মুজিব তোমার জন্মদিন – আমাদের চৈতন্যময়
মুজিব তোমার জন্ম – মহাশূন্যে নয়
মুজিব তোমার জন্ম – সপ্তলোকে নয়
মুজিব তোমার জন্ম – নক্ষত্রলোকে নয়
মুজিব তোমার জন্ম – ছায়াপথে নয়
তোমার জন্ম
এই পূর্বাচলে
………এই চন্দ্রালোকে
……………শরৎশশীর উষ্ণ কোলে
এই এক দেশে – এইখানে সূর্যোত্থানে তোমারই জন্ম।
কল্লোলিনী সেদিন উপচে পড়েছিল
মরাগাঙে সেদিন বান এসেছিল
সমুদ্রে সেদিন ছিল উষ্ণপ্রসবন।
তোমার জন্মদিনে কোনো ঝাড়বাতি লাগে না
তোমার জন্মদিনে কোনো নিউনলাইট লাগে না
তোমার জন্মদিনে কোনো বিজলিবাতি লাগে না
তোমার জন্মদিনে কোনো চোখধাঁধানো ঝলকানি লাগে না
তুমি নিজে এমন বিভা ও দ্যুতি
……………দীপ্ত ও দ্যুতিময় হয়ে থাকো,
তুমি নিজে এমন বিদ্যুতপ্রভা ও ভাস্বর
……………অংশুমালা ও উদ্দীপন হয়ে থাকো,
তুমি আপনাআপনি ফুটে ওঠা
রক্তপদ্ম ও স্বর্ণপুষ্প।
তুমি এই আকাশপ্রান্ত থেকে শুধু
……………সরাওনি কুড়ুলে মেঘ, পেজামেঘ
………………..কোদালে মেঘ ও কুহেলিকা
স্বচ্ছ আকাশে দীপ্রভাবে ফুটে তুলেছিলে
……………তোমার বিমুগ্ধতা ছোঁয়ানো বাংলাদেশকে
যা দেখে আমরা দীপ্তমান হয়ে উঠেছিলাম।
হিমঝড়ের ভেতর কখনো জমে যাওনি
আঁধিঝড়ে-ঘূর্ণিবায়ুতে তোমার চোখ বন্ধ হয়নি
সূচিভেদ্য অন্ধকার ও কৃষ্ণতিথিতেও তুমি ছিলে
………………….আমাদের চন্দ্রপ্রভা।
তোমার জন্মদিন স্পর্শ করা মানে
এ দেশের শিশিরকণা স্পর্শ করা,
তোমার জন্মদিন স্পর্শ করা মানে
এ দেশের বৃষ্টিপাত স্পর্শ করা,
তোমার জন্মদিন স্পর্শ করা মানে
এ দেশের দোঁয়াশমাটি স্পর্শ করা,
তোমার জন্মদিন স্পর্শ করা মানে
এ দেশের বীজতলা স্পর্শ করা,
তোমার জন্মদিন স্পর্শ করা মানে
এ দেশের পুষ্পোদ্যান স্পর্শ করা,
তোমার জন্মদিন স্পর্শ করা মানে
এ দেশের সুফলা স্পর্শ করা।
তোমার কণ্ঠস্বর এখনো ঝমঝম করে ওঠে
তোমার সেই ডাক এখনো গুরুম গুরুম করে বাজে
তোমার সেই চিরচেনা তর্জনী দেখলে
এখনো শাসক-লুণ্ঠনকারী-সাম্রাজ্যবাদীরা
দুরু দুরু বুকে কাঁপতে কাঁপতে
……………ভূকম্পনের মধ্যে পড়ে যায়।
তোমার পদশব্দে নিঃশব্দতা ভাঙে
……………নিঝুমতা ভাঙে
……………………নীরবতা ভাঙে।
তোমার অভ্রভেদী উচ্চতা ছুঁয়ে ছুঁয়ে
তোমার গগনস্পর্শী স্পর্ধায়
তোমার পায়ে হাঁটা পথে হেঁটে হেঁটে
………………….দ্বিধাহীন অবিচল থেকে
তোমার হৃদয়কন্দর থেকে স্বভাবপ্রেরণা নিয়ে
দেশপ্রেম নিয়ে
…….পশ্চাৎপসারণ করতে চাই না আমরা
…….ভিক্ষাবৃত্তি-ঋণজাল নিয়ে সার্বভৌমতা হারাতে চাই না আমরা
…….শত্রুর কাছে আত্মসমর্পন করতে চাই না আমরা ।
তোমার শৈশবকাল-যৌবনকাল-মাঝবয়স
সবই বাংলাদেশের কণ্ঠলগ্ন হয়ে থেকেছে
তোমার জন্মদিন মানে
…………আমাদের অতীতকাল
……………..আমাদের বর্তমানকাল
………………….আমাদের ভবিষ্যতকাল
তোমার জন্মদিন মানে
আমাদের কুসুমকোরক
………………প্রসববন্ধন
……………………বীজতলা
নবীনতা, শুভযোগ, শুভব্রত।
তোমার জন্মদিনে আমরা
……………..অবলুপ্তি থেকে বেঁচে উঠি,
তোমার জন্মদিনে আমরা
……………..বিনষ্টি থেকে বেঁচে উঠি,
তোমার জন্মদিনে আমরা
……………..সর্বনাশ থেকে বেঁচে উঠি,
তোমার জন্মদিনে আমরা
……………..ধ্বংস স্তূপ থেকে বেঁচে উঠি,
তোমার জন্মদিনে আমরা
পিঠাপিঠি হয়ে একসঙ্গে বেঁচে উঠি,
প্রাণশক্তি ও সজীবতা নিয়ে বেঁচে উঠি,
পরিব্যাপ্ত ও প্রসারিত হয়ে বেঁচে উঠি।
তোমার সমাপ্তি নেই – পরিশেষ নেই
তোমার কোনো উপসংহার নেই
তুমি নিঃশেষ হওনা–
তোমার জন্মদিন – সবসময়
আমাদের চৈতন্যময়।
একুশে সংবাদ ডটকম/আর/১৭-০৩-০১৫:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :