AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা নেই : দুদুক


Ekushey Sangbad

০৬:৪২ এএম, জুলাই ২৬, ২০১৪
 আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা নেই : দুদুক

একুশে সংবাদ : বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু দুর্নীতিতে সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের জড়িত থাকার কোন তথ্য পায়নি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এছাড়া কানাডা রয়্যাল পুলিশ থেকে যে তথ্য এসেছে তাতেও আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। দুদকের একটি বিশ্বস্ত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগের তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী মাসের শুরুতেই ওই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা মির্জা জাহিদুল ইসলাম। সংশ্লিষ্ট এক তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দুদকের কাছে বেশ কিছু তথ্য দিয়েছে কানাডা রয়্যাল পুলিশ। কানাডা থেকে যে তথ্য এসেছে তাতে সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে জানান ওই তদন্ত কর্মকর্তা। দুদকের কমিশনার (তদন্ত) সাহাবুদ্দিন চুপ্পু জানান, কানাডার আদালতে বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীকে অভিযুক্ত করে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল তাও স্থগিত করা হয়েছে। সেখানে আবুল হাসান চৌধুরী একজন আইনজীবীও নিয়োগ করেছেন। তার উদ্যোগের পরিপ্রেক্ষিতে কানাডার আদালত ঘোষণা করে, কানাডার আদালতে বিদেশের একজন নাগরিকের বিচার করা সম্ভব হবে না। কানাডায় মামলা চলমান থাকতে এখানে প্রতিবেদন জমা দিতে কোনও জটিলতা হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কানাডার তদন্তের সঙ্গে আমাদের এখন আর কোনও সম্পর্ক নেই। এখানে যা পাব তদন্ত সেভাবেই এগোবে। কানাডার আদালতে আমাদের দেশের নাগরিকের বিচার চলবে না বলে আবুল হাসান চৌধুরীর বিচারকাজ স্থগিত হয়েছে। তাই আমাদের এখানে প্রতিবেদন জমা দিতে বাধা নেই। দুদক সূত্র আরো জানায়, কানাডা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকায় পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগের ঘটনায় এ পর্যন্ত যত জনের নাম এসেছে তাদের সকলের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সন্দেহভাজনের তালিকায় থাকা সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন এবং বিশেষজ্ঞ কমিটির বক্তব্যও নেওয়া হয়েছে। আবুল হোসেন তার বক্তব্যে নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ বলে দাবি করেন। ৮ জুলাই দুদক সৈয়দ আবুল হোসেনকে বক্তব্য দেওয়ার জন্য নোটিশ জারি করে দুদক। জবাবে ছয় পৃষ্ঠার বক্তব্য দেন আবুল হোসেন। তাতে বলেন, “দেশ ও বিদেশের একটি স্বার্থান্বেষী মহলের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের ইন্টিগ্রিটি ভাইস প্রেসিডেন্সির কতিপয় কর্মকর্তার গোপন যোগাযোগ এবং অসত্য তথ্য প্রদানের ফলেই পদ্মা সেতুর কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কানাডায় এসএনসি-লাভালিন এর কতিপয় সাবেক কর্মকর্তার নামে যে বিচারপ্রক্রিয়া চালু রয়েছে তাতে আমাকে কোনও অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়নি। বিশ্বব্যাংকের পদ্মা সেতু সম্পর্কিত অভিযোগে আমি কোনোভাবে জড়িত নই। আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ।” আবুল হোসেন এ নিয়ে চারবার দুদকের কাছে তার বক্তব্য দিয়েছেন। তাতে তিনি বলেন, “পদ্মা সেতুর প্রতিটি পর্যায়ে বিশ্বব্যাংকের গাইডলাইন মানা হয়েছে। প্রতিটি কাজে বিশ্বব্যাংকের অনুসমর্থন ছিল- তা প্রমাণসহ উপস্থাপন করেছি, পরামর্শক ও দরদাতা নির্বাচন যে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে করা হয়েছে-তাও বলেছি।” পরামর্শক নিয়োগের ব্যাপারে আবুল হোসেন বলেন, কিছু পত্রিকার ‘বাড়াবাড়ি‘ এবং বাইরের অপশক্তির প্ররোচনায় বিশ্বব্যাংক অহেতুক বাংলাদেশের একটি বড় প্রকল্পে ঋণ বাতিল করেছে। আবুল হোসেন আরও জানান, নির্মাণ তদারকি পরামর্শক কনস্ট্রাকশন সুপারভাইজার কনসালটেন্ট নিয়োগের জন্য প্রথম আবেদনকারী কনসালটেন্টদের একটি শর্টলিস্ট করা হয় এবং তা অনুমোদনের জন্য বিশ্বব্যাংকের কাছে পাঠানো হয়। বিশ্বব্যাংক তা অনুমোদন করে। পরে বিশ্বব্যাংকের অনুমোদিত শর্টলিস্টে অন্তর্ভুক্ত কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ওই দরপত্রগুলো ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একদল বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে গঠিত প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি (চঊঈ) মূল্যায়ন করে। এ কমিটিতে বিশ্বব্যাংকের মনোনীত সিনিয়র কনসালটেন্ট ড. দাউদও ছিলেন। পরে বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়ন রিপোর্ট বিশ্বব্যাংকে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। কমিটি পুনর্গঠনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিশ্বব্যাংকের পরামর্শ ও সম্মতি নেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞ কমিটির কারিগরী মূল্যায়ন রিপোর্টেও বিশ্বব্যাংক অনুমোদন দেয়। পরে ওই কমিটি বিশ্বব্যাংকের গাইডলাইন অনুযায়ী কারিগরি মূল্যায়নের উপর ৯০ শতাংশ এবং আর্থিক প্রস্তাবের ওপর ১০ শতাংশ ওয়েটেজ দিয়ে প্রস্তাব চূড়ান্ত করে। বিশেষজ্ঞ কমিটির চূড়ান্ত মূল্যায়নে এসএনসি-লাভালিন প্রথম হয়। আবুল হোসেন দুদককে বলেছেন, “বিশ্বব্যাংকের ইন্টিগ্রিটি ভাইস প্রেসিডেন্সি অফিসে প্রেরিত কিছু বেনামি ই-মেইলের বিষয়ে সচিব আমাকে মৌখিকভাবে জানিয়েছিলেন। যেহেতু দরপত্র আহ্বানের সময় দরদাতাদের মধ্যে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব ও বেনামি চিঠি লেখার রেওয়াজ বাংলাদেশে প্রায়ই পরিলক্ষিত হয়, সেহেতু বিষয়টির প্রতি আমি গুরুত্ব দেইনি। আন্তর্জাতিকভাবে বিশেষজ্ঞ কমিটি যেভাবে টেকনিক্যাল বিষয় মূল্যায়ন করেছে-আমি সেটার ওপরই গুরুত্ব দিয়েছি। এক্ষেত্রে আমি তাদের প্রস্তাবের কোনও পরিমার্জন, পরিবর্তন, পরিবর্ধন, বিয়োজন করিনি বা এ ব্যাপারে কমিটির কোনও সদস্যকে অনুরোধও করিনি।” বিশ্বব্যাংকের ইন্টিগ্রিটি বিভাগের কেউ ঢাকায় এসেছে কি-না, এ বিষয়ে তিনি বলেন, “তারা কেউ আমার সাথে দেখা করেননি বা দেখা করার অনুমতিও চাননি। পরামর্শক নিয়োগে অনিয়মের কথা বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ অফিসের প্রতিনিধি বা ওয়াশিংটনের কোনও কর্মকর্তাও আমাকে জানাননি।” এ ধরনের প্রক্রিয়ায় হঠাৎ করে বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির আশঙ্কা ও ঋণচুক্তি বাতিলকে নজিরবিহীন উল্লেখ করে আবুল হোসেন বলেন, বিশ্বব্যাংক ভুল করেছে। চিঠিতে আবুল হোসেন আরও জানিয়েছেন, “এসএনসি-লাভালিনের প্রতিনিধিরা অন্যান্য দরদাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের মতো আমার সাথে দেখা করেছেন। তাদের বলেছি, আইন, নিয়ম ও মেরিট অনুযায়ী তাদের প্রতিষ্ঠান যোগ্য বিবেচিত হলে বিষয়টি দেখব।” এর সঙ্গে আবুল হাসান চৌধুরীর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তিনি এসেছিলেন-এসএনসি-লাভালিনের কর্মকর্তাদের সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিতে। অনুরোধ জানিয়েছেন, এসএনসি-লাভালিনের দরপ্রস্তাব যেন ঠিকভাবে মূল্যায়িত হয়। তাদের প্রতি যাতে অবিচার করা না হয়। আবুল হাসান চৌধুরী সম্ভবত দু‘বার আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। তিনি যে সকল প্রতিনিধি নিয়ে আমার সঙ্গে দেখা করেছেন তাদের দেখলে সম্ভবত এখন আইডেনটিফাই করতে পারব না। তবে, আমি কারো সঙ্গে এককভাবে দেখা করিনি।” এসএনসি-লাভালিনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কোনও গোপন বৈঠক হয়নি বলেও দাবি করেন আবুল হোসেন। নিক্সন চৌধুরীর ব্যাপারে বলেছেন, তিনি কখনও পদ্মা সেতুর বিষয় নিয়ে আমার কাছে আসেননি। তবে, সেতু বিভাগের কোনও কর্মকর্তার কাছে এসেছিলেন কি-না জানা নেই। তার নিজস্ব কোম্পানি প্রসঙ্গে বলেছেন, “সাকো ইন্টারন্যাশনাল লি. যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কোনও টেন্ডারে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অংশ নেয়নি। এসএনসি-লাভালিনের সঙ্গে আমার পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কোনও সংশ্লিষ্টতা কখনও ছিল না।” দুটি পত্রিকার নাম উল্লেখ করে আবুল হোসেন বলেছেন, পত্রিকা দুটি পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগে সাড়ে ৩ কোটি ডলার দেওয়া হয়েছে মর্মে যে সংবাদ প্রকাশ করেছে তা হাস্যকর। পরামর্শক নিয়োগে মোট বাজেট ছিল ৫০ মিলিয়ন ডলার, আর এসএনসি-লাভালিনের প্রস্তাবিত দর ছিল ৩৭ মিলিয়ন ডলার। তাই প্রতিবেদনগুলো বাস্তবতাবর্জিত বলে দাবি করেন তিনি। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২৬-০৭-০১৪:
Link copied!