দিনাজপুরে অধিক ফলনশীল মিষ্টি কুমড়ার উন্নত জাত উদ্ভাবন
একুশে সংবাদ : দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা গবেষণা করে মিষ্টি কুমড়ার দুটি উন্নত জাত উদ্ভাবন করেছেন।
নতুন উদ্ভাবিত কুমড়া জাত দুটি হলো ‘হাজী’ ও ‘দানেশ’। এই কুমড়া অধিক ফলনশীল ও পুষ্টিমানের দিক থেকে ক্যারোটিনের ভান্ডার হিসেবে কাজ করবে বলে গবেষকেরা জানিয়েছেন।
পুষ্টিমানের দিক থেকে ক্যারোটিনের ভান্ডার হিসেবে কাজ করে এমন উদ্ভাবিত কোনো জাত বাংলাদেশে আর কোথাও নেই বলে দাবি তাদের। বিদেশ থেকে আমদানিকৃত কিছু জাত এ দেশে চাষাবাদ হলেও বিভিন্ন পরিবেশিক কারণে তার যথাযথ ফলন হয় না।
বাংলাদেশের বেসরকারি বীজ প্রতিষ্ঠানে লাল তীর সিড লিমিটেডের প্রধান উদ্ভিদ প্রজননবিদ জি এম মহসীন তার গবেষণা কার্যক্রমকে আরো ফলপ্রসূ ও ত্বরান্বিত করতে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগে মিষ্টি কুমড়ার ফলন সম্পর্কিত কৌলিতত্ত্ব শীর্ষক গবেষণায় পিএইচডি কার্যক্রম শুরু করেন ২০১১ সালের জুন মাসে।
এই কার্যক্রমে সার্বিক তত্ত্বাবধান ও দিকনির্দেশনায় ছিলেন হাবিপ্রবির কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. হাসানুজ্জামান। সহ-তত্ত্বাবধানে ছিলেন একই বিভাগের অধ্যাপক ড. ভবেন্দ্র কুমার বিশ্বাস।
মূল গবেষণা তথা মিষ্টি কুমড়ার জাত উন্নয়নের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে দেশে-বিদেশের মিষ্টি কুমড়ার বিভিন্ন জাত সংগ্রহ করে তা মূল্যায়নের মাধ্যমে উপযুক্ত, উন্নত জাত খুঁজে বের করা হয়।
পরে হাইব্রিড, উৎপাদনশীলতা, বাংলাদেশের উপযোগী ও চাহিদা মূল্যায়ন করে দুই জাতকে সুপারিশ করা হয় এবং বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ে জাতীয় বীজ বোর্ডে ‘হাজী’ ও ‘দানেশ’ হাইব্রিড নামে নিবন্ধিত হয়।
বাংলাদেশের স্থানীয় মিষ্টিকুমড়ার জাত যেখানে ৭-৯ টন হেক্টরপ্রতি ফলন দেয় সেখানে এই গবেষণায় উদ্ভাবিত ‘হাজী’ ও ‘দানেশ’ যথাক্রমে ১২-১৪ টন হেক্টরপ্রতি এবং ১৬-১৭ টন ফলন দেবে। এ ছাড়া, প্রতিটি ফলের গড় ওজন তিন থেকে ছয় কেজি। দেশের সব জায়গাতেই চাষের উপযোগী।
পরীক্ষামূলকভাবে দিনাজপুর জেলার ঘুঘুডাঙ্গার কৃষক মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী তার ১০ শতাংশ জমিতে মিষ্টি কুমড়ার নতুন এ দুটি জাত চাষ করেন এবং তিনি আশানুরূপ ফলন পান।
হাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক মো. রুহুল আমিন বলেন, এ জাতীয় গবেষণা দেশের বীজ শিল্পকে উৎসাহিত করবে, যা দেশের সামগ্রিক কৃষি অর্থনীতি বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। এ উদ্ভাবন দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তনের সঙ্গে পুষ্টির চাহিদা মেটাবে।
একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২০-০৭-০১৪:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :