মেহেরপুরে রাস্তায় পেঁয়াজ ফেলে চাষিদের বিক্ষোভ
একুশে সংবাদ : এবার পেঁয়াজের ন্যায্য দাম না পেয়ে মেহেরপুরের চাষিরা রাস্তায় শত শত মণ পেঁয়াজ ফেলে নষ্ট করে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেছেন। এর আগে একই দাবিতে মুন্সিগঞ্জে নদীতে আলু ফেলে প্রতিবাদ জানান চাষিরা।
আজ শুক্রবার মেহেরপুর শহরের কয়েকটি সড়কে পেঁয়াজ ফেলে চাষিরা এ বিক্ষোভ করেন। এ সময় চাষিরা স্লোগান দেন, ‘পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ কর। পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্য দিতে হবে। চাষির লোকসান কমাতে হবে।’
পেঁয়াজচাষিদের অভিযোগ, দেশে এবার পেঁয়াজের পর্যাপ্ত উত্পাদন হয়েছে। তা সত্ত্বেও ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির ঘোষণা দেওয়ায় চাষিদের লাখ লাখ টাকা লোকসান গুনে পুঁজি হারাতে হয়েছে।
সদর উপজেলার আশরাফপুর গ্রামের পেঁয়াজচাষি আবদুর রাজ্জাক জানান, গতবার পেঁয়াজে লাভ হওয়ায় এবার তিনি ২৬ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেন। কিন্তু ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হওয়ায় তাঁর আড়াই লাখ টাকা লোকসান হয়েছে।
আমদাহ গ্রামের আহসান হাবিব এ বছর ৪২ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ উত্পাদন করেছেন। তিনি জানান, প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজ উত্পাদনে ব্যয় হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। অথচ বাজার দর অনুযায়ী বিক্রি করে আয় হয়েছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। অর্থাত্ প্রতি বিঘা পেঁয়াজে চাষিকে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।
মুজিবনগর উপজেলার চাষি সাহাদ খাঁ জানান, গতবার এই সময়ে বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দর ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। দেড় মাস আগেও ১০০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। অথচ এখন এক মণ পেঁয়াজ ৩০০ টাকা দরেও বিক্রি হচ্ছে না। এর ফলে জমি থেকে পেঁয়াজ উত্তোলনের খরচও তুলতে পারছেন না তাঁরা।
চাষিদের অভিযোগ, উত্পাদনের আগে সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির ঘোষণা দিলে চাষিদের এত লোকসান গুনতে হতো না।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক চৈতন্য কুমার দাস প্রথম আলোকে বলেন, মেহেরপুর জেলায় এবার এক হাজার ৭০০ একর জমিতে পেঁয়াজ উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সেখানে পেঁয়াজ উত্পাদন হয়েছে দুই হাজার একর জমিতে। তিনি জানান, বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার পর সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির ঘোষণা দেয়। তিনি বলেন, মেহেরপুরের বাজারে বর্তমানে পাইকারি ১০ থেকে ১২ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। এতে চাষির লাভ কম হলেও লোকসান হওয়ার কথা নয়।
একুশে সংবাদ ডটকম/প্রতিনিধি/এমকেএইচ/১১-০৪-০১৪:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :