সেতু আছে, নদী নেই
একুশে সংবাদ : দিনাজপুর পুনর্ভবা নদীর তীরে অবস্থিত। একসময় দিনাজপুরে নদীপথে ব্যবসার জন্য বণিকরা আসতেন। এখন কালের বির্বতনে হারিয়ে গেছে সেসব।
শুধু পুনর্ভবা নয়, দিনাজপুরের খরস্রোতা ছোট-বড় অনেক নদীই এখন শুধু বালুচর। কোথাও বা খেলার মাঠ। ফলে বিলীন হতে চলেছে নদীগুলোর অস্তিত্ব।
হাজার-কোটি টাকার সেতু দাঁড়িয়ে থাকলেও নিচ দিয়ে হেঁটেই পার হচ্ছে মানুষ, গরু-ছাগল। বর্ষা মৌসুমে নদীর ওপরে আড়াআড়ি দাঁড়িয়ে থাকা সেতু জানান দেয় নিচে নদীর অবস্থান। নদীগুলোর নাব্যতা ধরে রাখতে ডেজিং জরুরি হয়ে পড়লেও এ ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
দিনাজপুর পানি উন্নয়ন সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ১৯টি নদীর দৈর্ঘ্য ৭২৮ কিলোমিটার। নদীগুলো উৎসস্থল হিমালয় পর্বত। কালের বিবর্তনে ও নদী-সংস্কারের অভাবে পুনর্ভবা, করতোয়া, আত্রাই, ঢেপা, গর্ভেশ্বরী, তুলাই, কাঁকড়া, ইছামতী, ছোট যমুনা, তুলসীগঙ্গা, টাঙ্গন নদীগুলো এখন পরিণত হয়েছে ধু-ধু বালুচরে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, উজানে ভারত সরকার বিভিন্ন উপায়ে নদী শাসন করায় বাংলাদেশ অংশের নদীগুলোতে পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
এ ছাড়া নদীগুলোর খননকাজ না করায় দিন দিন ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানিপ্রবাহের গতি-প্রকৃতির বদলে যাচ্ছে। নদীগুলোর নাব্যতা হারানোর কারণে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিতে নদী ভরাট হয়ে দুই কূলের নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়। এতে প্রায় দেড় লাখ জমির ফসল নষ্ট হয়ে যায়।
মৎস্যজীবী সুরুজ মিয়া জানান, নদীগুলো ঘিরে প্রায় দিনাজপুরে ২৫ হাজার পরিবার জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে। নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় মাছশিকার কমে গেছে। বেকার হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মৎস্যজীবী।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দিনাজপুর সদর, ফুলবাড়ী, পার্বতীপুর, কাহারোল, বীরগঞ্জ, বিরামপুর, নবাবগঞ্জ, চিরিরবন্দর, উপজেলার পূর্ব-পশ্চিম পাশ দিয়ে প্রবাহিত পুনর্ভবা, আত্রাই, গর্ভেশ্বরী ও ইছামতী নদী কোনোরকমে চেনা গেলেও বাকিগুলো খালে পরিণত হয়ে গেছে।
এই সুযোগে একটি মহল নদীর দুই পাড় দখল করে ইমারত নির্মাণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এতে পরবর্তী সময়ে নদীগুলোতে ডেজিং করার পথও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
সদরের পুনর্ভবা নদীর মাজাডাঙ্গা থেকে কামদেবপুর পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার নদীর পাড় এখন প্রভাবশালীদের দখলে।
একুশে সংবাদ ডটকম/এমপি/১৬-০৪-১৪
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :