AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ইতালীতে সিজনাল জব ভিসায় আবারও কালো তালিকায় বাংলাদেশ


Ekushey Sangbad

০৮:০১ এএম, এপ্রিল ৬, ২০১৪
ইতালীতে সিজনাল জব ভিসায় আবারও কালো তালিকায় বাংলাদেশ

kkkkkkkkএকুশে সংবাদ : ভারত-পাকিস্তান-শ্রীলংকা পারলেও বংলাদেশ পারলো না। ইতালিতে সিজনাল জব ভিসায় বাংলাদেশের কলংক রয়েই গেলো। মৌসুমী কাজের জন্য ইতালি সরকারের ইমিগ্রেশন পলিসিতে পরপর দ্বিতীয় বছরের মতো ‘ব্ল্যাকলিস্ট’এ স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ। কোটাভিত্তিক সিস্টেমেই বাদ পড়েছে বাংলাদেশের নাম। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের ২৩টি দেশ থেকে ১৫ হাজার সিজনাল কর্মী আনা সংক্রান্ত অফিসিয়াল গেজেট এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে প্রকাশ করা হয়েছে। ঘোষিত তালিকায় ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকার নাম থাকলেও বাংলাদেশ নেই। অন্য ২০টি দেশ হচ্ছে আলবেনিয়া, আলজেরিয়া, বসনিয়া হার্জেগোভিনা, মিশর, ফিলিপাইন, গাম্বিয়া, ঘানা, জাপান, কসোভো, মেসিডোনিয়া, মরক্কো, মরিশাস, মলদোভিয়া, মন্টিনিগ্রো, নাইজার, নাইজেরিয়া, সেনেগাল, সার্বিয়া, ইউক্রেন ও তিউনিসিয়া। ৪ এপ্রিল ২০১৪ থেকে চলতি বছরের জন্য অনলাইনে আবেদন করা শুরু হলেও বিগত বছরগুলোতে একশ্রেণির বাংলাদেশি দালালদের জমজমাট আদম ব্যবসা আর বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্বহীনতার খেসারতে গতবারের মতো এবারও আমাদের শুধু তাকিয়ে থাকা ব্যতীত যেন কিছুই করার নেই। ইউরোপজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা, সেই সঙ্গে দেশে দেশে বেকারত্ব সত্ত্বেও ইতালি এমন একটি দেশ, নানান পারিপার্শ্বিক কারণে এখানে গ্রীষ্মকালীন মৌসুমী কাজের জন্য প্রতিবছরই দক্ষ-অদক্ষ হাজার হাজার কর্মীর প্রয়োজন হয়েই থাকে। উত্তরে আল্পস পর্বতমালা থেকে শুরু করে দক্ষিণের সিসিলি দ্বীপ তথা পুরো দেশজুড়ে বিভিন্ন এলাকার কৃষিখামারগুলোতে ব্যাপক ফসলাদি এবং ৩ দিকের বিস্তীর্ণ সমুদ্রসৈকত ও পাহাড়িয়া পর্যটন এলাকাগুলোতে লক্ষ লক্ষ পর্যটকের ভিড় সামাল দিতেই সুনির্দিষ্ট দেশ থেকে সিজনাল ভিসায় কর্মী নিয়ে আসার প্রথা প্রচলিত আছে ইতালীয় সরকারের ইমিগ্রেশন পলিসিতে। মৌসুমের শুরুতে বিভিন্ন দেশ থেকে কর্মীরা আসে ইতালীতে, মৌসুম শেষে ইউরোতে পকেট ভরে ফিরে যায় যার যার দেশে। একবার ফিরে গেলে পরের বার ভিসার ক্ষেত্রে তাদের অগ্রাধিকার দেয় ইতালীয় ইমিগ্রেশন। ব্যতিক্রম শুধু আমাদের বাংলাদেশ। ইতালিতে সিজনাল ভিসা আর বাংলাদেশিদের সুযোগের অপব্যবহারের টোটাল ইস্যুটি বারবার আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় ‘গোল্ডেন এ্যাগ’র সেই মুখরোচক গল্পের কথা। আমরা এতোটাই বীরের জাতি যে, গল্প হয়ে যায় সত্যি। প্রতিদিন একটি করে সোনার ডিমে সন্তুষ্ট হতে পারিনি আমরা। আর পারি নি বলেই আদম ব্যবসার নামে সোনার ডিম দেয়া হাঁসটিকে জবাই দেয়া হয়েছে ইতালিতে। ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে ইতালি সরকার প্রায় ১৮ হাজার বাংলাদেশিকে সিজনাল ভিসা দিলেও তার মধ্য থেকে ফেরত গেছেন মাত্র ৫১ জন। সুযোগসন্ধানী বাংলাদেশিদের অনৈতিক এই অপকর্ম ঠেকাতে ইতালীয় প্রশাসন গতবছর থেকে বাংলাদেশকে অফিসিয়ালি ব্ল্যাকলিস্টভুক্ত করলেও এর আগেই আখের গোছান চিহ্নিত আদম ব্যবসায়ীরা। গ্রামেগঞ্জে অর্থলোভী কিছু ইতালীয়ানের হাত করে প্রফেশনাল আদম ব্যবসায়ী নন এমন কিছু বাংলাদেশিও জনপ্রতি ৫ থেকে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে ৫-১০ জন করে, কেউ কেউ শ’-দেড়শ’ পর্যন্ত লোক সিজনাল ভিসায় এনে রীতিমতো আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যান। গোটা ইতালি জুড়ে কর্মক্ষেত্রে বাংলাদেশিদের আকাশছোঁয়া গুডউইল থাকলেও সিজনাল ভিসা কেলেংকারিতে লাল-সবুজ পতাকার ভাবমূর্তি গত কয়েক বছরে মারাত্মকভাবে বিনষ্ট হয়েছে। ন্যাশনাল ইমিগ্রেশন পলিসিতে কালো তালিকাভুক্ত হবার মধ্য দিয়ে ইতালিতে ইমেজ সংকটে আজ বাংলাদেশ। রোমে দায়িত্বরত রাষ্ট্রদূত শাহাদাত হোসেনের অনুভূতি অবশ্য এক্ষেত্রে একটু ভিন্ন আঙিকের। ২৩ টি দেশের তালিকায় শ্রীলংকা, পাকিস্তান ও ভারতের নাম থাকলেও বাংলাদেশের নাম না থাকার বিষয়টি আমাদের দেশের ভাবমূর্তির সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিনা জানতে চাইলে ৪ এপ্রিল দুপুরে তিনি বলেন, না, বিষয়টিকে আমি ঠিক সেভাবে দেখছি না এবং এই ইস্যুতে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হচ্ছে না। রাষ্ট্রদূত শাহাদাত হোসেন বলেন, সরকারের নির্ধারিত ক্রাইটেরিয়া বাংলাদেশিরা পূরণ করতে পারছে না বলেই এমনটা হচ্ছে। সিজনাল ভিসায় বাংলাদেশিরা ইতালিতে এসে ফেরত না যাবার বিষয়টি অবশ্য স্বীকার করেন রাষ্ট্রদূত। তিনি জানান, বাংলাদেশের জন্য চলমান এই সংকট উত্তরণে তিনি দেশটির উর্ধ্বতন ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহসাই বৈঠক করবেন। সিজনাল ভিসা নির্ভর আদম ব্যবসায় অতীতে কখনোই দূরতম সম্পর্ক ছিলো না, ইতালির বিভিন্ন শহরের বাংলাদেশি এমন বেশ ক’জন কমিউনিটি নেতার সঙ্গেও এই প্রতিবেদকের কথা হয়। ইতালীয় প্রশাসনে বাংলাদেশকে ব্ল্যাকলিস্টেড তথা কালো তালিকাভুক্ত করার বিষয়টিকে তারা গোটা ইতালীর বাংলাদেশ কমিউনিটির জন্য একটি বড় মাপের কলংক হিসেবেই দেখছেন। সরাসরি প্রশ্ন রেখে তারা বলেন, বাংলাদেশ সরকার এবং রোমের বাংলাদেশ দূতাবাসের এক্ষেত্রে দায় এড়াবার কোন সুযোগ আছে কি? দেশে-বিদেশে চিহ্নিত দালালদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে এবং অবৈধ আদম ব্যবসা বন্ধ করতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের অবশ্যই দায়বদ্ধতা রয়েছে। যদিও সম্ভাবনা কম তথাপি আগামীতে যদি বাংলাদেশের কোটা আবার চালু হয়, সেক্ষেত্রে সিজনাল ভিসায় ইতালিতে আসা প্রতিটি বাংলাদেশি সিজন শেষে বাংলাদেশে ফিরে যাবেন এই নিশ্চয়তা অবশ্যই বাংলাদেশ সরকার ও রোমের বাংলাদেশ দূতাবাসকেই দিতে হবে বলে মনে করেন কমিউনিটি নেতারা।
Link copied!