চট্টগ্রামে ১৭ বছর ধরে শীর্ষে রবি
একুশে সংবাদ : দেশে মোবাইল ফোন চালুর ১৭ বছর পরও বেসরকারি অপারেটর রবি চট্টগ্রামে ঈর্ষণীয়ভাবে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে দেশের ৬টি মোবাইল অপারেটরের মধ্যে রবি’র বার্ষিক রাজস্ব আয় এককভাবেই ৬০ শতাংশ। বাকি ৫টি অপারেটর মিলে চট্টগ্রামে রাজস্ব আয় ৪০ শতাংশ।
একসময় রবি ছিল একটেল, যা ছিল দেশের অন্যতম শিল্প প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের একে খান গ্রুপের মালিকানাধীন।
অ্যাসোসিয়েশন অভ মোবাইল টেলিকম অপারেটর্স অভ বাংলাদেশ (অ্যামটব) এর ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, এ বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে তৃতীয় অবস্থান রবি আজিয়াটা লিমিটেডের। তাদের মোট গ্রাহক ২২ শতাংশ। সমগ্র দেশে সর্বোচ্চ ৪২ শতাংশ গ্রাহক রয়েছে গ্রামীণফোনের। আর দ্বিতীয় অবস্থানে বাংলালিংক। তাদের গ্রাহক ২৬ শতাংশ।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রামে গ্রাহকসংখ্যায় শীর্ষে ওঠার জন্য অন্য মোবাইল অপারেটরদের প্রাণপণ চেষ্টার পরও রবি চট্টগ্রামে মোবাইল ফোন ব্যবসার ‘মার্কেট লিডার’।
এ প্রসঙ্গে রবি আজিয়াটা লিমিটেডের মুখপাত্র মহিউদ্দিন বাবর বলেন, ‘বাংলাদেশের কার্যক্রম শুরুর পর থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে মনোযোগ বেশি দিয়েছে রবি। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি ঘটিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে। পুরো চট্টগ্রাম জুড়েই রবি সবার আগে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে। নেটওয়ার্ক আর সেবা দিয়েই আজ রবি চট্টগ্রামে সবার চেয়ে অনেকগুণ এগিয়ে। রবি’র সঙ্গে চট্টগ্রামের মানুষের আবেগ ও আন্তরিকতার সম্পর্ক রয়েছে।’
তিনি জানান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাবলিক লাইব্রেরি, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ইন্টারনেটের আলাদা কর্নার করে দিয়ে সামাজিক কার্যক্রমেও অংশ নিয়েছে রবি। ঐতিহ্যবাহী ও পুরনো চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে বিশুদ্ধ খাবার পানিরও ব্যবস্থা করেছে। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় আদিবাসীদের ঘরের চালে বিনা খরচে সৌরবিদ্যুতের প্যানেল বসিয়ে তাদেরকে আলোকিত করার ব্যতিক্রমী কাজও শুরু করেছে রবি।
শুরুর দিকে চট্টগ্রামের সকল ভিআইপি গ্রাহকই রবি সিম ব্যবহার করতেন। চট্টগ্রামের ভিআইপি গ্রাহকদের অনেকেরই নম্বর এখন ০১৮১৯৩১….।
চিটাগং চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম গত ১৭ বছর ধরেই ব্যবহার করছেন রবি সিম। তিনি বলেন, ‘আমি মোবাইল ফোন ব্যবহার শুরুর সময় রবি সিমটি কিনি। দেশ-বিদেশে অনেকের কাছে নম্বরটি দেয়া আছে। তাই সেটি পরিবর্তনেরও কোনো সুযোগ নেই।’
চট্টগ্রামের নেটওয়ার্ক আরো শক্তিশালী করতে বিনিয়োগও অব্যাহত রেখেছে এ বেসরকারি মোবাইল অপারেটর। চট্টগ্রামের সাফল্য কেন ঢাকায় পায়নি রবি-এ প্রশ্নের জবাবে রবি’র কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা, বরিশাল, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন অঞ্চলে রবি’র গ্রাহক ও ব্যবসা দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। ঢাকার অনেক জায়গায় রবি এখন দ্বিতীয় অবস্থানে আছে।
অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় কল ড্রপ হচ্ছে, নেটওয়ার্ক দুর্বল হওয়ায় লাইন কেটে যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে রবি’র পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে কল ড্রপের হার ০.৫৫ শতাংশ যা অন্য সব মোবাইল অপারেটরের বিবেচনায় কম।
প্রতিষ্ঠানটি টিএম ইন্টারন্যাশনাল বিএইচডি (টিএমআই) নামে ১৯৯২ সালের ১২ জুন টেলিকম মালয়েশিয়া বিএইচডি (টিএম)-এর মোবাইল ও আন্তর্জাতিক অপারেশনের সহযোগী হিসেবে যাত্রা করলেও ২০০৯ সালের ২ এপ্রিল এটি নাম পরিবর্তন করে হয় আজিয়াটা। তখন একইসাথে প্রতিষ্ঠানটি লোগোও পরিবর্তন করে।
আজিয়াটার ভারত, সিঙ্গাপুর ও ইরানে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত পার্টনার থাকার পাশাপাশি মোবাইল ব্যবসা আছে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা, বাংলাদেশ ও ক্যাম্বোডিয়াতেও।
একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২৩-০৩-০১৫:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :