AB Bank
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

নামাজ সম্বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি....


Ekushey Sangbad

১১:০৩ এএম, এপ্রিল ১৯, ২০১৫
নামাজ সম্বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি....

একুশে সংবাদ : মুসলিম মাত্রই আমরা জানি যে ইসলাম ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন স্তম্ভ হলো নামাজ পড়া ও কায়েম করা। কিন্তু, দুঃখজনক হলেও সত্য যে, নিজেদের মুসলিম বলে দাবী করলেও এই গুরুত্বপূর্ন স্তম্ভটি সম্বন্ধে আমরা অনেক মুসলিমই আজ উদাসীন। এই উদাসীনতার অন্যতম কারণ হলো নামাজের গুরুত্ব অনুধাবনের ব্যর্থতা এবং নামাজ সম্বন্ধে প্রচলিত অসংখ্য ভুল ধারণা। আমরা যারা নিয়মিত নামাজ পড়ি, তাদের অনেকেই ছোটবেলায় হুজুরের কাছে হয়ত অনেক কিছু ভুল শিখেছিলাম, এখনো সেই ভুল নিয়মেই নামাজ পড়ে যাচ্ছি। অথচ, ইসলামী জ্ঞান অর্জন করা আল্লাহ্‌ আমাদের জন্য ফরজ করেছেন, কাজেই আমাদের সকলেরই উচিত ইসলাম সম্বন্ধে, বিশেষ করে নামাজ সম্বন্ধে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা এবং নামাজ কায়েম করা। এটা খুবই খারাপ একটা ব্যাপার যে, বাংলাদেশের বইয়ের বাজারে বহুলভাবে প্রচারিত এবং বিক্রিত নামাজ ও অন্যান্য ফিক্‌হ সংক্রান্ত বইগুলি জাল হাদিস আর মনগড়া নিয়ম-কানুনে ভরপুর। আমরা নিজেরা সেই ভুল বইগুলি পড়ে নামাজ শিখি, আর আমাদের অনেক হুজুরেরাই সেই ভুল বইগুলি থেকেই আমাদের হয়ত ছোটবেলায় নামাজ পড়া শিখিয়েছিলেন। (উল্লেখ্য, এই সব বইয়ের লেখকদের এবং আমাদের সম্মানিত হুজুরদের যত না দোষ, তার চেয়ে বেশী দোষ আমাদের মত উচ্চশিক্ষিত(?) মুসলিমদের, যারা ধর্মকে হুজুরদের ডিপার্টমেন্ট বলে নিজেরা এই বিষয়ে পড়াশুনায় ইস্তফা দিয়েছি)। এই লেখাটির উদ্দেশ্য হলো মুসলিম ভাই-বোনদের মধ্যে নামাজ সংক্রান্ত বহুল প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা সংশোধন করে দেয়া, এবং এমন কিছু গুরুত্বপূর্ন বিষয় জানানো যা কিনা অগণিত সাধারণ মুসলিমের অজানা। ১। নামাজ ত্যাগকারী মুসলিম কিনা তা সন্দেহজনক: আমাদের দেশের সাধারণ মুসলিমদের বিশ্বাস হলো – যেহেতু আমি কালেমা পড়েছি, নামের আগে মুহাম্মাদ আছে, শুক্রবারে জুমু’আর নামাজ পড়ি, ঈদ পালন করি, মানুষের সাথে দেখা হলে সালাম দেই, মাঝে মধ্যেই ইনশা আল্লাহ্‌, মাশআল্লাহ্‌ বলি, কাজেই আমি অবশ্যই মুসলিম। এখন জীবনে ভাল-মন্দ যাই করি না কেন, ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি আর না পড়ি, একদিন না একদিন তো বেহেশতে যাবই। কিন্তু, প্রকৃত সত্য হলো – শুধু কালেমা পড়লে বা মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেই মুসলিম হওয়া যায় না। মুসলিম হতে হলে লাগে ৭টি বিষয়ের উপর ঈমান আনা (অন্তর্গত অবস্থা) এবং ইসলামের ৫টি স্তম্ভের উপর আমল করা (বাহ্যিক কাজ) (রেফারেন্সঃ সহীহ্‌ মুসলিম এর ৬ নং হাদিস) । মুসলিম হওয়া একটা বিশেষ status, যা কাজের মাধ্যমে অর্জন করতে হয়, ঠিক যেভাবে আপনি আপনার কলেজ/ ইউনিভার্সিটি থেকে নির্দিষ্ট condition গুলো পূরন করার পরে নিজের যোগ্যতা প্রমাণের মাধ্যমে আপনার সার্টিফিকেট কষ্ট করে অর্জন করেছেন। বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেম মুহাম্মাদ ইবনে আল উসাইমিন(রহ) এর মতামত হলো – যে ব্যক্তি ৫ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ নিয়মিত আদায় না করবে সে মুসলিম থাকবে না, কাফির হয়ে যাবে। এর স্বপক্ষে তিনি অনেকগুলি যুক্তি দিয়েছেন । আমি শুধুমাত্র তিনটি যুক্তি উল্লেখ করছিঃ i) আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা মহাগ্রন্থ কোরআনের বলেন: তাদের পর এল অপদার্থ উত্তরসূরীরা, তারা নামাজ নষ্ট করল এবং কুপ্রবৃত্তির অনুগামী হল, তাই তারা অচিরেই মন্দ পরিণাম প্রত্যক্ষ করবে। কিন্তু, তারা ব্যতীত, যারা তওবা করেছে এবং ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে, তারাই তো জান্নাতে প্রবেশ করবে – তাদের প্রতি সামান্য জুলুমও করা হবে না। (সূরা মারইয়াম ১৯:৫৯-৬০) লক্ষ্য করুন, ৫৯ নং আয়াতে নামাজ ত্যাগকারীদের অপদার্থ বলা হয়েছে। আর তারা কিভাবে আবার সুপথগামী হতে পারবে তার বর্ণনা করতে যেয়ে ৬০ নং আয়াতে তাদেরকে তওবা করে আবার ঈমান আনতে বলা হয়েছে। এটা প্রমাণ করে যে, নামাজ ত্যাগকারী অবস্থায় তাদের ঈমান চলে গিয়েছিল, অর্থাৎ তারা অমুসলিম হয়ে গিয়েছিল। ii) নামাজ একমাত্র ইবাদত যাকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কোরআন মাজিদে ‘ঈমান’ এর সমার্থকরূপে ব্যবহার করেছেন। আল্লাহ সূরা বাকারায় বলেন: আর আল্লাহ এরূপ নন যে তিনি তোমাদের ঈমানকে ব্যর্থ করবেন। (২:১৪৩ এর অংশবিশেষ) আয়াতের ব্যাখা: প্রিয়নবী মুহাম্মদ(সা) এর নবুয়তীর প্রথম দিকে সাহাবারা বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে ফিরে নামাজ পড়তেন। যখন মুসলমানদের কিবলা পরিবর্তন করে কা’বা শরীফের দিকে করা হলো তখন অনেক সাহাবা প্রশ্ন করতে লাগলেন যে তাদের আগের নামাজগুলির কি হবে? সেগুলির জন্য কি সওয়াব পাওয়া যাবে না? তখন আল্লাহ এই আয়াত নাজিল করেন যে, আল্লাহ তোমাদের ঈমান তথা নামাজকে ব্যর্থ করবেন না। এই আয়াত দ্বারা এটা প্রমাণিত হয় যে, নামাজ না পড়লে ঈমান থাকে না। একজন মুসলমানকে ততক্ষণই মুসলমান বলা হয় যতক্ষন তার ঈমান থাকে, আর একজন মুসলমানের ঈমান তখনই থাকে যখন সে প্রত্যেকদিন নিয়মিতভাবে কমপক্ষে ফরজ নামাজগুলো আদায় করে। iii) বোরাইদা বিন হোসাইফ (রা) থেকে বর্ণিত নিচের হাদিসটিও প্রমাণ করে যে নামাজ ত্যাগকারী অমুসলিম। অনুরূপ বক্তব্যের একটি হাদিস সহীহ মুসলিম শরীফের ঈমান অধ্যায়েও পাওয়া যায়। রাসূলুল্লাহ(সা) বলেন: আমাদের ও তাদের (কাফেরদের) মাঝে চুক্তি হচ্ছে নামাজের। অতএব, যে ব্যক্তি নামাজ ত্যাগ করল সে কুফরী করল। – (আহমাদ, আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ) কাজেই, আপনাকে মুসলিম হতে হলে শুধু জুমু’আ বা ঈদের নামাজ নয়, বরং ৫ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ নিয়মিত ভাবে আদায় করতে হবে। প্রখ্যাত চার ইমামের মধ্যে ইমাম আহমদ ইবনে হান্‌বল (রহিমাহুল্লাহ) এর অনুসারীরাও এই মতামত পোষণ করেন। যদিও ইমাম আবু হানিফা (রহিমাহুল্লাহ), ইমাম মালিক (রহিমাহুল্লাহ) ও ইমাম শাফি’ (রহিমাহুল্লাহ) মনে করেন যে- বেনামাজী কাফির হবে না, ফাসিক (অবাধ্য) হবে। তবে, বিংশ শতাব্দীর আরেক অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেম শেখ আব্দুল আজিজ বিন বাজ (রহ) এবং সৌদি ফতোয়া স্ট্যান্ডিং কমিটির মতামত হল – ইচ্ছাকৃতভাবে নিয়মিত নামাজ ত্যাগকারী শুধু কাফিরই নয়, তাকে সালাম পর্যন্ত দেয়া যাবে না, এমনকি সে সালাম দিলে তার উত্তর দেয়াও বৈধ নয় । ২। নতুন নামাজীকে পুরানো নামাজের কাযা পড়তে হবে না: অনেকেই নামাজ পড়া শুরু করে না এই ভয়ে যে সারাজীবনে যা নামাজ miss হয়ে গেছে তার কাযা পড়তে হবে। হাদিস থেকে এরকম কোন বিধান পাওয়া যায় না। আপনি যদি আগে বেনামাজী হয়ে থাকেন আপনাকে আগের নামাজ কাযা পড়তে হবে না, কিন্তু আল্লাহ্‌র কাছে আন্তরিকতার সাথে তাওবাহ্‌ করতে হবে। তবে নিয়মিত নামাজী হওয়ার পর, কোন অপরাগতার কারণে যদি ২/১ বার কখনো নামাজ miss করে ফেলেন তখন সেটার কাযা পড়তে হবে । ৩। দিনে মাত্র ১৭ রাক’আত নামাজ বাধ্যতামূলক: নামাজ ত্যাগ করা কুফরী কাজ -এটা জানার পর অনেকেই সংকল্প করে যে এখন থেকে নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ব। কিন্তু পরমুহুর্তেই চিন্তা করে যে – ওরে বাবা! ফজর-আসর ৪ রাক’আত করে, যোহরের নামাজ ১০ রাক’আত, মাগরিব ৫ রাক’আত, ‘ইশার নামাজ ৯ রাক’আত, সারা দিনে মোট ৩২ রাক’আত! এত্ত নামাজ পড়ব কিভাবে? কিন্তু সঠিক তথ্য হলো যে, সারাদিনে মাত্র ১৭ রাক’আত নামাজ পড়া ফরজ – ফজরের ২ রাক’আত, যোহরের ৪ রাক’আত, ‘আসরের ৪ রাক’আত, মাগরিব এর ৩ রাক’আত এবং ‘ইশা এর ৪ রাক’আত। এই ১৭ রাক’আত নামাজ যদি আপনি ওয়াক্তমত পড়তে না পারেন তো গুনাহগার হবেন। বাকী যে সুন্নাত বা নফল নামাজগুলো আছে সেগুলো পড়লে আপনি সওয়াব পাবেন, কিন্তু না পড়লে গুনাহগার হবেন না । রাসূলুল্লাহ(সা) বলেন: যে ব্যক্তি দিনে-রাতে ১২ রাক’আত (ফরজ বাদে অতিরিক্ত) নামাজ পড়বে তার জন্য জান্নাতে একটি বাড়ি তৈরী করা হবে। এই ১২ রাক’আত হলো: যোহর নামাজের আগে ৪, পরে ২ রাক’আত, মাগরিবের নামাজের পরে ২ রাক’আত, ইশা এর নামাজের পরে ২ রাক’আত এবং ফজরের নামাজের আগে ২ রাক’আত। – (তিরমিযী ৩৮০, সহীহ আল জামি’ ৬৩৬২, হাদিসটি সহীহ) ৪। বিতর নামাজ ১ রাকাতও পড়া যায়: বিতর নামাজ ‘ইশা এর নামাজের অংশ নয়, বরং এটা কিয়ামুল-লাইল বা তাহাজ্জুদ এর অংশ। বিতর শব্দের অর্থ বিজোড়, আর তাই বিতর নামাজ ১,৩,৫,৭ ইত্যাদি বিভিন্নভাবে পড়ার বিধান রয়েছে। কাজেই, বিতর নামাজ ১ রাক’আত পড়লেও তা আদায় হয়ে যাবে, তবে অবশ্যই এটা ৩ রাক’আত বা তার বেশী পড়ে নেয়া উত্তম। বেশীরভাগ স্কলারের মতে বিতর নামাজ সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ (highly recommended সুন্নাত, কিন্তু না পড়লে কোন গুনাহ হবে না)। আবার অনেক আলেমই recommend করেন – ‘ঈশার নামাজের পর কমপক্ষে ১ রাক’আত বিতর নামাজ পড়ে নিতে । ৫। পুরুষ-নারী নামাজে কোন পার্থক্য নাই: পুরুষ ও নারীর নামাজ আদায়ের পদ্ধতিতে কোন পার্থক্য নাই (যদিও নামাজের সময় শরীর ঢাকার বিধান আলাদা)। রাসূলুল্লাহ(সা) নারী-পুরুষের নামাজের জন্য কোন আলাদা বিধান দিয়ে যান নাই। রাসূলুল্লাহ(সা) বলেছেনঃ তোমরা সেভাবে নামাজ আদায় করো, যেভাবে আমাকে নামাজ আদায় করতে দেখ (সহীহ্‌ বুখারী)। এখানে উল্লেখ্য, আমাদের দেশে বহুলভাবে প্রচলিত নিয়ম হলো যে, নামাজে দাঁড়িয়ে নারীরা বুকে এবং পুরুষেরা নাভীর উপর হাত বাঁধে। সহীহ্‌ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে নারী-পুরুষ উভয়েই যখন নামাজে দাঁড়িয়ে হাত বাঁধবে, তখন ডান হাতের তালুকে বাম হাতের কব্জির উপর বা বাহুকে ধারণ করে হাত দুইটি বুকের উপর রাখতে হবে। ৬। আরবীতে নামাজের নিয়ত পড়ার দরকার নেই: আরবীতের নামাজের নিয়ত পড়ার বা মৌখিক ভাবে নিয়ত উচ্চারণ করার কোন বাধ্য বাধকতা নাই, বরং এটা বিদ’আত (বিদ’আত: ধর্মে নতুন সংযোজন যা রাসূলুল্লাহ(সা) বা তাঁর অনুগত সাহাবাদের দ্বারা প্রমাণিত নয়)। নিয়ত করা একটি অন্তর্গত ব্যাপার। আপনি মনে মনে নিজের ভাষায় নামাজের উদ্দেশ্য পোষণ করলেই নিয়ত হয়ে যাবে। ৭। নামাজে চার বার হাত তোলা: নামাজে উভয় হাত কানের লতি বা কাঁধ পর্যন্ত তোলাকে রাফ’উল ইয়াদাইন বলে। প্রচলিত ভাবে আমরা শুধু মাত্র ‘আল্লাহু আকবার’ বলে নামাজের শুরুতে হাত বাঁধার সময় কাঁধ পর্যন্ত দুই হাত তুলি। এটা ঠিক আছে, কিন্তু ইমাম বুখারীর সহীহ হাদিস অনুসারে রাসূলুল্লাহ(সা) আরও তিন সময় হাত তুলতেনঃ i) সামি’আল্লা হুলিমান হামিদাহ্‌ বলে রুকু’তে যাওয়ার সময় ii) রাব্বানা লাকাল হামদ্‌ বলে রুকু থেকে উঠার সময় iii) দ্বিতীয় রাক’আতের আত্তাহিয়্যাতু পড়ার পরে তৃতীয় রাক’আতের শুরুতে আল্লাহু আকবার বলে উঠে দাড়ানোর সময়। উল্লেখ্য, অতিরিক্ত এই হাত তোলা মুস্তাহাব, কেউ না তুললেও তার নামাজ হবে, কিন্তু যে তুলবে সে ইনশা আল্লাহ্‌ অনেক সাওয়াব পাবে। ৮। সিজদায় দু’আ করা: আমাদের অনেকেরই জানা নাই যে সিজদারত অবস্থায় নিজের ভাষায় দু’আ করা যায়। রাসূলুল্লাহ(সা) বলেছেন যে, বান্দা আল্লাহ্‌র সবচেয়ে কাছে থাকে সিজদারত অবস্থায়, তাই তিনি সিজদায় থাকাকালে বেশী করে দু’আ করতে বলেছেন (সহীহ্‌ মুসলিম)। ৯। তাশাহ্‌হুদের সময় তর্জনী তোলা: নামাজের দ্বিতীয় এবং চতুর্থ রাক’আতে বসে বসে তাশাহ্‌হুদ তথা আত্তাহিয়্যাতু পড়ার সময় আমরা কেউ ডান হাতের তর্জনী তুলি, কেউ তুলি না, আবার কেউ শুধু ‘আশহাদু আল্লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলার সময় তর্জনী তুলি – এই ব্যাপারটা নিয়ে বেশীরভাগ মুসলিমই confused থাকে। সঠিক পদ্ধতি হলো যে, এক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ(সা) এর সুন্নাত দুইরকমঃ i) সমস্ত তাশাহহুদের সময় ডান হাতের মুঠি প্রায় বন্ধ করে তর্জনী কিবলার দিকে করে স্থির রাখা ii) সমস্ত তাশাহহুদের সময় ডান হাতের মুঠি প্রায় বন্ধ করে তর্জনী কিবলার দিকে করে স্থির না রেখে অল্প একটু উপরে নিচে করে নাড়তে থাকা। উল্লেখ্য যে, তর্জনী নাড়ানোর এই পদ্ধতিটিও মুস্তাহাব। অর্থাৎ, কেউ একেবারেই তর্জনী না উঠালে গুনাহগার হবে না, কিন্তু কেউ এটা করলে সাওয়াব পাবে ইনশা আল্লাহ্‌। ১০। মুনাজাত নামাজের অংশ নয়: মুনাজাতকে নামাজের অংশ মনে করা এবং নামাজ শেষে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা বিদ’আত এবং স্পষ্ট ভ্রষ্টতা । নামাজ শেষে মুনাজাত না করে বরং সহীহ্‌ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নিচের আমলটি করুন: i) ৩৩ বার সুবহান আল্লাহ্‌ (আল্লাহ্‌ মহাপবিত্র) পড়ুন ii) ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ (সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্‌র) পড়ুন iii) ৩৩ বার আল্লাহু আকবার (আল্লাহ্‌ সবচাইতে বড়) পড়ুন, iv) ১ বার পড়ুন – লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুল্কু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লি শাই ইন ক্বাদির (আল্লাহ্‌ ছাড়া কোনো মা’বুদ নাই, তিনি একক, তাঁর কোনো শরীক নাই। সকল বাদশাহী এবং সকল প্রশংসা তাঁরই জন্য। তিনিই সবকিছুর উপর ক্ষমতাশালী) ১১। জুমু’আর খুতবার সময় নামাজ পড়া: মসজিদে প্রবেশ করে বসার আগে প্রথমে ২ রাক’আত তাহ-ইয়াতুল মসজিদ পড়া সুন্নাত, এমনকি যদি ইমাম খুতবাও দিতে থাকে (সহীহ বুখারী: জুমু’আর নামাজের কিতাব, ভলিউম ২, হাদিস নং ৫২)। উল্লেখ্য, আমাদের দেশে জুমু’আর ২ রাক’আত ফরজ নামাজের আগে যে ৪ রাক’আত কাবলাল জুমু’আ নামাজের প্রচলন আছে তা শুদ্ধ নয়। তাহ-ইয়াতুল মসজিদ ছাড়া জুমু’আর নামাজের আগে আর কোন নামাজ নাই। আর, জুমু’আর নামাজের পরে রাসূলুল্লাহ(সা) অনেক সময় অতিরিক্ত নামাজ পড়েছেন যা সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ (highly recommended)। এই অতিরিক্ত নামাজ তিনি বাসায় পড়লে ২ রাক’আত আর মসজিদে পড়লে ৪ রাক’আত পড়েছেন । ১২। ইমামের পিছনে সূরা ফাতিহা পড়া: নামাজের যে সব রাক’আতে ইমাম মনে মনে সূরা ফাতিহা পড়েন, যেমন, যোহর ও ‘আসরের নামাজে এবং মাগরিবের নামাজের তৃতীয় রাক’আতে, মুক্তাদি তথা ইমামের পিছনে যিনি নামাজ পড়ছেন তাকেও অবশ্যই মনে মনে সূরা ফাতিহা পড়তে হবে, নাহলে তার নামাজ হবে না । কিন্তু, যে সব রাক’আতে ইমাম সশব্দে সূরা ফাতিহা পাঠ করেন সেই সব রাক’আতে নিজে সূরা ফাতিহা না পড়ে মনোযোগ দিয়ে ইমামের কিরাআত শুনলেও চলবে। ১৩। ইমামের পিছনে সশব্দে ‘আ-মিন’ বলা: ইমামের সূরা ফাতিহা পাঠ শেষে জাহরী নামাজে (যেমন: মাগরিব, ‘ইশা ও ফজর) মুক্তাদিকে ইমামের সাথে সশব্দে টেনে ‘আ-মীন’ বলতে হবে। সিররি নামাজে (যেমন: যোহর এবং ‘আসর) ইমাম ও মুক্তাদিকে মনে মনে টেনে ‘আ-মীন’ বলতে হবে। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/১৯-০৪-০১৫:
Link copied!