আবারও ফিফা প্রেসিডেন্ট সেপ ব্ল্যাটার
একুশে সংবাদ: দুর্নীতি কেলেঙ্কারিতে কেঁপে উঠল ফিফা। এবার বুঝি যাওয়ার সময় হলো সেপ ব্ল্যাটারের! কিন্তু কোথায় কী! গতকাল ৬৫তম ফিফা কংগ্রেসে চার বছরের জন্য আবারও ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থার প্রধানের চেয়ারে বসলেন ওই ব্ল্যাটারই। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘ডেইলি মেইল’-এর অনলাইন সংস্করণের শিরোনামটা তাই এমন, ‘ব্ল্যাটার ১-০ ফুটবল’!
ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার গায়ে কলঙ্কের কালি। যাঁরা ফিফার দেখভাল করেন, খেলাটির উন্নয়নে যাঁদের নিবেদিত থাকার কথা সব সময়, সেই শীর্ষ কর্তাই কি না গ্রেপ্তার হলেন দুর্নীতির অভিযোগে! জুরিখের বাউর আউ লাক হোটেল থেকে গোটা বিশ্বে কেলেঙ্কারির হোতাদের আটক হওয়ার খবর ছড়িয়ে যেতে সময় লাগল না। গত দুই দিনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ওই ফিফা এবং তার দুর্নীতিগ্রস্ত কর্তাব্যক্তিরা। এ অবস্থায় বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলাটির মধ্যে আরো কত দুর্নীতি জড়িয়ে আছে, সেই হিসাব নেওয়াটাও জরুরি মনে করছেন অনেকে। কেউ কেউ আবার তদন্তের পুরো প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ার আগ পর্যন্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে রাজি নন। নানা মত, ভিন্ন ভাবনা থাকলেও একটা জায়গায় কিন্তু সবার আশঙ্কা অভিন্ন- কী হচ্ছে ফিফায়?
এই অস্থিরতার মধ্যেই গতকাল হয়ে গেল ফিফার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। জুরিখে ফিফা কংগ্রেসে বাতাসে ভেসে বেড়ানো গুঞ্জনটাই হলো সত্যি। আগের দিনই জানা গিয়েছিল পঞ্চম মেয়াদে প্রেসিডেন্টের পদে বসতে যাচ্ছেন ব্ল্যাটার। হলো তা-ই। দ্বিতীয় রাউন্ডে গড়ানো নির্বাচনে জর্দানের প্রিন্স আলী সরে দাঁড়ালে পঞ্চম মেয়াদে ফিফা প্রধান কর্তা নির্বাচিত হন ব্ল্যাটার। আবারও ফিফা প্রেসিডেন্ট সেপ ব্ল্যাটার নিয়ম অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে গেলে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পেতে হবে, অর্থাৎ জিততে গেলে দরকার ১৪০ ভোট। কিন্তু প্রথম রাউন্ডে ব্ল্যাটারের বাক্সে পড়েছিল ১৩৩ ভোট। তাই দ্বিতীয় রাউন্ডে গড়িয়েছিল নির্বাচন, যদিও ৭৩ ভোট পাওয়া প্রিন্স আলী সরে দাঁড়ালে তার আর দরকার পড়েনি। প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর দুর্নীতি হটিয়ে স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য সংস্থা হিসেবে ফিফাকে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি ব্ল্যাটারের, ‘সামনের চার বছরের জন্য ফিফা নামের এই নৌকার নেতা আমি, আমরা সবাই মিলে আবারও এটাকে ডাঙায় তুলব, ফিরিয়ে আনব তীরে।’ দুর্নীতির অন্ধকারে ডুবে যাওয়া ফিফা কর্তাদের সঙ্গে তাঁর নাম উচ্চারিত না হলেও নিজেকে ‘নিখুঁত’ ভাবছেন না এই সুইস, ‘আমি নিখুঁত নই, কেউই তা নয়। তবে আমরা সবাই মিলে ভালো কাজ করব।’ আগেরবারের মতো এবারও মেয়াদ শেষে ফিফা ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন এই বলে, ‘মেয়াদ শেষে ফিফাকে শক্তিশালী একটা জায়গায় নিতে চাই।’
ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ছাড়া বাকি সব অঞ্চলের সমর্থন ছিল ব্ল্যাটারের পক্ষে। ফিফার কেলেঙ্কারি ফাঁসের পরও খুব একটা প্রভাব পড়েনি তাতে। কনকাকাফ অঞ্চল (উত্তর-মধ্য আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান), আফ্রিকা, এশিয়া, লাতিন আমেরিকা, ওশেনিয়া অঞ্চল থেকে পূর্ণ সমর্থন পেয়েছেন ব্ল্যাটার। যাঁর অধীনেই ফিফার দেখভাল করতেন আটক হওয়া কর্তারা। সেই মানুষটি, ফিফার দুর্দিনেও যাঁর মধ্যে ছিল না দুশ্চিন্তার কোনো ছাপ। মিশেল প্লাতিনির দেওয়া পদত্যাগের প্রস্তাবেও দেননি সাড়া।
দেবেন কী করে, ব্ল্যাটারের তো জানাই ছিল, নির্বাচন হলে পঞ্চম মেয়াদে তিনিই বসছেন ফিফাপ্রধানের চেয়ারে। হলোও তা! বিবিসি
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :