AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

নিত্য দ্রব্যমূল্যের দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণহীন


Ekushey Sangbad

০৫:১৫ এএম, জুলাই ১৯, ২০১৪
নিত্য দ্রব্যমূল্যের দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণহীন

একুশে সংবাদ : চাহিদা এবং সরবরাহে সমন্বয় আর ক্রয়ক্ষমতার মেলবন্ধনে দ্রব্যমূল্য পায় মর্যাদা আর আবেগ। চাহিদাকে আমলে নিয়ে সরবরাহকে সবল রাখতে এবং ক্রয়ক্ষমতাকে সুষম পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারলে বাজার ব্যবস্থাপনায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে দ্রব্যমূল্য নীতিও নিয়ন্ত্রণের আওতায় চলে আসে। চাহিদা, সরবরাহ, ক্রয়ক্ষমতা ইত্যাদি নজরদারিতে থাকলে বা রাখতে পারলে দ্রব্যমূল্য মাত্রা যথা সম্ভব স্থিতিশীল হতে পারে। বলা বাহুল্য, বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি নীতি-নিয়মের মধ্যে রাখা বা নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে বা বিষয়ে কোনো কার্যকর পদ্ধতি বা ব্যবস্থা যে সফল অবস্থায় নেই। যদিও মহামহিম দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার তথা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং এফবিসিসিআইসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বেশ কিছু উদ্যোগ কিংবা পদক্ষেপ প্রয়োজনীয় সময়ে গ্রহণ করার ঘোষণা মিডিয়ায় প্রকাশ পায়। মাহে রমজানে দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি একটি ঐতিহাসিক অভ্যাস ও ব্যবস্থায় পরিণত হয়েছে। রোজা শুরু হওয়ার মাস দুই আগে থেকেই সরকার টিসিবির মাধ্যমে বিশেষ কয়েকটি আইটেমের বিকল্প আমদানির ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা করে থাকে। বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গেও চলে সংলাপ। তথাপি রমজানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি তার চিরাচরিত স্বভাব ও গতিতে অব্যাহত থাকে। এবার এটি এমন পর্যায়ে পেঁৗছেছে যে, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন স্বয়ং এফবিসিসিআইকে শুধু বেগুনের মতো একটি আইটেমের মেগা দর বৃদ্ধির বিরুদ্ধে কমিটি গঠন করে জিহাদে নামতে হয়েছে। রোজার সময় ছোলা, ডাল, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, বেগুন ইত্যাদি কম গুরুত্বপূর্ণ পণ্য অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে হঠাৎ করে যেন জাতীয় চরিত্রে পরিণত হয়। সম্প্রতি একইসঙ্গে জালনোটের আশঙ্কা, ভেজালের ভয়, ফরমালিনের অগ্রযাত্রা এবং সেই ফরমালিন নিয়ন্ত্রণে গৃহীত ব্যবস্থাদি ব্যবসা-বাণিজ্য তথা জনস্বাস্থ্য ও সুস্থতাকেও এ রমজান মাসে রীতিমতো নানা চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। একদিকে চাল, চিনি, মাছ, গোশত, ভোজ্যতেল আর সবজি এবং অন্যদিকে ছোলা, ডাল, পেঁয়াজ এমনকি কাঁচামরিচের মতো অভাজন আইটেমের অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির কারণ নিহিত এসব সামগ্রীর সরবরাহের তুলনায় অস্বাভাবিক চাহিদা বৃদ্ধি। ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে না থাকায় কোনো কোনো ক্রেতা হয়তো এসব সামগ্রী ক্রয়ে হিমশিম খান। কিন্তু অস্বাভাবিক অর্থ উপার্জনকারীর কাছে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সত্ত্বেও এসব তোয়াক্কা না করে তারা যত দাম হোক তা ক্রয়ে সক্ষমতা রাখেন, পারেন বা বাহুল্য ব্যয়ে তারা ক্লান্তি বোধ করেন না। তাদের জন্য দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি অনুপ্রাণিত হয়ে থাকে। ক্রেতা বা ভোক্তার চাহিদা পূরণে ক্রয়ক্ষমতার ক্ষেত্রে তাদের বৈষম্যমূলক আয় এবং অর্থনৈতিক অবস্থানগত কারণে ক্রয়ক্ষমতায় অসামঞ্জস্য দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির একটি শাস্ত্রগত কারণ। অবস্থা যদি এমন হতো যে, দাম বাড়ার কারণে সব ভোক্তা ওই সামগ্রী ক্রয়ে একসঙ্গে বিরত থাকতে পারেন তাহলে সহসা সার্বিক চাহিদা কমে পচনশীল এসব সামগ্রীর দাম পড়ে যেত। কিন্তু তা তো হওয়ার নয়। কেননা সে ক্ষেত্রে উৎপাদন এবং এর বিপণন পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট সবাই ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে সরবরাহ চেইনে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। অর্থনীতি এভাবে চলতে পারে না। উঁচু দামে কেনার মানুষ আছে বলেই উঁচু দাম হাঁকা হয় আর এ পর্যায়ে স্থির কিংবা সীমিত আয়ের মানুষকে দ্রব্যমূল্যের উল্লম্ফন নৃত্যে ত্রাহি মধুসূদন অবস্থায় পড়তে হয়। বোঝার বাকি থাকে না এমতাবস্থায় চাহিদা ও সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক ধর্মবিচ্যুত হয়ে হলাহলপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করে গোটা অর্থনীতির জন্যই। মানুষের মধ্যে অস্বাভাবিক অতিরিক্ত চাহিদা সৃষ্টি হয় বিশেষ বিশেষ সময়ের মানসিক প্রয়োজনে এবং সে প্রয়োজন মেটাতে অসমভাবে ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে, ক্রয়ের সক্ষমতা সব পর্যায়ে সমানভাবে বৃদ্ধি না পেলে মূল্যস্ফীতি লাগামহীন ও নিয়ন্ত্রণ অযোগ্য হয়ে পড়ে। মাহে রমজান সংযম ও আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে ন্যায়-নীতি-নিষ্ঠা অবলম্বনের মাস। এ মাসে দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি মূলত রোজা পালনের তাৎপর্যকেই মূল্যবোধহীন করে ফেলে। শুধু ইসলাম কেন কোনো ধর্ম বা শাস্ত্রে অপচয়-অপব্যয়, অস্বাভাবিক দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির মতো অন্যায় আচরণ এবং তদুদ্দেশ্যে মুনাফাখোরি, মজুদদারিজাতীয় কার্যকলাপ সমর্থন করে না। পণ্যদ্রব্যে ভেজাল, মজুদদারি, মুনাফাখোরি এবং অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধে এ ব্যাপারে ধর্মমত নির্বিশেষে সবার অবস্থান স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন। এর বিপরীতে দেখা যায় দেশে এখন খাদ্যপণ্যসহ বিভিন্ন পণ্যে ভেজাল একটি সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। একটি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকীয় স্তম্ভে সম্প্রতি বলা হয়েছে, 'খাদ্যপণ্যে ফরমালিনসহ ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার এমনই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে যে, বিষাক্ত রাসায়নিক নেই এমন ফল পাওয়া একেবারেই কঠিন। অতি সম্প্রতি ফরমালিনের বিরুদ্ধে জোরেশোরে অভিযান চললেও পরিস্থিতির আশাজাগানিয়া কোনো উন্নতি ঘটেছে তা বলার অবকাশ নেই। কারণ ফরমালিন ব্যবহারকারীরা আপাতত পিছু হটলেও খাদ্যদ্রব্যে অন্যান্য বিষাক্ত রাসায়নিকের ব্যবহার সমানে চলছে।' এবারের মাহে রমজানে খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল ও ফরমালিন বা বিষাক্ত রাসায়নিকের ব্যবহার এবং শেষমেশ তা নিয়ন্ত্রণে উদ্ভূত পরিস্থিতি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বাংলাদেশে রমজানে দ্রব্যমূল্যের অহেতুক বৃদ্ধি অধিক মুনাফা অর্জনের অসৎ মানসিকতাপ্রসূত এক ধরনের 'জুলুম' বলে অভিহিত করা যায়। পণ্যে ভেজাল দেয়া বা ফরমালিনসহ ক্ষতিকর রাসায়নিক মেশানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং অন্যায় জেনেও যে পরিবেশ ও আর্থপ্রশাসনিক ব্যবস্থায় এটা ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে থাকে, সেখানে এসবের দায়ভাগ কেউ এড়াতে পারে না। এসব অন্যায়-অনিয়মের উৎসমুখে প্রতিরোধে না গিয়ে অন্যায়-অনিয়ম সংঘটিত হওয়ার পর তা নিয়ন্ত্রণের মহড়া যুক্তিযুক্ত ও কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে প্রতিভাত হতে পারে না। যেমন দুর্নীতি দমনের কাজ দুর্নীতি হওয়ার পর শুরু করা মানে নিহত ব্যক্তির পোস্টমর্টেম করা মাত্র। ক্ষতি যা হওয়ার তা হওয়ার পর দুঃখ ও বেদনার চৌহদ্দি নির্ণয়। সহানুভূতি ও সহমর্মিতার মাস মাহে রমজানে যেখানে একজন আরেকজনের প্রতি সহানুভূতিশীল ও সহমর্মী হওয়ার কথা, সেখানে নকল, ভেজাল এবং অহেতুক দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রবণতা আত্মপ্রবঞ্চনামূলক ও আত্মঘাতী হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। এসবের অবসানে সমস্যার মূল উৎস থেকে জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি উঠে আসে। সমস্যার গভীরে না গিয়ে প্রতিবিধানের বিষয়টি পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সুযোগ অব্যাহত থাকলে অবস্থা দিন দিন খারাপই হতে বাধ্য। পত্রিকাটির সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়েছে, 'বাংলাদেশ শুধু শতকরা নব্বই ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত আবাসস্থল নয়, এ দেশের মানুষ ধর্মভীরু হিসেবেও পরিচিত। ধর্মীয় অনুশাসনে নকল, ভেজাল এবং মজুদদারি, মুনাফাখোরিকে চরমভাবে ধিক্কার দেয়া হলেও এসব দৈত্য পদ্মা মেঘনা যমুনা পাড়ের এ জাতিকে জিম্মি করে রেখেছে বছরের পর বছর ধরে।' নকল, ভেজাল এবং মুনাফাখোরি সম্পর্কে রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুশাসনের বিষয়টি অনেকেরই অজানা আবার যাদের জানা তারা না জানার অভিনয় করেন। বিষয়গুলো সবার সজ্ঞান মানসিকতায় আনা দরকার। অধিক মুনাফা অর্জনের আকাঙ্ক্ষা, অপব্যয়, অপচয়, আত্মসাতের প্রবণতা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সার্বিকভাবে সব পক্ষের মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন। মানসিকতা পরিবর্তনে আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় সুশাসন পর্যবেক্ষণে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ পদক্ষেপ ও ব্যবস্থা প্রয়োজন। এর পাশাপাশি এ বিষয়ে মসজিদের ইমাম, মন্দির-গির্জার পুরোহিতরাও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারেন। মসজিদের ইমাম, মন্দির, প্যাগোডা ও গির্জার পুরোহিতরা নকল, ভেজাল ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিরুদ্ধে বিশ্বাসী মানুষকে সচেতন করে তুললে সবার সজ্ঞান মানসিকতার উন্নতি হতে পারে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যারা এসব নিয়ম-কানুন প্রয়োগ ও প্রতিপালন পরিবীক্ষণের দায়িত্বে তাদেরও যথারীতি দায়িত্ব পালনে সজাগ ও সক্রিয় হওয়া বা থাকাটা যথাযথ অর্থবহ হওয়ার আবশ্যকতা রয়েছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ ও দেখভালের দায়িত্বপালনকারী নিজেরাই যেন ব্যবসার ব্যয় বাড়িয়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ হিসেবে না দাঁড়ান সে দিকে সমাজকে সতর্ক থাকার দরকার হবে। উদাহরণস্বরূপ রমজানে ডালের মূল্য বৃদ্ধির কার্যকারণ হিসেবে উল্লেখ করা যায়, একটি পত্রিকার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দেখা যায়_ রমজানে দেশে ডালের চাহিদা ১ লাখ ৪০ হাজার টন। বর্তমানে মজুদ আছে ৪ লাখ টন, যা দিয়ে সারা বছরের চাহিদা পূরণ সম্ভব। তারপরও রোজার শুরুতেই বেড়েছে সব ধরনের ডালের দাম। এজন্য সিন্ডিকেটকেই দায়ী করছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। আবার পাইকাররা দুষছেন ব্যবসায়ী ও আবহাওয়াকে। পেঁয়াজু, হালিমসহ বিভিন্ন খাবারে ডালের বহুল ব্যবহারের কারণে প্রতিবার রমজানে মসুর, মুগ, অ্যাঙ্কর ও খেসারির চাহিদা বাড়ে। চাহিদা বৃদ্ধির এ সুযোগে দামও বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। পত্রিকান্তরে প্রকাশ, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে প্রতি কেজি দেশি মসুর ৫ টাকা, আমদানি মসুর ৪, অ্যাঙ্কর ২, মুগ ৩ ও খেসারি ডালের দাম ৪ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা বলেছেন, কয়েক দিনে বাড়তি চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বাজারে সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন মিল মালিকরা। ফলে বাজারে কিছুটা সঙ্কট চলছে, যার প্রভাবে বাড়ছে দাম। পাশাপাশি কিছু মিল মালিক বৃষ্টি ও আবহাওয়া খারাপ থাকার অজুহাত দিচ্ছেন। আর আমদানিকারকরা বলছেন, গত বছর লোকসানের পর এবার আমদানি কম হওয়ায় সরবরাহ কমেছে বাজারে। পরস্পর প্রযুক্ত কারণ আর পরস্পরের দোষারোপের সংস্কৃতিতে একইসঙ্গে খোঁড়া যুক্তির বন্যায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের সব প্রয়াসকে ব্যর্থ করে দিয়ে দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলেছে। এমনকি ফুটপাতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর ক্ষুদ্র কেনাবেচার ক্ষেত্রে যে চাঁদাবাজি তার পরিমাণ কয়েকশ' কোটি টাকা। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে এসব 'বিনিয়োগ ছাড়াই অর্থ উপার্জন' জাতীয় কর্মকা- প্রভাবক ভূমিকা রাখছে। দুনিয়ার সব দেশে উৎসব বা পার্বণ উপলক্ষে সরবরাহের ব্যাপকতায় দ্রব্যমূল্য বরং প্রতিযোগিতামূলক হয়ে যখন সাশ্রয়ী হয়ে ওঠে, বাংলাদেশে ঘটে ঠিক তার উল্টোটা। আসন্ন ঈদ উৎসবকে উপলক্ষ করেও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি দেশের ঐতিহ্যের অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রবণতা অব্যাহতভাবে অগ্রসরমান ঈদকে সামনে রেখে। এখন বাজার জমজমাট নিকট প্রতিবেশী দেশের পোশাকের চোরাচালানে। জুন মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই আসতে শুরু করেছে বাণিজ্যিকভাবে আমদানিকারকদের শাড়ি, থ্রিপিস, লেহেঙ্গা, ছেলেমেয়ে, শিশুদের বাহারি শার্ট, প্যান্ট, গেঞ্জিসহ বিভিন্ন ধরনের তৈরি পোশাক ও থান কাপড়। নিজ দেশের উৎপাদন সক্ষমতা ও ব্যবস্থাকে পর্যুদস্ত করতে দেশের সর্বত্রই বিদেশে উৎপাদিত পোশাকের ব্যাপক চাহিদা বৃদ্ধির আয়োজন চলছে আত্ম উন্নয়নবিমুখ এ দেশে। অভিযোগ উঠছে, সীমান্তের শুল্ক দফতরের মাধ্যমে যে মূল্যে এসব পোশাকের চালান খালাস হয় তার চেয়ে অনেকগুণ বেশি মূল্যে ঢাকাসহ সর্বত্র এসব বিক্রি হয়। এভাবে নামমাত্র মূল্য ঘোষণা দিয়ে একদিকে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হয়, অপরদিকে হুন্ডির মাধ্যমে পাচার হয় বৈদেশিক মুদ্রা। জানা গেছে, ঈদের বাজারের চাহিদা মেটাতে অসাধু আমদানিকারকদের বড় সিন্ডিকেট কাজ করছে। তারা শত শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। সীমান্তের বিভিন্ন দফতর ও বাহিনীর কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে নামমাত্র মূল্য ঘোষণা দিয়ে অবাধে পণ্য খালাস হয়ে চলে আসছে। ঈদকে সামনে রেখে বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেখা যায় আগের তুলনায় অনেক বেশি আসে বিদেশি পণ্যের চালান। বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা উপলক্ষ করে বাজার ব্যবস্থাপনাসহ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মধারায় যেসব বংশবদ সমস্যা সবার দৃষ্টিসীমায় আসে, সেগুলো সুরাহা কিংবা প্রতিরোধ ও প্রতিবিধানের ব্যাপারে উপযুক্ত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ আবশ্যক অনস্বীকার্য হয়ে উঠছে। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/১৯-০৭-০১৪:
Link copied!