ঝুকিপূর্ন সৈমুদ্র সৈকত
একুশে সংবাদ : সেন্ট মার্টিনসহ পর্যটননগরী কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে সাগরের টানে ভেসে পর্যটকের মৃত্যুর হার দিন দিন বাড়ছে। স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা লাইফ গার্ডগুলোর হিসাব অনুযায়ী গত ১৬ বছরে কক্সবাজারের বিভিন্ন পয়েন্টে মারা গেছেন ৮৫ জনেরও বেশি মানুষ যাদের বেশির ভাগই তরুণ শিক্ষার্থী।
এদের মধ্যে ক্লোজআপ ওয়ান সংগীত তারকা আবিদও রয়েছে। সর্বশেষ আহছান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় ও প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী- চলতি বছরের সাড়ে চার মাসে প্রাণ গেছে এ সাতজনের।
বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার ও প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনের দক্ষিণ সৈকতে বেশ কয়েকটি পয়েন্টে রয়েছে চোরাবালি আর সৈকতসংলগ্ন সমুদ্রে রয়েছে মারাৎদক ঘূর্ণিস্রোত। আসলে এগুলো হলো মরণফাঁদ। এতে পড়ে প্রায় সময়ই মারা পড়ছেন বহু পর্যটক। একদিকে বেশ কয়েকটি পয়েন্টে নেই ‘বিপদ সংকেত চিহ্ন’ অথবা থাকলেও তা মানছেন না কেউ। অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ব্যাপক গাফিলতি রয়েছে বলে মনে করছেন পর্যটনসংশ্লিষ্টরা। চোরাবালির তথ্য সত্য নয় বলে দাবি করেন হোটেল-মোটেল মালিকরা।
পর্যটক রক্ষাকর্মীরা অভিযোগ করেন, সমুদ্রে নামার সাংকেতিক চিহ্ন ও নিষেধাজ্ঞা না মানার কারণেই বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটছে। তারা আরও জানান, কোনো পর্যটক রক্ষাকর্মী না থাকায় দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন পর্যটকদের জন্য দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।
এদিকে সেন্ট মার্টিনের সমুদ্রতীরে সতর্কতামূলক কার্যক্রম নেওয়ার ক্ষেত্রে বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব পালনে কোনো ধরনের অবহেলা ছিল কি না, তা শুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখতে পর্যটন কর্পোরেশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের একজন মহাব্যবস্থাপক ঘটনাস্থল পরিদর্শনে সেন্ট মার্টিন গেছেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি
দুর্ঘটনাস্থল সৈকত পয়েন্টের আশপাশ ঘুরে দেখেন এবং সেখানে জনসচেতনতামূলক কী ধরনের কার্যক্রম ছিল এবং আছে সে বিষয়ে খোঁজখবর নেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
তবে সচেতন মহল মনে করছে, কক্সবাজার বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির চরম উদাসীনতাই এসব নির্মম মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হতে পারে। অভিযোগ আছে, প্রতি মাসে বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভা হলেও সে কমিটির সব সিদ্ধান্ত শুধু কাগজ-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রুহুল আমিন ঢাকারিপোর্টটোয়েন্টিফোর .কমকে বলেন, ‘বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটিকে নিয়ে শীঘ্রই আমরা বসার উদ্যোগ নিচ্ছি। পাশাপাশি পর্যটকদের মাঝেও সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড আরও ত্বরান্বিত করা হবে।’
কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার ঢাকারিপোর্টটোয়েন্টিফোর .কমকে জানিয়েছেন, আসলে কক্সবাজার সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে চোরাবালি বা গুপ্ত খাল আছে বলে যে কথা বলা হচ্ছে, তা প্রমাণিত সত্য নয়। কোনো বিশেষজ্ঞও ইতোমধ্যে এর পক্ষে রায় দেননি। পর্যটকরা সাঁতার না জানায় এবং নিষেধাজ্ঞা না মানায় মারা পড়ছেন।
কক্সবাজার বিচ পুলিশের ইনচার্জ জাকির হোসেন মাহমুদ ঢাকারিপোর্টটোয়েন্টিফোর .কমকে জানিয়েছেন, সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ট্যুরিস্ট পুলিশের পাহারা নিশ্চিত করা হয়েছে। যে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে লাইফ গার্ডের পাশাপাশি পুলিশও নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে।
একুশে সংবাদ ডটকম/এমপি/২১-০৪-১৪
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :