AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসুন জাফলংয়ে!


Ekushey Sangbad

০৬:৫৯ এএম, জুলাই ২৪, ২০১৪
ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসুন জাফলংয়ে!

একুশে সংবাদ : অজানাকে জানতে-দেখতে কার না ইচ্ছা জাগে। এ ইচ্ছার সঙ্গে মিলে গেল আরেকটা উপলক্ষ। এমনই সুযোগ করে দিল বেসরকারি সংস্থা ম্যাসলাইন মিডিয়া সেন্টার (এমএমসি)। সংস্থাটি গণমাধ্যম নিয়ে কাজ করে। এবার তাদের সঙ্গে দ্বিতীয়বারের মতো যাচ্ছি সিলেট অঞ্চলে। উদ্দেশ স্থানীয় সরকার বিষয়ে হাওর ঘেরা জেলা সুনামগঞ্জের কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদ পরিদর্শন এবং এখনকার জীবন-জীবিকা ও স্থানীয় সরকার বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন। ঢাকার শ্যামলীর একটি রেস্ট হাউসে ২০১২ সালের ১৫ ডিসেম্বর রাজশাহী বিভাগের কয়েক সাংবাদিক উপস্থিত হলাম। রাতে এমএমসির রাজশাহী বিভাগের আঞ্চলিক প্রকল্প কর্মকর্তা মিজান ভাই (মিজানুর রহমান) জানালেন, সকাল পৌনে ৭টায় ট্রেন ছাড়বে। পরদিন বিজয় দিবসের সারাদিন চলে গেল ট্রেনে। চোখ জুড়ানো পাহাড়ী বন, লেবুর বাগান ও চা বাগান দেখে দিনটা ভালোই কাটল। সিলেটে নামতেই সরাসরি নিয়ে যাওয়া হলো শহরের দেশি খাবারের হোটেল পাঁচভাই’য়ে। তৃপ্তি নিয়ে খেতে না খেতে ঘড়ির কাঁটা জানান দিল বিকেল ৫টা বেজে গেছে। এবার ঘণ্টা দেড়েকের পথ পাড়ি দিয়ে হবে সুনামগঞ্জ। সে বিরাট ঝক্কি! একে তো সরু রাস্তা, তারপর অধিকাংশ স্থানে সড়ক বাতি নেই। একসময় শহরের পাশে একটা কটেজের সামনে থামল মাইক্রোবাস। ছোট শহর হলেও সুন্দর-পরিপাটি। তেমন কোলাহল নেই। আপাতত বিশ্রাম। পরদিন কাটবে একাধিক ইউনিয়ন পরিষদ পরিদর্শনে। ঠিক হলো ১৮ তারিখ সকালে জাফলং যাব। কিন্তু একটি রাজনৈতিক দল সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে। কি করা যায়? ভাবতেই পাবনার ফজলু ভাই তার এক গোয়েন্দা পুলিশ বন্ধুর সহযোগিতা চাইলেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা এলেন। একটি মাইক্রোবাস ঠিক করে দিলেন। কিন্তু রাত যেন আর ফুরাতে চাইছে না। এ অবসরে কেনাকাটার জন্য গেলাম মনিপুরীদের বাজারে। এ নৃ-গোষ্ঠীর বিভিন্ন দোকান ঘুরে আম্মা, স্ত্রী ও মেয়ের জন্য কেনাকাটা করলাম। ভোরে মাইক্রোবাস হাজির হলো। নাস্তা না করে রওনা হলাম। একাধিক স্থানে পুলিশ জিজ্ঞাসা করল কোথায় যাবেন? আবার গাড়িতে সাংবাদিক লেখা দেখে হরতালকারীরা হাত নাড়িয়ে শুভেচ্ছাও দিল। কিছুক্ষণের মধ্যে চলে এলাম জাফলংয়ের রাস্তায়। সকালের ঝিরি ঝিরি বাতাসে চোখে ঘুম এসে গেল। মাঝে মাঝে ঝাঁকুনিতে জেগে উঠি। এভাবেই একসময় চোখ মেলে দেখি পাহাড় দিয়ে বাংলাদেশ আর ভারতকে ঘিরে রাখা জাফলং। তীব্র ঝাঁকুনিতে ঘুম ভাঙ্গায় মনে হলো আস্ত মাইক্রোবাসটাকে কে যেন শূন্যে তুলে আছাড় মারল। নেমেই হোটেলের দিকে রওনা। হাত মুখ ধুয়ে পরাটা খেতে শুরু করলাম। তারপর মেঘালয়ের দিকে তাকিয়ে একটি দীর্ঘঃশ্বাস ছাড়লাম। প্রকৃতির একি রহস্যঘেরা সৌন্দর্য! নামতে শুরু করলাম নদীর দিকে। জাফলংয়ের একি হাল! নদীজুড়ে ড্রেজার দিয়ে বালি উত্তোলনের মহাযজ্ঞ। টলটলে স্বচ্ছ পানির পরিবর্তে শুধু বালি আর বালি। মনটাই ভেঙে গেল। কিছুক্ষণ বালির ওপরে এলোমেলো হেঁটে বেড়াই। এরপর নদীর একপাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট্ট খালের মতো অংশ দিয়ে নৌকায় চলে যাই ভারত সীমান্তে। দেখি খুব কাছেই পাহাড় আর ঝর্ণা। পা বাড়ালেই ভারতের মাটি। ওপাশের পাহাড়গুলোতে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও বাদ সাধে বেরসিক বিজিবি। অগত্য এ পাড়ে চলে ফটোসেশন। পাহাড়ের চূড়ায় নানা বর্ণের মেঘ। পাহাড়ের অকৃত্রিম সৌন্দর্য দেখতে না পাওয়ার দুঃখ রয়েই যায়। ইস! আর একটু হলেই তো আমাদের হত। নদী থেকে লম্বা ও সরু নৌকাতে পাথর উঠাচ্ছেন স্থানীয়রা। একপাশে বিশাল পাহাড়। পাহাড় হতে নেমে আসা ঝর্ণায় মন বিমোহিত হয়। জোয়ার না থাকায় নদীতে স্রোত নেই। এ সব দৃশ্য বন্দি হতে থাকে ক্যামেরায়। অবাক লাগে, প্রতিবেশী দেশের সর্বগ্রাসা নীতিতে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। যৌবন হারাচ্ছে শত শত নদী। এ সময় এক বিজিবি জওয়ানের সঙ্গে আমাদের পরিচয় ঘটে। বাংলাদেশি জাতীয় পতাকাযুক্ত নৌকা করে খাসিয়া পল্লী ঘুরিয়ে দেখান। জানান তার বাড়ি রংপুর। খাসিয়া পল্লীতে মুখোমুখি হই বিচিত্র অভিজ্ঞতার। এ পল্লীতে অনেকেই প্রথম এলাম। ১৯৯৭ সালে রোভার মুটে অংশ নিয়ে জাফলং এসেছিলাম। কিন্তু সীমান্ত অশান্ত থাকায় গাড়ি থেকে নামতে দেওয়া হয়নি। আজ সেই ভয় নেই। তাই বেশ উত্তেজনা ও আনন্দ নিয়ে চারদিক ঘুরে দেখি। পাহাড়ঘেরা সবুজ প্রকৃতি। উঁচু-নিচু টিলা, মাঝে মাঝে সমতল ভূমি। সেখানেই খাসিয়াদের আবাস। মাটি হতে ৪-৫ হাত উঁচুতে তাদের ঘর-বাড়ি। কত বৈচিত্রময় তাদের জীবন। পোশাক-পরিচ্ছদ, পরিষ্কার ঘরবাড়ি পছন্দ হয়ে যায় অনেকের। বাড়ি চারপাশে পান-সুপারি গাছ। সুপারি গাছে সাপের মতো আছে পান গাছ। অদ্ভূত সৌন্দর্য। সারাদিন জাফলং, খাসিয়াপল্লী, তামাবিল সীমান্ত, কাস্টমস এলাকা, চা বাগান ও পাথর উত্তোলন ঘোরা হলো। এরপর মনিপুরীদের তৈরি দ্রব্য ও ভারতের বিভিন্ন সামগ্রী কেনাকাটা করতেই কখন যে ৪টা বেজে গেছে টের পাইনি। এবার বাড়ি ফেরার পালা। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২৪-০৭-০১৪:
Link copied!