AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার গুরুত্ব


Ekushey Sangbad

০৫:১০ এএম, জুলাই ২০, ২০১৪
বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার গুরুত্ব

একুশে সংবাদ : ভরা কাটালের জোয়ার ও ভারী বর্ষণের কারণে দেশের উপকূলীয় অনেক জেলা এবার ব্যাপকভাবে প্লাবিত হইয়াছে। এই রকম অস্বাভাবিক জোয়ার নিকট অতীতে আর কখনও দেখা যায় নাই বলিয়া জানা যায়। স্বাভাবিকের চাইতে দুই হইতে তিন ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হয় এই জোয়ার। ফলে এবার ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণও বেশি। ভোলা, নোয়াখালীর কিছু অংশ, পটুয়াখালী, বাগেরহাট, বরগুনা, লক্ষীপুর জেলার নিম্নভাগ এবং ভান্ডারিয়া ও কাউখালীসহ পিরোজপুর জেলার নদীতীরবর্তী বহু গ্রামজনপদ পানিতে তলাইয়া যায়। বাড়িঘরে ঢুকিয়া পড়ে পানি। গত ১২ জুলাই পূর্ণিমা শুরুর পর হইতে সমুদ্রের পানি স্ফীত হইতে থাকে। তাহার প্রভাবে বৃদ্ধি পাইতে থাকে নদীর পানি। সেই সঙ্গে ভারী বর্ষণে পরিস্থিতির অবনতি হয়। আবহাওয়া বিভাগের দাবি অনুযায়ী গতকাল ১৯ জুলাই পূর্ণিমার অবসান হইবার পর বন্যার পানি কমিতে শুরু করিবার কথা। কিন্তু ইত্তেফাকসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও অনলাইনের খবরে জানা যাইতেছে যে, এখনও বহু এলাকা জলমগ্ন রহিয়াছে। সেখানকার পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগের অন্ত নাই। অনেকেই প্রায় এক সপ্তাহ ধরিয়া পানিবন্দী থাকিলেও সরকারি ত্রাণ সহায়তা পান নাই বলিয়া অভিযোগ করিয়াছেন। তাই সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগেও ত্রাণ তত্পরতা অব্যাহত রাখিতে হইবে। চলতি জোয়ার-প্লাবনে এতদঞ্চলের মানুষের যে সার্বিক ক্ষয়-ক্ষতি হইয়াছে, তাহা এক কথায় অবর্ণনীয়। তাহার পরও যতটা সম্ভব দুর্যোগ কাটাইয়া উঠিতে প্রশাসনের নিরন্তর চেষ্টা চালানো উচিত। যাহারা এখনও পানিবন্দী হইয়া দুর্দশায় রহিয়াছে, তাহাদের সর্বাগ্রে উদ্ধার করা কিংবা তাহাদের সুযোগ-সুবিধার দিকে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। এই বন্যায় ফসলের বহু জমি ও গোচারণ ভূমি ডুবিয়া গিয়াছে। ডুবিয়া গিয়াছে আমন ধানের বীজতলা। অনেক এলাকায় ভাসিয়া গিয়াছে পুকুরের মাছ। তাহাছাড়া নদী ভাঙনে বাড়িয়াছে ক্ষয়-ক্ষতি। অনেক বাঁধ ভাঙিয়া গিয়াছে এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ক্ষতির সম্মুখীন হইয়াছে। পানি কমিয়া যাওয়ার পর ক্ষয়-ক্ষতির সত্যিকার চিত্রটি পাওয়া যাইতে পারে। তবে বন্যার সময় উদ্ধার ও ত্রাণ তত্পরতার চাইতে বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন প্রক্রিয়া কোন অংশেই কম গুরুত্বপূর্ণ নহে। এ সময় বন্যা উপদ্রুত এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। দেখা দেয় পানিবাহিত বিভিন্ন অসুখ-বিসুখ। ইহার মোকাবিলায় সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করিতে হইবে। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলিতে ইহার প্রস্তুতি থাকা দরকার। যাহাদের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছে, তাহাদের যথাসম্ভব সাহায্য-সহযোগিতা করিতে হইবে। কৃষক যাহাতে আবার বীজতলা গড়িয়া তুলিতে পারে, এইজন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সাহায্য ও ঋণ প্রদান জরুরি। এইক্ষেত্রে শুধু মুখ দেখিয়া নহে, বরং প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত করিতে হইবে। বন্যার পর পানি কমিয়া গেলেও সর্বসাধারণের সবচাইতে বড় দুর্ভোগ হইবে রাস্তাঘাটে চলিতে গিয়া। কেননা রাস্তাঘাট পানির নিচে তলাইয়া যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি হইয়াছে। জোয়ারের পানির স্রোতের তীব্রতায় পাকা সড়ক ভাঙিয়া গিয়াছে। কোথাও কোথাও ফেরি ঘাটের পন্টুন ও গ্যাংওয়ে ডুবিয়া যায়। কলাপাড়ার এমনই একটি ফেরিঘাটের বেহাল দশার ছবি ছাপা হইয়াছে ইত্তেফাকের প্রথম পৃষ্ঠায়। তাহাছাড়া অতিরিক্ত পানির চাপে বিভিন্ন সংযোগ সড়ক পানিতে নিমজ্জিত হইলে বিভিন্ন রুটের বাস ও যান পারাপারে বিঘ্ন ঘটে। পানি নামিয়া যাওয়ার পর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হওয়া উচিত যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করা। এইজন্য ভগ্ন ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার প্রয়োজনীয় সংস্কারে খুব দ্রুত মনোযোগ দিতে হইবে। বেড়িবাঁধগুলি সংস্কারেও অনতিবিলম্বে অর্থ বরাদ্দ করিতে হইবে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনদের অভিযোগ, এইবারের বন্যার ভয়াবহতার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড সবচাইতে বেশি দায়ী। এই বোর্ডের অবহেলা ও সুষ্ঠু তদারকির অভাবে যথাসময়ে বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হয় নাই। সাধারণত উপকূল এলাকায় প্রতি বত্সর দুইবার বন্যা দেখা দেয়। একবার জুলাইয়ে এবং অন্যবার অক্টোবরে। সুতারং হাতে সময় অত্যন্ত কম। এই অল্প সময়ের মধ্যে রাস্তাঘাট ও বিশেষত বাঁধ মেরামত করিতে হইবে। নতুবা সামনে এতদঞ্চলের মানুষ আবার জোয়ার-বন্যায় নিপতিত হইতে পারেন। সেই অনুযায়ী পুনর্বাসনমূলক কর্মকান্ড হাতে নেওয়া আবশ্যক। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২০-০৭-০১৪:
Link copied!