চট্টগ্রামে ৪৫০ কোটি টাকার প্রকল্প
একুশে সংবাদ : জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় নতুন বন সৃজন, বাগান উত্তোলন, বন সংরক্ষণ, কাঠ পাচার প্রতিরোধ এবং বনজীবীদের বিকল্প জীবিকায়নে বিস্তৃত প্রকল্প ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম বন অঞ্চলের আটটি বন বিভাগ।
বনের জমিতে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করে বন সৃজন ও বনের ওপর নির্ভরশীলদের বিকল্প জীবিকায়নে উপকারভোগী হয়েছে চট্টগ্রাম বন অঞ্চলের প্রায় ১০ লাখ দরিদ্র জনগোষ্ঠী।
চট্টগ্রাম বন সার্কেলের উপ-বন সংরক্ষক মোল্লা মো. মিজানুর রহমান জানান, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলে প্রকৃতি ও এই অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় আটটি বন বিভাগে ৪৫০ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।
এর মধ্যে প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধীন রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা বন বিট এলাকায় শেখ রাসেল অ্যাভিয়ারি অ্যান্ড রিক্রিয়েশন পার্কটি (পক্ষীশালা ও বিনোদন কেন্দ্র) উদ্বোধনের পর জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন সার্কেলের অধীন চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগীয় কর্মকর্তা রকিবুল হাসান মুকুল জানান, প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ, সংরক্ষিত বনের সর্বোচ্চ সুরক্ষা এবং ন্যাড়া পাহাড় বনায়নে ব্যাপকভিত্তিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বন বিভাগের এই কার্যক্রমে সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, মিরসরাই, হাটহাজারী, রাউজান, ফটিকছড়ি, রাঙ্গুনিয়ার প্রায় ১২ হাজার উপকারভোগী সম্পৃক্ত হয়েছেন।
এ ছাড়া কাঠ পাচার বন্ধে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের সদর রেঞ্জের তত্ত্বাবধানে গঠন করা হয়েছে স্পেশাল ভিজিল্যান্স টিম। গত ছয় মাসে স্পেশাল ভিজিল্যান্স টিম এবং উত্তর বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অভিযান চালিয়ে প্রায় ৩০ হাজার ঘনফুট বিভিন্ন প্রজাতির অবৈধ কাঠ আটক করতে সক্ষম হয়েছেন।
চট্টগ্রাম বন সার্কেলের দক্ষিণ বন বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) বিপুল কৃষ্ণ দাশ জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলার উদ্দেশ্যে ৯২৬ হেক্টর বিভিন্ন প্রজাতির সমন্বয়ে বাগান উত্তোলন করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগীয় কর্মকর্তা আরএসএম মুনিরুল ইসলাম জানান, উপকূলীয় এলাকার জনগোষ্ঠীকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে প্রকৃতির বেষ্টনীর মাধ্যমে সর্বোচ্চ সুরক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, মিরসরাই, কক্সবাজার, টেকনাফ, কুতুবদিয়া, মহেশখালী প্রভৃতি উপজেলায় সমুদ্র উপকূলে এবং জেগে ওঠা চরের প্রায় ৫ হাজার একর নতুন বন সৃজন করা হয়েছে। এ ছাড়া ৫৪ হাজার একর বন এলাকা সংরক্ষিত বন ঘোষণার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
এসব বিষয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) আকবর হোসেন জানান, বন বিভাগ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সাধারণ জনগোষ্ঠীকে সরাসরি সম্পৃক্ত করে বনজসম্পদের সংরক্ষণে কাজ করছে। শুধু বন সংরক্ষণই নয়, এর পাশাপাশি প্রকৃতি, জীববৈচিত্র্য, ইকো ট্যুরিজম ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণে চট্টগ্রাম বন অঞ্চলের ভূমিকা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
এ ছাড়া বন বিভাগের সকল রেঞ্জ, বিট, স্টেশন, ক্যাম্পসমূহের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ডিজিটাল ডাটাবেইসের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এতে বন বিভাগের কার্যক্রম, পরিবেশ ও বন সংরক্ষণে আরো বেশি স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা তৈরি হয়েছে।
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :