AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

প্রধানমন্ত্রিত্ব কি মমতাকে হাতছানি দিচ্ছে


Ekushey Sangbad

০৯:৩২ এএম, এপ্রিল ১২, ২০১৪
প্রধানমন্ত্রিত্ব কি মমতাকে হাতছানি দিচ্ছে

একুশে সংবাদ : ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কোন দল কত আসন পাবে, তা নিয়ে রয়েছে নানা মুনির নানা মত। অনেকেই বলছেন, নিশ্চিতভাবেই ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। কারো কারো অভিমত, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোটের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া যায় না। আবার কেউ কেউ বলছেন, আঞ্চলিক শক্তিগুলোই এবার কেন্দ্রে সরকার গড়ার ব্যাপারে নির্ণায়ক শক্তি হয়ে উঠবে, যেখানে ছড়ি ঘোরানোর মতো ক্ষমতা থাকবে তৃণমূল কংগ্রেস, এআইএডিএমকের মতো আঞ্চলিক দলগুলোর। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, কোনো দলই এ ব্যাপারে ১০০ ভাগ নিশ্চিত হয়ে বলতে পারছে না যে, তারাই আগামীবার সরকার গঠন করবে। এর কারণ, বৈচিত্র্যময় ভারতে গণতন্ত্রের রূপও হামেশাই বদলায়। দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেভাবে বদলাচ্ছে, তাতে আগামী ষোড়শ লোকসভার রূপ কী হবে, তা নিয়ে নানা মত দেখা দিয়েছে। বেশ কয়েকটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে, একক বৃহত্তম দল হয়ে উঠতে পারে ‘সাম্প্রদায়িক’ রাজনীতি করা বিজেপি। তবে সরকার গড়ার মতো প্রয়োজনীয় সংসদ সদস্যের সমর্থন নরেন্দ্র মোদিদের হাতে থাকবে কিনা, তা নিয়ে অবশ্য যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। অনেকের আশঙ্কা, কংগ্রেস বা বিজেপি যদি সরকার গড়ার মতো অবস্থায় না থাকে, তাহলে কেন্দ্রে ফের ১৯৯৬ সালের মতো ত্রিশঙ্কু লোকসভা হতে পারে। বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি অবশ্য এমন সম্ভাবনা সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন। তার অভিমত, আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে বিজেপি একক বৃহত্তম দল হিসেবেই আত্মপ্রকাশ করবে। এমনকি এবার তাদের আসনসংখ্যা আগের সব সাফল্যকে ছাড়িয়ে যাবে বলেও মনে করেন তিনি। এদিকে এবিপি আনন্দ— এসি নিয়েলসনের একটি সমীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে সম্প্রতি। সেখানে বলা হয়েছে, বিজেপি পেতে পারে ২১৭টি আসন। জোট হিসেবে এনডিএ পেতে পারে ২৩৬টি আসন। অন্যদিকে কংগ্রেসের পক্ষে আসন্ন নির্বাচনের ছবিটা যথেষ্ট করুণ। ওই সমীক্ষার মতে, কংগ্রেসের আসনসংখ্যা কমে হতে পারে ৭৩টি, যা কেন্দ্রের প্রধান শাসকদলের পক্ষে যথেষ্ট বিড়ম্বনার। ইউপিএ পেতে পারে ৯২টি আসন। কংগ্রেসের যে এমন অবস্থা হবে, সেটি জানিয়েছেন আদভানি নিজেও। তার মতে, কংগ্রেসের অপশাসনই এর জন্য দায়ী। স্বাধীনতার পর থেকে দলটির এর চেয়ে খারাপ পরিস্থিতি অতীতে কোনো দিনই হয়নি। আদভানির সাফ কথা, কংগ্রেস যেভাবে দুর্নীতি, ও অপশাসনের নজির গড়েছে, তাতে তাদের পক্ষে ফের সরকার গঠনের মতো জায়গায় যাওয়া কিছুতেই সম্ভব নয়। কিন্তু আদভানি যতই বুলি কপচান— আগামীবার ত্রিশঙ্কু লোকসভা হবে না, সমীক্ষার ফল বলছে ভিন্ন কথা। এবিপি আনন্দ— এসি নিয়েলসনের সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ১৮৬টি আসন পেতে পারে আঞ্চলিক দলগুলো। যাতে তৃণমূল পেতে পারে ২৯টি আসন। বামরাও পেতে পারে ২৯টি আসন, যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গেই তারা পেতে পারে ১০টি। এর মানে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার মতো লোকসভায়ও চমক দেখাবে মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল কংগ্রেস। তিনি নিজেই জানিয়েছেন, আগামীবার তারাই কেন্দ্রের নির্ণায়ক শক্তি হয়ে উঠবেন। মাস চারেক আগে টাইমস নাও, সি-ভোটার ও ইন্ডিয়া টিভি তাদের যৌথ প্রাক-নির্বাচনী জরিপ শেষে অনেকটা একই কথা বলেছিল। বলা হয়েছিল, বর্তমান পরিস্থিতি বহাল থাকলে আসছে লোকসভা নির্বাচনে একক বৃহত্তম দল হিসেবে আবির্ভূত হবে বিজেপি। তাদের জোট এনডিএ ক্ষমতাসীন ইউপিএর চেয়ে কিছু আসন বেশি পাবে আর প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের কাছে রাহুল গান্ধী কিংবা অন্যদের চেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য। তাই বলে তার জনপ্রিয়তা আসন বাড়ানোর ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে না, অন্তত এ মুহূর্তে নির্বাচন হলে। জরিপের ফলাফল দেখে ইউপিএ ও এনডিএ উভয়ই চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল। কারণ এতে দেখা গিয়েছিল, এ মুহূর্তে নির্বাচন হলে ইউপিএ ও এনডিএর বাইরের দলগুলো সব মিলিয়ে ২৫৩টির মতো আসন পাবে। যারা ২০০৯ সালে পেয়েছিল ১৮৪টি আসন। এ জরিপের আরেকটি লক্ষণীয় দিক হলো, বলা হয়েছিল, প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন ঘটলে মূল দুই জোটের যেকোনো একটির আসন দাঁড়াতে পারে সর্বোচ্চ ২৫০। কিন্তু সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য প্রয়োজন পড়বে ২৭২টি। কারণ নির্বাচন হতে যাচ্ছে দুটি বাদে ৫৪৩টি আসনে। তার মানে তখন তিনটি সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। এক. তৃতীয় ফ্রন্ট কিংবা ফেডারেল উত্থিত হতে পারে। দুই. কংগ্রেস তাদের ইউপিএ নামক ছাতার তলে ছোটখাটো কয়েকটি দলকে ভিড়িয়ে ফের সরকার গঠনের উদ্যোগ নিতে পারে। তিন. বিজেপিকে ঠেকাতে তৃতীয় কিংবা ফেডারেল ফ্রন্টকে সরকার গঠনের জন্য সমর্থন দিতে পারে কংগ্রেস। তবে সব ক্ষেত্রেই তখন সরকার হবে খুব দুর্বল। এ কথা সবারই জানা, বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটে উল্লেখযোগ্য নতুন কোনো দলের যোগ দেয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। এরই মধ্যে সাতটি আঞ্চলিক ও চারটি বামপন্থী দল মিলে তৃতীয় ফ্রন্ট ঘোষণা করেছে। এ জোটের উল্লেখযোগ্য নেতা হলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমার, উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী নভিন পাটনায়েক ও ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেব গৌড়া। এসব রাজনীতিক যার যার অঞ্চলে ব্যাপক জনপ্রিয় হলেও ভারতজুড়ে তাদের প্রভাবের বিষয়টি এখনো অস্পষ্ট। তাদের জোট জাতীয় পর্যায়ে সফলতার মুখ দেখে কিনা, সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। তাদের মধ্যে এআইডিএমকে নেত্রী জয়ললিতা জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার খায়েশ। নির্বাচনে মমতার দল তৃণমূল কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গের ৪২টির মধ্যে ৩০টি আসন পেলেই তাকে ক্ষমতা থেকে দূরে ঠেলার সাহস পাবে না কেউ। বিনয়ের কারণে মুখে না বললেও তিনি নিজেকে সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিবেচনা করছেন, বিষয়টি বুঝতে কারোরই বাকি নেই। ১৮ বছর আগে যা হেলায় হারিয়েছিল বাঙালি, তা নিয়ে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আক্ষেপ ছিল পশ্চিমবঙ্গের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর। পার্টির নির্দেশে ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়া ভাগ্যে জোটেনি জ্যোতি বাবুর। সেই ‘ঐতিহাসিক ভুল’-এর পুনরাবৃত্তি না হয়, সেদিকেই নজর এখন তৃণমূল নেতাদের। দলের নেত্রী মমতা ব্যানার্জিকে প্রধানমন্ত্রী পদের যোগ্য দাবিদার বলে আগেই সার্টিফিকেট দিয়েছেন রালেগাঁও সিন্ধির বর্ষীয়ান সমাজকর্মী আন্না হাজারে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে যার অবস্থান খুবই কঠোর। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, দিল্লির দরবারে এতদিন সর্বভারতীয় মুখ ছিলেন মাত্র দুজন। একজন অবশ্যই জ্যোতি বসু। অন্যজন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। মমতা ব্যানার্জি দীর্ঘদিন কেন্দ্রে মন্ত্রিত্ব করেছেন। কিন্তু তার নজর সীমাবদ্ধ ছিল মূলত বাংলায়ই। এমনকি এনডিএ ও দ্বিতীয় ইউপিএ জমানায় রেলমন্ত্রী হয়ে বাংলার মধ্যেই নিজেকে আবদ্ধ রাখেন মমতা। ফলে সর্বভারতীয় মুখ বলতে যা বোঝায়, সেটি কোনো দিনও ছিল না তৃণমূল নেত্রীর। বিশ্লেষকদের মতে, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও একটি রাজ্যের প্রতিনিধি। কিন্তু তাকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করে যে নিরন্তর প্রচার চালাচ্ছে বিজেপি তথা সংঘশিবির, তাতে এরই মধ্যে সর্বভারতীয় পরিচিতি পেয়ে গেছেন। অন্যদিকে আন্নার সঙ্গে যৌথ আন্দোলন করে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের প্রচারমাধ্যমের নজরে আসা এবং অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বনে যাওয়াটা ভারতীয় রাজনীতিতে রীতিমতো ঝড় তুলছে। আম আদমি পার্টির এ নেতাও এখন সর্বভারতীয় নেতা। দেশজুড়ে প্রচার চালাচ্ছেন তিনি। মোদি-কেজরিওয়ালের পাশাপাশি রাহুল গান্ধীও দেশে প্রচারের ঝড় তুলেছেন। কিন্তু আক্ষরিক অর্থে কোনো অকংগ্রেসি বা অবিজেপি নেতা সর্বভারতীয় প্রেক্ষাপটে প্রচারে সেভাবে ঝড় তুলতে সক্ষম হননি। এই শূন্যস্থান দেরিতে হলেও খুব দ্রুত ভরাট করতে মরিয়া মমতা। দিল্লির পাশাপাশি গুজরাট, হরিয়ানা, ত্রিপুরা ও ঝাড়খণ্ডেও প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। লক্ষ্য একটাই, বাংলার পাশাপাশি বাইরেও প্রভাব বিস্তার করা। অবশ্য শুধু প্রভাব বিস্তার করা বললে ভুল হবে। পশ্চিমবঙ্গের ৪২ আসনের মধ্যে অন্তত ৩০টির ব্যাপারে তারা আশাবাদী। বাইরের রাজ্যগুলো থেকে যদি কিছু আসে, তা-ই বোনাস। এতে জাতীয় রাজনীতিতে তাদের কদর আরো বাড়বে। নরেন্দ্র মোদিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে মমতা ব্যানার্জি জানিয়ে রেখেছেন, তার উন্নয়ন মডেল গুজরাটের উন্নয়ন মডেলের চেয়ে ঢের ভালো। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, মোদির সঙ্গে তুলনা করে কার্যত গোটা দেশের বিকাশের স্বার্থে নিজেকে তার বিকল্প হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এগোচ্ছেন সৎ এবং দুর্নীতি ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত ইমেজ নিয়ে। দিল্লি জামে মসজিদের শাহি ইমাম মওলানা সৈয়দ আহমেদ বুখারিও এ নির্বাচনে মমতাকে সমর্থন করছেন। একুশে সংবাদ/এমপি
Link copied!