেছিল ॥ লিটন মহন্ত
তোমার ছায়াটা পড়ে আছে জলের উপর পরিত্যাক্ত
মলিন হয়নি, ইতিহাসের উজ্জ্বল মেঘের আড়ালে
যাবতীয় আস্তরণ স্পর্শের মায়াজাল খোঁজে
আমি দৃষ্টি খুলি গন্তব্য নগরে; বিষাদের কালো কাকে
ডানা ঝাপটায় বিমুখ বিমুগ্ধ রাত,
রাতের গভীরে এবং গভীরে পাখি আর আসে না ফিরে
কুয়াশা অবসন্ন প্রহর তাঁকে প্রত্যাশার শ্রাবণে মৃত গল্প শোনায়।
এখনো জোনাকি জ্বলে হাওয়ার স্তূপে ভাসে
সেই মেঘ, সেই ছায়া প্রিয়তমা নদীর মত দুঃস্বপ্ন ঘোর
তবুও ছায়াটাকে স্পর্শ করি না আর
সে কেমন শরীর হবে, শৈশবে ইতিহাস নিমগ্ন তোর।
রোড সিগন্যাল কিংবা জন্মগ্রহণের ডেইলিশপ ॥ সুমন মাহমুদ
অষ্টপ্রহর কেটে গেলে রোড সিগন্যালে সবুজ সঙ্কেত খোঁজে
একটা সাদা বিলবোর্ড
এগারো ডিজিট লেপে দেয়ার ভার বইতে পারে না দুরন্ত তলোয়ার
জীবন খুঁজতে খুঁজতে কৌটার লাল রং ছিটকে পড়ে বাঁশির ছিদ্রপথে
আড়েঠারে ব্যালকনির চৌকাঠে রোদ মাখে ছাপান্ন অক্ষিগোলক
ভূগোল নেড়েচেড়ে বেলুন ওড়াতে থাকে আমতলীর দোকানিরা
ক্রেতাশূন্য বিছানায় একটা গুঁইসাপ
আলজিহ্বার সিসা উগরাতে উগরাতে নির্বিষ হেঁটে যায়
দীর্ঘশ্বাসের পাড় ভেঙে
‘কাকের বাসায় কোকিল ডিম পাড়ে’ প্রবাদ আজ
পোস্টমডার্নিজমে এসে দাঁড়িয়েছে
শালিকও এখন আশ্রয়দাতা
তোমরা যারা জারজ আছো
শান্তিনগরের শান্তি দ্যাখো
তোমাদের ঔরস বিছিয়ে রেখেছে জন্মগ্রহণের ডেইলিশপে
লিফলেটে ঘুমবিহীন আরো একটা সকাল লালগালিচা বিছাতে ব্যস্ত
ট্রাফিকের হাতে আর কোনো সবুজ সংকেত নেই।
শূন্য হাইওয়ে একটা ট্রাফিকের জন্ম দিতে চায়
পিচ খসে পড়বার ভয় নেই এখনো পাঁচ বছর
পঁচাত্তর হলেই ছোঁবে নতুন উল্কার গর্ভাশয়।
ট্রাফিক তুমি, কত আর সিগন্যালের ভ্রুণ বুনে যাবে?
একবার বিলবোর্ড হয়ে দ্যাখো, চিরহরিৎ বৃক্ষের গান খুঁজে পাবে।
শরীর কাব্য ॥ আমিনুল ই শান্ত
ভাবনা ছিল শরীর পেলেই
তৃপ্ত হবো।
শরীর কাব্য এতোদিনেও, হয়নি শেখা
নারীর কাছে
তোমার কাছে।
গোঁফ উঠেছে অনেক আগে
রতির জলে স্নান সেরেছি কবে-
তবুও আমার হয়নি শেখা, প্রেমিক হয়েও
নারীর মহাকাব্য। শ্রান্ত হলে নারীর বুকে
কেমন লাগে? উষ্মশ্বাসে বুকের ভিতর বরফ গলে-
তাও শিখিনি।
অথৈ জলে ঝাপ দিয়েছি, মরণ জেনেও-
তবুও দ্যাখ অসভ্যতা হার মানেনি-
তাইতো আমি অবোধ পুরুষ
তেমার কাছে
তাহার কাছে।
একুশে সংবাদ ডটকম/আর/১৬-০৩-০১৫:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :