ভাই-বোনের বিয়ে যেখানে বৈধ !
একুশে সংবাদ : সময়ের সঙ্গে ভিন্ন পরিস্থিতি বদলে যাওয়ার ইতিহাস আছে। কিন্তু এমন এক ইতিহাস হতে যাচ্ছে যা কিনা নিজের বিবেককে দারুণভাবে নাড়া দেবে। যদি একই গর্ভের সহোদর সন্তান যৌনতায় বৈধতা পায় তাহলে অবাক করারই কথা।
সম্প্রতি জার্মানির ‘এথিক্স কাউন্সিল’ এমনই এক অভিনব বিষয় সামনে নিয়ে এসেছে। জার্মানিতে অদূর ভবিষ্যতে বৈধ হচ্ছে ভাই-বোনের বিয়ে!
জার্মানিতে সমাজ অস্বীকৃত যৌন সম্পর্কের বিষয়টি অপরাধমূলক কর্মকান্ডের অন্তর্ভুক্ত। ইউরোপের বেশ কিছু দেশ- ফ্রান্স, স্পেইন, পর্তুগাল, নেদারল্যান্ড লুক্সেমবার্গ কিন্তু এটিকে বৈধতা দিয়েছে। আর সে কারণেই জার্মানিতে বিষয়টি নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
এথিক্স কাউন্সিল বলেন, দুজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করবে কি-না তা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। সমাজ এটিকে নিষেধাজ্ঞার জায়গায় নিয়ে যেতে পারে না। এর জন্য রীতিমতো অপরাধমূলক কর্মকান্ডের আওতায় শাস্তিবিধান করতে পারে না।
জার্মান প্রশাসন এথিক্স কাউন্সিলের যুক্তিতে যদি গুরুত্ব দেয়, তাহলে ফ্রান্স, স্পেন, পর্তুগালের মতো জার্মানিতেও অচিরেই ভাই-বোনের যৌন সম্পর্ক বৈধ করতে পারে।
মনে করা যেতে পারে প্রাচীন মিসরের রাজপরিবাগুলোর কথা। যেখানে কথিত রক্তের বিশুদ্ধতা রক্ষার জন্য সহোদর ভাই-বোনের মধ্যে জাঁকজমকভাবে বিয়ে দেয়া হতো। এথিক্স কাউন্সিল ‘রক্তের বিশুদ্ধতা রক্ষার’ বিষয়টিকে উড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু সমর্থন করেছে মানুষের সিদ্ধান্ত নেয়ার স্বাধীনতাকে।
নতুন এ বিষয়টি সামনে চলে আসে এক অজাচারী জুটিকে ঘিরে। প্যাট্রিক ও সুসান, গণমাধ্যমের কল্যাণে জার্মানিতে সুপরিচিত। তারা দুজন সহোদর ভাই-বোন এবং শারীরিক আকর্ষণের বশবর্তী হয়ে মিলিত হন।
বিষয়টি জানাজানির পর ততদিনে তারা চার সন্তানের বাবা-মা। জার্মান সরকার দুজনকে পৃথক করে দেয় এবং অপরাধমূলক কর্মকান্ডের আওতায় প্যাট্রিকের চার বছরের জেল হয়। ঔরসজাত চার সন্তানের মধ্যে দুজনই প্রতিবন্ধী। তাদের নিরাময় কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
দুজন প্রতিবন্ধী সন্তানই দেখিয়ে দিচ্ছে, কেন অজাচার অবৈধ। আর এমনটা মনে করছে এথিক্স কাউন্সিল। ঠিক এ কারণেই বিষয়টি ধীরে ধীরে সামাজিকভাবে অপরাধ হিসেবে দাঁড়িয়েছে যা একটি ভুল সিদ্ধান্ত।
তাদের মিলনে জন্ম নেয়া প্রতিবন্ধী সন্তানকে যখন অবাঞ্ছিত করা হচ্ছে না, তখন ভাই-বোনের যৌন সম্পর্ক অবৈধ, বে আইনি, তাদের সন্তান অবাঞ্চিত হওয়াটা অমানবিক।
এথিক্স কাউন্সিল বিষয়টি মাথায় রেখে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে থাকে। কাউন্সিল মতামতও প্রদান করেছে। কাউন্সিল ভাই-বোনের সম্পর্ককে যখন অবৈধ করাটা অমানবিক মনে করছে তখন অদূর ভবিষ্যতে জার্মানিতে বিষয়টি বৈধ হওয়া কোনো বিষয় নয়, শুধু সময়ের ব্যাপার।
একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২৩-০৩-০১৫:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :