গর্ভাবস্থায় নারীর সঠিক যত্ন এবং সুস্থতা
একুশে সংবাদ : গর্ভাবস্থায় নারীর সুস্থতা এবং সঠিক যত্ন নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মায়ের সুস্থতার উপরেই নির্ভর করে সন্তানের সঠিক বৃদ্ধি এবং বিকাশ। প্রায় প্রত্যেক গর্ভবতী মা গর্ভাবস্থায় ১০ কেজি পর্যন্ত ওজন বৃদ্ধি করতে হয়। একটি ৩ কেজি ওজনের সুস্থ সন্তান জন্মদান করার জন্য। তবে লক্ষ রাখতে হবে প্রত্যেক মাসে যেন ১ কেজির বেশি ওজন বৃদ্ধি না পায়। অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি পেলে শরীর আগের অবস্থায় ফেরত আনতে অনেক কষ্ট করতে হবে। সেই সাথে গর্ভাবস্থায় কিংবা সন্তান জন্মদানের সময়ে অনেক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় সন্তানের সুস্থতার জন্য গর্ভবতী মাকে উপযুক্ত খাবার খেতে হয়। তবে এই খাদ্য প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কিংবা অসামঞ্জস্যপূর্ণ হলে তা অনেক বেশি ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় গর্ভস্থ সন্তানের জন্য। আসুন জেনে নেই গর্ভাবস্থায় মায়েদের খাবারের তালিকা কেমন হওয়া উচিত।
সকাল
গর্ভবতী নারীদের সকালে উঠতে কিছুটা বেগ পেতে হয় কারণ বেশিরভাগ মায়েদের রাতে ঠিক মত ঘুম হয় না। তবে অনেক বেলা পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকলে গর্ভের বাচ্চার উপরে এর প্রভাব পড়ে। আবার অনেক সময় সকালে উঠার পরে বমি ভাব হয়, খেতে ইচ্ছা হয় না। সেক্ষেত্রে সকালে ভারি খাবার না খেয়ে হালকা চা খাওয়া যেতে পারে। সাথে একটা বিস্কিট।
প্রাতরাশ
চা খাওয়ার বেশ খানিক পরে খেতে পারেন ২টি রুটি। অথবা মাখন লাগিয়ে খেতে পারেন ২ স্লাইস পাউরুটি। সাথে থাকতে পারে সবজি তরকারি এবং একটি ডিম। ডিম সিদ্ধ করে খেতে পারেন অথবা ভাঁজা খাওয়া যাবে। তবে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে পাউরুটি না খাওয়াটা ভালো হবে। ১০/১১ সময়ের দিকে এক গ্লাস দুধ খেতে পারেন। কখনও ফলমূল খেতে পারেন।
দুপুরের খাবার
দুপুরে ভাত খাবেন এক বাটি। তবে ভাত খেতে না চাইলে রুটি খেতে পারেন। সেক্ষেত্রে রুটি খাবেন ৪টি। সাথে মাছ কিংবা মাংস অবশ্যই খাবেন। পরিমান হবে ৫০ থেকে ৭০ গ্রাম। সেই সাথে খেতে হবে বিভিন্ন রকম তরকারি, ডাল, তাজা ফল এবং সবজির সালাদ। খাবার পরে খেতে পারেন দই।
বিকাল
বিকালে হালকা কিছু দিয়ে নাস্তা করতে পারেন ভারি খাবার না খেয়ে। একটু চা কিংবা দুধ খেতে পারেন। সাথে হয়ত দুই তিনটি বিস্কিট। অথবা খেতে পারেন কোনো মজাদার ফল। কোনো দিন এক স্লাইস কেক কিংবা বাসায় তৈরি হালকা পাতলা খেতে পারেন। তবে বেশি তেলের জিনিষ এবং ভাজা পোড়া না খাওয়া বেশি ভালো হবে না।
রাতের খাবার
রাতের খাবার হবে দুপুরের মত। তবে শাক জাতীয় জিনিষ রাতে খাওয়া পরিহার করলে ভাল হবে। বিভিন্ন সবজির আইটেম থাকতে পারে বেশি করে।
রাতে ঘুমানোর আগে
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস দুধ খেতে ভুলবেন না। সারারাত যেহেতু আপনি অভুক্ত থাকবেন। তখন এই দুধ টুকু আপনার গর্ভস্থ সন্তানকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করবে।
এছাড়াও পানি খেতে হবে প্রচুর। পানি খাবার জন্য কোনো নিয়ম নেই। একটু পরপর গর্ভবতী নারী তার চাহিদা অনুযায়ী পানি খেতে পারবেন।
এই তালিকা যেকোনো সাধারন গর্ভবতী নারী মেনে চলতে পারেন। গর্ভবতী নারীদের জন্য এটি একটি প্রতিদিনের সাধারন খাদ্য তালিকা। তবে অনেকের খাদ্য উপাদানে সমস্যা থাকতে পারে। কোনো গর্ভবতী নারী ডায়াবেটিকস, উচ্চ প্রেশার ইত্যাদি শারীরিক সমস্যায় ভুগতে পারেন। তাদের খাবারের তালিকা হতে হবে সম্পূর্ণ ভিন্ন রকমের। ডায়াবেটিকসের শিকার হলে শর্করা জাতীয় ও মিষ্টি জাতীয় খাবার পরিত্যাগ করতে হবে, আবার প্রেসারের রোগীরা লবন কম খাবেন। তাই গর্ভাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং তার দেওয়া তালিকা অনুযায়ী খাবার গ্রহন করতে হবে। শুধুমাত্র একজন গর্ভবতী নারী পারে তার গর্ভাবস্থায় প্রয়োজনীয় খাদ্য গ্রহন করে গর্ভের সন্তানের সুস্থতা নিশ্চিত করতে।
গর্ভাবস্থা পরীক্ষা
১. নিয়মিত তারিখে মাসিক না হবার আরো ২ সপ্তাহ পর প্রস্রাব পরীক্ষা করে গর্ভাবস্থা বোঝা যায়৷
২. যে সব মহিলার মাসিক অনিয়মিত কিংবা অন্য কোনো সমস্যা থাকে তাদের আল্ট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়। নিয়মিত তারিখে মাসিক না হবার কমপক্ষে ৪ সপ্তাহ পর৷
একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২১-০৩-০১৫:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :