AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের একমাত্র উপায় 'নির্বাচন'


Ekushey Sangbad

১১:২০ এএম, মার্চ ২৩, ২০১৫
জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের একমাত্র উপায় 'নির্বাচন'

একুশে সংবাদ : বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধ-হরতাল আর কত টানা যাবে? আজ সোমবার এই আন্দোলন ৭৬ দিনে পৌঁছল। অভাবনীয় ঘটনা। বাংলাদেশের ইতিহাসে সরকারবিরোধী এমন দীর্ঘ আন্দোলনের ইতিহাস এটাই প্রথম। বিশ্বের আর কোনো গণতান্ত্রিক দেশেও কোনো আন্দোলন এত দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার নজির নেই। থাইল্যান্ডের সাবেক সেনা সরকারের বিরুদ্ধে 'লাল কোর্তা আন্দোলন' অনেক দিন অব্যাহত ছিল; কিন্তু তা এত দীর্ঘ হয়নি। খালেদা জিয়ার ঘোষিত অবরোধ-হরতালে শুরুতে যেমন ধার ছিল, এখন আর তা নেই। ২০ দলীয় জোটের আন্দোলন অনেকটাই ঝুলে পড়েছে বা স্তিমিত হয়ে গেছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বা তার পরামর্শকরা বাস্তব পরিস্থিতি কি অনুধাবন করতে পারছেন? যে কোনো আন্দোলন-সংগ্রামের শুরু যেমন আছে, শেষও আছে। সাফল্য যেমন আছে, ব্যর্থতাও আছে। অনেক সময় সাফল্য ধরে রাখা যায় না। আবার এক ব্যর্থতায়ও সব শেষ হয়ে যায় না। থাইল্যান্ডে 'লাল কোর্তা' আন্দোলন নিষ্ঠুর হাতে দমন করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে সাধারণ নিার্বাচনে দেখা গেল তাদের প্রার্থী ইংলাক সিনাওয়াত্রা বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন সেই দেশের। তাকে ফের ক্ষমতাচ্যুত করার ঘটনা অবশ্য ভিন্ন আরেক কৃষ্ণ ইতিহাস। বাংলাদেশে খালেদা জিয়ার ডাকা আন্দোলনে এখন ভাটা পড়েছে- এটাই বাস্তবতা। তবে লক্ষণীয় যে, সরকারি দমনপীড়ন থাকলেও তাতে নয়, দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী এবং জনগণের অনাগ্রহের কারণেই আন্দোলনে এই ভাটার টান। তবে এতে সরকার পক্ষের উল্লসিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। কেননা, আন্দোলনে ভাটা পড়ার অর্থ মোটেই এই নয় যে, এটা বিএনপিবিরোধী মনোভাবের প্রকাশ। বিএনপি-জামায়াতের বিশেষ করে বিএনপির সমর্থক-শুভানুধ্যায়ী-অনুরাগীরা আগে যেমন বিএনপির পক্ষে ছিল, আন্দোলনের 'কজ'-এর পক্ষে ছিল, এখনও তাই আছে। কিন্তু লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রলম্বিত আন্দোলন কর্মসূচি অনেককেই বিরক্ত করেছে। অবরোধ চলাকালে পেট্রলবোমা হামলায় দগ্ধ করে মানুষ মারাকে অবিবেকী কাজ বলেই মনে করেছে অনেক বিএনপি সমর্থকও। তারা আন্দোলনের সাফল্য চায়; কিন্তু নিরীহ মানুষের রক্ত আর প্রাণের বিনিময়ে অবশ্যই নয়। এ মনোভাবই সরকারকে সুবিধা দিয়েছে। গভীর পর্যবেক্ষণে যা মনে হয়, ২০ দলীয় জোট, বিশেষ করে বিএনপি তার রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের কৌশল প্রণয়ন ও প্রয়োগে যোগ্যতা, দক্ষতা, রাজনৈতিক পরিপক্বতা এবং প্রজ্ঞার পরিচয় দিতে পারেনি। সঠিক রাজনীতি নির্ধারণ এবং তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যভেদী কৌশল নির্ণয়ের জন্য একটি রাজনৈতিক দলে প্রয়োজন দক্ষ, পোড়খাওয়া কিছু ক্যারিয়ার রাজনীতিবিদের। রাজনীতি তো আত্মমর্যাদাসম্পন্ন স্বাধীনচেতা রাজনীতিবিদেরই কাজ; স্তাবক, তাঁবেদার, পা-চাটা সেবাদাসের কাজ নয়। ফুট-ফরমায়েশ খাটা চাকর-বাকর মার্কা লোকদের কাজ তো নয়ই। তার ওপর ভিন্ন মতাদর্শের এজেন্টরা ঢুকে গেলে তো আরও বিপদ। বিএনপি বোধহয় তেমন বিপদেই পড়েছে। দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলে ত্যাগী, দক্ষ, ক্যারিয়ার রাজনীতিবিদ নেই বললে সত্যের অপলাপ হবে। বরং দুই দলেই এমন অনেকে আছেন, এদেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং আমাদের সুমহান মুক্তিযুদ্ধে যাদের ভূমিকা অত্যন্ত গৌরবোজ্জ্বল। তৃণমূল পর্যায়েও এখনও অনেক প্রবীণ রাজনীতিবিদ আছেন, যারা কোনো কোনো দলীয় নীতিনির্ধারকের শিক্ষক হতে পারেন। কিন্তু তাদের কোনো গুরুত্ব নেই, মূল্য নেই দলে। কাউকে কাউকে রাখা হয়েছে দলের অলঙ্কার হিসেবে অথবা 'সাইনবোর্ড' হিসেবে। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, দল যখন খুব বিপর্যয়ের মুখে পড়ে তখন এসব প্রাজ্ঞজনের শরণাপন্ন হতে দেখা যায়; কিন্তু কাজ ফুরালেই আবার শেষ। বিএনপিতে বিষয়টা অধিকতর পীড়াদায়ক। এখানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব অর্থবিত্তের, এদিক-সেদিক কানেকশনের এবং ব্যক্তি ও পরিবার বিশেষের প্রতি 'অন্ধ আনুগত্যের'। স্তুতিকারিতা, তোষামোদকারিতা এবং কদমবুচিতে পারদর্শিতা হচ্ছে বাড়তি যোগ্যতা। বিএনপির নেতৃত্ব কাঠামো কেমন হবে তা নির্ধারণের এখতিয়ার একান্তভাবেই বিএনপির নীতিনির্ধারকদের- অন্য কারও নয়। তবে এই দলের অনুরাগী বা বন্ধু-সমালোচকরা মনে করেন, দলটির 'সরষেতেই ভূত' আছে। বাংলাদেশের কোনো দলে যদি একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত ব্যক্তি বা চরম দক্ষিণপন্থী প্রতিক্রিয়াশীল মৌলবাদী গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বকারী বা সেই পরিত্যাজ্য ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে থাকে বা নীতিনির্ধারকদের ওপর সীমাহীন প্রভাব বিস্তারকারী হয়, সেই দলের নীতিনির্ধারণ এবং নীতি বাস্তবায়নে কর্মকৌশল প্রণয়ন গণআকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে এমনটা আশা করা যায় না। বিএনপিতে এ ধরনের সঙ্কট পুরোদমেই দৃশ্যমান। ২০ দলীয় জোটের লাগাতার অবরোধ-হরতাল কর্মসূচি আড়াই মাসাধিককাল অব্যাহত রাখা নিয়ে বিএনপির সমর্থক মহলের মধ্যে এখন নানা প্রশ্ন উঠেছে। সে প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে সরকারি মহলের বক্তব্য প্রসঙ্গে কিছু কথা বলা দরকার। তারা বলেন, এ কর্মসূচি মোটেই যথার্থ নয়। খালেদা জিয়া বা তার দল ও জোটের এমন কোনো কর্মসূচি ঘোষণার সিদ্ধান্ত ছিল না। সাংবাদিকদের চাপাচাপিতেই নাকি খালেদা জিয়া ক্ষুব্ধ কণ্ঠে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সরকারি দলের বাঘা বাঘা পন্ডিতরা বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটর 'গোপন কথা' জানলেন কী করে? দৈবজ্ঞ নাকি তারা? তাদের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ অনুমাননির্ভর, তথ্যনির্ভর নয়। বলা চলে, চলমান কর্মসূচি খালেদা জিয়ার সুচিন্তিত ও পূর্বপরিকল্পিত। আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার সঙ্গে তার রাজনৈতিক 'ডিলিংস' দীর্ঘ তিন দশকের। তিনি বর্তমান সরকার, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে তার গভীর পর্যবেক্ষণ থেকে নিশ্চিত ছিলেন যে, তাকে ৫ জানুয়ারির কর্মসূচি পালন করতে দেয়া হবে না। ২০১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর সরকার যা করেছিল, এবারও তাই করা হবে। তিনিও করণীয় ঠিক করে রেখেছিলেন আগে থেকেই। কর্মসূচি ঘোষণা আকস্মিক ছিল বলে মনে হয় না। এমন কর্মসূচি ঘোষণা ঠিক হয়েছে কিনা তা নিয়ে যে কোনো ব্যক্তিই প্রশ্ন তুলতে পারেন। প্রশ্ন উঠতে পারে, নিজের দল ও জোটের যে শক্তির ওপর নির্ভর করে তিনি এমন একটি কঠোর ও ঝুঁকিপূর্ণ কর্মসূচি দিলেন, সেই শক্তি কি যথেষ্ট? আমরা জানি, নামে ২০ দলীয় জোট হলেও শক্তি বিবেচনায় বিএনপির পর জামায়াতে ইসলামী ছাড়া অন্যরা হিসাবের মধ্যেই পড়ে না। মহাজোটে যেমন আওয়ামী লীগের পর স্বৈরাচার এরশাদের জাতীয় পার্টি ছাড়া অন্যরা নৌকা মার্কার কেয়ার অফে চলা দল। মেনন-ইনু সাহেবরা লম্বা লম্বা কথা বলতে ওস্তাদ, নৌকা মার্কা বাদ দিয়ে ইলেকশন করে দেখান তো! খালেদা জিয়া নির্ভর করেছিলেন জামায়াতে ইসলামীর ওপর। ছাত্রশিবিরের সঙ্গে তিনি বৈঠকও করেছিলেন। কিন্তু আন্দোলনের ৭৫ থেকে ৭৬ দিন পর মনে হচ্ছে, বিএনপি ও খালেদা জিয়ার সঙ্গে জামায়াত 'প্রোপারলি বিহেভ' করেনি। আন্দোলনে তারা পূর্ণ শক্তি নিয়োগ করেনি। দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মসূচি পালনের যেসব খবর পাওয়া গেছে, তাতে একটা জিনিস স্পষ্ট হয়েছে যে, বিএনপি এবং এর বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাই কর্মসূচি পালনে বেশি ভূমিকা রেখেছে। এতে আরেকটা বিষয়ও বোঝা গেছে যে, জামায়াত ছাড়া বিএনপি একাই অনেক কিছু করতে সক্ষম। আন্দোলন চলাকালে গ্রেফতারকৃতদের ৮০ শতাংশই বিএনপির নেতাকর্মী। মামলা-মোকদ্দমাও হয়েছে তাদের বিরুদ্ধেই বেশি। এর ব্যাখ্যাটা দাঁড়াল এই যে, আন্দোলনে জামায়াতকে যেমনভাবে পাওয়ার আশা করেছিলেন খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান, জামায়াত সেভাবে আসেনি। সরকারও জামায়াতকে আন্দোলনের বাইরে রাখার নানা কৌশল প্রয়োগ করছে বলে প্রচার আছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে দল ও দলের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে বিপদগ্রস্ত জামায়াত সরকারের কাছ থেকে কোনো ধরনের আনুকূল্য লাভের আশায় বিএনপির সঙ্গে একটু দূরত্ব সৃষ্টি করতেও পারে। শুধু জামায়াতে ইসলামীর নির্লিপ্ত ভূমিকা বা সরকারের দমনপীড়ন, মামলা-মোকদ্দমা, গুম-হত্যার কারণেই নয়, বিএনপির সব স্তরের নেতা ও মাঠকর্মীদের অনাগ্রহও আন্দোলনের গতি শ্লথ করে দেয়ার জন্য দায়ী। আন্দোলনের শুরুতে সর্বত্র যেমন উৎসাহ-উদ্দীপনা ছিল এখন তা অনেকটাই 'থিতিয়ে' পড়েছে। এটা ইচ্ছাকৃত নয়, ক্লান্তি ও অবসাদের ফল। বাস্তব অবস্থা প্রমাণ করছে, কঠোর একটি আন্দোলনের প্রলম্বিত সময়সীমা নির্ধারণকালে বিএনপি নিজস্ব শক্তি-সামর্থ্যের বিষয়টি বিবেচনা করেছে বলে মনে হয় না। নিজেদের দম কতদূর রাখা সম্ভব তা যাচাই না করেই দীর্ঘ পথে সরকারকে দাবড়াতে শুরু করেছে তারা। বোধহয় ভাবেনি যে, দাবড়াতে গেলে আরও দ্রুত দৌড়াতে হয়। সরকারের 'দম' একটু বেশি বলেই মনে হচ্ছে। জোরেশোরে ধাক্কা দেয়ার সুযোগ ২০ দলীয় জোটকে দেয়নি তারা। অথচ বিএনপি জোটের বিশেষ করে বিএনপির 'দম' ফুরিয়ে এসেছে বলে মনে হচ্ছে। ক্লান্ত-শ্রান্ত বিএনপির পক্ষে টানা অবরোধ-হরতাল কর্মসূচি আর বেশিদূর টানা যাবে বলে মোটেই মনে হচ্ছে না। সরকার ব্যাপারটা সঠিকভাবে ধরতে পেরেছে বলে অনুমান করা যায়। বিএনপি জোটের আন্দোলন ইস্যুবিহীন নয়। আন্দোলনের পক্ষে যুক্তি অনেক সবল ও শক্তিশালী। ২০১৪ সালে একটি একতরফা ও বিতর্কিত নির্বাচন করে সরকারই এমন একটা আন্দোলনের ক্ষেত্র তৈরি করে রেখেছে। ফলে আন্দোলনের পক্ষে বিপুল জনসমর্থনও রয়েছে। বিএনপি নেতৃত্বের বোঝা উচিত ছিল, তাদের সমর্থকরা উচ্ছৃঙ্খল দাঙ্গাবাজ নয়। এরা বিএনপিকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ পেলে বাঙ্ভর্তি ভোট দেয়; কিন্তু রাস্তায় লড়াই করে না, রক্ত দিতে নামে না। এবার তো তা আরও স্পষ্ট হয়েছে। বিএনপির আন্দোলন সফল হোক তা চাইলেও এ সমর্থকরা কিন্তু মাঠে নামেনি। বিএনপি নেতাদের উচিত বাস্তবতার নিরিখে করণীয় নির্ধারণ করা। সরকার আন্দোলনের এ দুর্বলতা কাজে লাগিয়েছে ষোল আনা। তবে এ সুযোগে সরকার এখন যা করতে চাচ্ছে তা বুমেরাং হয়ে যেতে পারে। অবরোধ-হরতাল শিথিলের সুযোগে বিএনপি, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে অনেকটা 'ছাই দিয়ে' ধরতে চাচ্ছে সরকার। খালেদা জিয়ার গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রায় এক মাস 'হিমঘরে' রাখার পর তা সেখান থেকে বের করার চিন্তা করছে সরকার। শোনা যাচ্ছে, তাকে কোন কারাগারে বন্দি রাখা হবে সে ব্যাপারেও চিন্তাভাবনা চলছে। সরকার সমর্থক জনকণ্ঠ খবর ছেপেছিল যে, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে 'নতুন অতিথি' রাখার আয়োজন চলছে। আবার শোনা যাচ্ছে, খালেদা জিয়াকে রাখা হবে কাশিমপুর কারাগারে। প্রধানমন্ত্রীর অতি সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্য এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের প্রচারকে সমর্থন করে। মানুষ হত্যার দায়েও খালেদা জিয়ার বিচার হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অনেকে ধারণা করছেন, পেট্রলবোমা হামলার যেসব মামলায় খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে, ওই ধরনের কোনো মামলায় তার শাস্তি হয়ে যেতে পারে। তারেক রহমানেরও শাস্তি হতে পারে। মামলাগুলো সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বিচার করার লক্ষ্যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে। সরকার হয়তো চাইছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই অন্য মামলার পাশাপাশি এ সংক্রান্ত মামলাও নিষ্পত্তি হয়ে যাক। অভিযোগ প্রমাণিত হলে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান নির্বাচনের জন্য অযোগ্য হয়ে যাবেন। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি সংক্রান্ত খালেদা জিয়াসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার হাইকোর্টের আদেশ দাখিলের জন্য ১৩ এপ্রিল দিন ধার্য করা হয়েছে। এছাড়া ডান্ডি ডাইংয়ের ঋণখেলাপি মামলায় মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর ওয়ারিশ হিসেবে খালেদা জিয়াকেও পক্ষভুক্ত করা হয়েছে কোকোর বিধবা স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে। ব্যাকফুটে পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও চেপে ধরছে বিএনপিকে। জানা গেছে, গত বছর ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে ও পরে নাশকতার ঘটনায় দায়ের করা বিভিন্ন মামলা চাঙ্গা করা হচ্ছে, যাতে ফাঁসবেন বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীও। অর্থাৎ বিএনপিকে কঠিন সঙ্কট ও বিপর্যয়ের মুখে ফেলার কৌশল নিচ্ছে সরকার। কিন্তু এসব পদক্ষেপ কি সরকারের জন্য শুভ হবে? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, তা মোটেই না। বরং এতে খালেদা জিয়া ও বিএনপির প্রতি জনগণের সহানভূতি আরও বাড়বে। কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীদের ক্ষুব্ধ ও দ্রোহী মনোভাব আবার নতুন কোনো শক্ত আন্দোলন উসকে দিতে পারে। সরকারের উচিত হবে মূল সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানে উদ্যোগী হওয়া। এখন প্রয়োজন একটি স্থায়ী সমাধান। তাই সুযোগ বুঝে কোণঠাসা করে দেয়ার চতুর কোনো খেলা না খেলে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে মর্যাদাশীল সরকার গঠনের লক্ষ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসার আয়োজন করাই শ্রেয়। কারণ, যত গোলমাল তো ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচন নিয়ে। সরকার পক্ষ যেখানে বলছে, বিএনপি একটি গণবিচ্ছিন্ন দল, জনগণের কোনো সমর্থন নেই তাদের প্রতি, সেখানে আগাম বা মধ্যবর্তী নির্বাচন দিতে গণসংশ্লিষ্ট একটি জনপ্রিয় সরকারের তো কোনো ভয় থাকার কথা নয়। নির্বাচন হলে তো জনগণ তাদেরই আবার ক্ষমতায় বসাবে। কাজী সিরাজ : জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও কলাম লেখক একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২৩-০৩-০১৫:
Link copied!