টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র পদে রাবিনা খানকে সমর্থন লুৎফুরের
একুশেসংবাদ : ভোট জালিয়াতিতে পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র পদ হারানো লুৎফুর রহমান এবার ওই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য রাবিনা খান নামে এক বাংলাদেশিকে সমর্থন দিয়েছেন, যিনি লুৎফুরের সময়ের কাউন্সিলর।
আদালতের আদেশে মেয়র পদ হারানোর পাশাপাশি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অযোগ্য হওয়ার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রথম জনসভায় আসেন বিতর্কিত বাংলাদেশি লুৎফুর।
পূর্ব লন্ডনের ওয়াটার লিলি হলে ওই সভায় আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে লড়ার ঘোষণা দিয়ে লুৎফুর বলেন, “আমি হয়তো পড়ে গেছি কিন্তু ভেঙ্গে পড়িনি।”
আগামী ১১ জুন অনুষ্ঠেয় টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাচনে তার সর্মথিত মেয়র প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে তাকে পরিচয় করিয়ে দেন লুৎফুর রহমান।
কাউন্সিলর রাবিনা খান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে লেবার পার্টির প্রার্থী জন বিগসের বিরুদ্ধে লড়বেন।
রাবিনা খান বলেন, “আমার যা কিছু অর্জন তা এই লুৎফুর রহমানের জন্য।”
লুৎফুরের দল টাওয়ার হ্যামলেটস ফার্স্ট পার্টির রেজিস্ট্রেশন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক দল হিসেবে কোনো স্বচ্ছতা না থাকায় গত সপ্তাহে দেওয়া রায়ে এই দলের ব্যাপক সমালোচনা করেন বিচারক।
ইমামদের দিয়ে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিরুদ্ধে বর্ণবিদ্বেষের অপপ্রচার এবং ভোট জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত ২৩ এপ্রিল লুৎফুরকে টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র পদ ছাড়ার নির্দেশ দেয় আদালত।
সেইসঙ্গে তাকে নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণা করে আড়াই লাখ পাউন্ড জরিমানা করা হয়। লুৎফুর রহমানকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।
অনুষ্ঠানে লুৎফুর রহমানের মামলার খরচ যোগানোর জন্য ‘লুৎফুর রহমান লিগ্যাল ফান্ড’ খুলে তহবিল সংগ্রহের ঘোষণা দেওয়া হয়। এজন্য একটি ফরমও বিলি করা হয়।
এদিকে যুক্তরাজ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এরিক পিকলস বুধবার টাওয়ার হ্যামলেটসে আরো দুই জন প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছেন।
সাবেক মেয়র লুৎফুর এবং তার কাউন্সিলরদের কোনো ইমেইল অথবা কাজগপত্র যাতে নষ্ট বা সরানো না হয় সেজন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
গত বছর অনুষ্ঠিত ভোটে দ্বিতীয় মেয়াদে টাওয়ার হ্যামলেটসে মেয়র পদে জয়ী হওয়া লুৎফুরের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ। উগ্র ইসলামী গোষ্ঠীকে মদদ দেওয়ার পাশাপাশি লন্ডনে থাকা একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে।
লুৎফুরকে ভোট না দিলে তা ‘ইসলামবিরোধী’ হবে বলে ২০১৪ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে প্রচার করা হয় বলে আদালতে উঠে আসে।
লুৎফুর মেয়র থাকাকালে টাওয়ার হ্যামলেটসে অনুদান বরাদ্দে ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে বলেও বিচারক উল্লেখ করেন।
অনিয়মের মাধ্যমে নিজের সমর্থকদের সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি নিজের নির্বাচনী প্রচারে লুৎফর কাউন্সিলের অর্থ ব্যয় করেন বলে যুক্তরাজ্যের খ্যাতনামা হিসাব নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান প্রাইস ওয়াটারহাউজ কুপারসের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়।
গত নভেম্বরে ওই নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশের পর মেয়র হিসেবে লুৎফুর রহমানের ক্ষমতা খর্ব করে কাউন্সিলের অনুদানের অর্থ বরাদ্দ ও রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা কেড়ে নেয় সরকার।
আদালতের রায়ে লুৎফুরকে অবিলম্বে আড়াই লাখ পাউন্ড পরিশোধ করতে বলা হলেও তার জরিমানার অঙ্ক ১০ লাখ পাউন্ড হতে পারে বলে গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
একুশেসংবাদ.ডটকম/আর কে/২.৫.১৫
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :