বিলুপ্ত হচ্ছে হনুমান
একুশে সংবাদ ডেস্ক : যশোরের কেশবপুরের গ্রামগুলোতে কয়েক বছর আগেও বাস করতো কয়েক হাজার কলোমুখো হনুমান। কিন্তু এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে কয়েক শ’তে। বন উজাড় হওয়া, খাদ্যের অভাব, বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে মৃত্যু প্রভৃতি কারণে দিনে দিনে কমে যাচ্ছে হনুমান।
যুগ যুগ ধরে কেশবপুর সদর ও পার্শ্ববতী এলাকার ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিরল প্রজাতির এই হনুমানের বাস। স্থানীয় প্রশাসন জানায়, বর্তমানে ওই এলাকায় প্রায় ২৫০টি হনুমান আছে। কেশবপুর বাজারের সাহাপাড়া, পশু হাসপাতাল, উপজেলা অফিস, শ্রীগঞ্জ বাজার, ব্রহ্মকাঠি, রামচন্দ্রপুর প্রভৃতি এলাকা হনুমানদের বিচরণক্ষেত্র। কিন্তু আশ্রয়, খাদ্য সঙ্কট, প্রতিকূল আবহাওয়া ও বৈরী পরিবেশের শিকার হয়ে বিলুপ্তির পথে এই হনুমান। অথচ কিছুদিন আগেও এ হনুমানগুলো বাংলাদেশের জীববৈচিত্রের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হতো।
৩০ থেকে ৪০ বছর আগে কয়েক হাজার হনুমান কেশবপুরের গ্রামাঞ্চলে বনবাদাড়ে চলাচল করতো। কিন্তু কেশবপুর এলাকায় বন কমে যাওয়ায় হনুমানের আবাসস্থল সঙ্কুচিত হচ্ছে। এছাড়া প্রতি মাসেই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে মারা যাচ্ছে অনেক হনুমান।
কেশবপুরের এই হনুমান সাধারণত লম্বায় ২৪ ইঞ্চি থেকে ৩০ ইঞ্চি এবং উচ্চতায় ১২ ইঞ্চি থেকে ২০ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এদের গড় আয়ু ২০-২৫ বছর। পাঁচ বছর বয়স থেকে ছয়মাস অন্তর বাচ্চা দেয়। ওজন পাঁচ থেকে ২৫ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। মুখের মতো হাত ও পায়ের পাতা কালো। চলাফেরা করার সময় এরা লেজ উঁচু করে চলে। তবে গাছে বসলে তারা লেজ ঝুলিয়ে দেয়। এরা সাধারণত একজন পুরুষ হনুমানের নেতৃত্বে দলবদ্ধভাবে চলাচল করে। প্রতিটি দলে ১০ থেকে ৫০টি হনুমান থাকে। এদের প্রতিটি সদস্য দলপতির নির্দেশ মেনে চলে।
কলা, পেঁপে, আম, আমড়া, সফেদা, জাম্বুরা, মূলা, বেগুন ইত্যাদি ফলমূল, শাক-সবজি, গাছের মুকুল, কচিপাতা, বাদাম এবং বিস্কুট এদের প্রিয় খাদ্য। কেশবপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সায়েদ মো. মঞ্জুর আলম জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে হনুমানের জন্য যে খাবার সরবরাহ করা হয়, তা অনেক কম। ।
ঐতিহ্যবাহী কালোমুখো হনুমান সংরক্ষণে সরকার এগিয়ে আসবে এমনটাই প্রত্যাশা কেশবপুরের মানুষের।
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :