গরুর মাংস নিষিদ্ধ, মুরগি খাচ্ছে বাঘ-সিংহ!
একুশে সংবাদ : ভারতের মহারাষ্ট্রে গরুর মাংস নিষিদ্ধ করায় রাজ্যের মুসলিমসহ অনেকেই পড়েছেন বিপাকে। আর এই তালিকায় যোগ হয়েছে মাংসাশী প্রাণী। মুম্বাইয়ের সঞ্জয় গান্ধী জাতীয় উদ্যানের বাঘ সিংহকে প্রতিনিদন গরুর মাংস খেতে দেওয়া হতো। কিন্তু গরুর মাংস নিষিদ্ধ হওয়ায় বেচারা বাঘ-সিংহকে খেতে দেওয়া হচ্ছে মুরগী।
সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাজ্যের গোমাংস বিক্রেতা ও সরবরাহকারীদের ডাকা বনধের জেরে সেখানে বাঘ-সিংহের প্রতিদিনের খাদ্য মাংসও এসে পৌঁছচ্ছে না। যদিও তার উপরে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই৷ গত দু'সপ্তাহ ধরে মুরগি খেয়েই খিদে মেটাতে হচ্ছে এই 'বড় বিড়াল'দের৷ বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, খাবারের অভ্যাসে এই হঠাত্ পরিবর্তন পশুদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো নাও হতে পারে৷
এই উদ্যানে ১৪টি চিতাবাঘ, ৯টি বাঘ, ৩টি সিংহ রয়েছে৷ বিলুপ্ত প্রায় ভারতীয় শকুনের সংখ্যা এখানে ৩, এবং তারাও মহিষের মাংস খেতেই অভ্যস্ত৷ উদ্যানের পশুচিকিৎসক সঞ্জীব পিঞ্জরকরের কথায়, এখানে প্রতিদিন ১৫০ কিলোগ্রাম গরুর মাংসের প্রয়োজন হয়৷ এখন দিনে ১৮০ কেজি করে মুরগি আনা হচ্ছে৷
বম্বে ভেটারিনারি কলেজের প্রফেসর রাজীব গাইকোয়াড়ের কথায়, 'মাংসাশী প্রাণীদের খাবার হঠাত্ করে পাল্টে দিলে, তাদের হজমের সমস্যা হতে পারে৷ নতুন খাবারে শরীরের অভ্যস্ত হতে সময় লাগে৷ পশুরা অলস হয়েও পড়তে পারে৷ মহিষ-মাংসের ফ্যাটের পরিমাণের সঙ্গে মুরগির কোনও তুলনাই চলে না৷'
পরিবেশবিদ আনন্দ পেন্ধাকর বললেন, 'মহিষের মতো বড়ো প্রাণীদের হাড় থেকে যে পুষ্টি পাওয়া যায়, তা বাঘ-সিংহের জন্য একান্ত প্রয়োজন৷'
তবে পশুচিকিৎসক সঙ্গীতা বেঙ্গসরকারের বক্তব্য, 'যে সব প্রাণী বাধ্যতামূলক ভাবে মাংসাশী, তাদের শরীরে বিশেষ-বিশেষ অ্যামিনো অ্যাসিডের চাহিদা পূরণের জন্য মহিষের মাংসের মতো রেডমিট দরকারি৷ বিকল্প খাবার হিসেবে মুরগিও খারাপ নয়৷ তবে এত মুরগির জোগান দেওয়াটা আর্থিক ভাবে সমস্যার৷' পিঞ্জরকরও বলেন, 'এখানে পশুরা খুব পরিশ্রম করে না৷ ফলে মুরগির মতো চর্বিহীন খাবার এক অর্থে মন্দ নয়৷' সুত্র : ইন্ডিয়া টাইমস
একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২২-০৩-০১৫:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :