একুশে ডেস্কঃ বন্য প্রাণীর সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার ইতিহাস বিরল। তারপর আবার বিষধর প্রাণীর সঙ্গে বন্ধুত্ব চমকে দেওয়ার মতোই ব্যাপার। তিন বছর সাপের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে চমকে দিয়েছেন রাজবাড়ী জেলার রঞ্জু মল্লিক নামের এক তরুণ।
সাহসী রঞ্জু মল্লিকের আসল নাম মো. রবিউল ইসলাম। তিনি রাজবাড়ী জেলার নবগঠিত উপজেলা কালুখালীর মৃগী ইউনিয়নের কাসাদহ গ্রামের কেসমত আলী মেম্বারের ছেলে।
রঞ্জু মল্লিক কাসাদহ গ্রামে ‘রাজবাড়ী স্নেক ফার্ম’ নামে একটি সাপের খামারও গড়ে তুলেছেন। খামারে গেলে দেখা যায়, ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত খামারটির চারপাশের বিভিন্ন বৃক্ষের গায়ে লেখা- ‘সাপ জাতীয় সম্পদ একে রক্ষা করা আমাদের সবার নৈতিক দায়িত্ব। সাপ হত্যা বন্ধ করুন।’
প্রায় ১ একর জায়গার ওপর স্থাপিত খামারটিতে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৩০টির মতো বিষধর সাপ। এর মধ্যে রাসেল ভাইপার, কমনক্রেট, র্যাট স্নেক, কোবরা নাজা নাজা ও কোবরা নাজা কাউথিয়া নামক সাপগুলো বিষধর।
রঞ্জু মল্লিক জানান, ছোটবেলা থেকেই সাপের প্রতি তার ভালোবাসার টান। তারই বহিঃপ্রকাশ, তার নিজ হাতে গড়া এই সাপের খামার।
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন এই সাপগুলোর যত্নের জন্য প্রায় হাজার টাকা খরচ হয়। সাপের গোসল করানো থেকে শুরু করে খাওয়ানো সবই নিজ হাতে করি। সাপের খাবারের তালিকায় রয়েছে মুরগির বাচ্চা ও ইঁদুর।’
সাপে ছোবল দিলে তখন কী করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সাপে ছোবল দিলে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য একটি নিজস্ব ল্যাব রয়েছে। এখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিলে ৮ ঘণ্টা সময় পাওয়া যাবে। এই সময়ের মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সাপের বিষ সংগ্রহ করে আন্তর্জাতিক বাজারজাতকরণ, পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষা ও জাতীয় সম্পদে সাপকে রূপান্তরিত করাই তার মূল লক্ষ বলে জানান তিনি।
এ সময় তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট কোনো আইন না থাকায় আমি বিষ সংগ্রহ করতে পারছি না। তবে ইতিমধ্যে বিষ সংগ্রহ এবং বাজারজাত করার অনুমতি চেয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে একটি আবেদন করেছি। কিন্তু জেলা প্রশাসনের আওতার বাইরে থাকায় অনুমতি পাচ্ছি না।’
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি বিষ সংগ্রহের অনুমতির জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
রঞ্জু মল্লিকের এই বিষধর সাপের খামার দেখার জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রতিদিন প্রায় শত শত দর্শনার্থী আসে বলে জানান এলাকাবাসী।
একুশে সংবাদ ডটকম/এইচ কে এস/২০.০৪.১৫।
আপনার মতামত লিখুন :