ইসলামে 'শান্তি ও মানবাধিকার'
একুশে সংবাদ : আজ বিশ্বজুড়ে যে দুটি শব্দ বেশি উচ্চারিত হচ্ছে তা হলো ‘শান্তি ও মানবাধিকার’। এ শব্দ পরস্পর পরিপূরক। শান্তি এ কথাটি বড় অর্থবোধক ও ব্যাপক। শান্তির সন্ধানে বিশ্ব মানব আজ নিরাশ হয়ে ফিরছে। কিন্তু ‘শান্তি’ যেন বহু দূরের পথ, আর, সে পথে বহু বাধা। ‘শান্তি’ শব্দটি পবিত্র কুরআনে একমাত্র রাসূল (সা.) ছাড়া অন্য কারো জন্য ব্যবহূত হয়নি। কারণ, শান্তির নবী একমাত্র তিনিই। তাই তার এক উপাধি রাহমাতুল্লিল আলামিন।
সেদিন শুধু আরবময় সারাটা বিশ্ব ডুবে গিয়েছিল জ্ঞানহীন এক ঘোর অন্ধকারে মানবতাহীন রুদ্ররূপে গ্রাস করেছিল সকল মানবীয় গুণাবলীকে। মানবাধিকার বলতে তখন ছিল জোর-জুলুম ও অত্যাচার। এমন এক সঙ্কটকালে মানুষের জন্য শান্তি ও মুক্তির বাণী নিয়ে সর্বযুগের সর্বকালের মানুষের উত্তম আদর্শ হয়ে বিশ্বে প্রেরিত হন হযরত মোহাম্মদ (সা.)। তাই, আজ ও অশান্ত বিশ্বে শান্তির জন্য যে মানুষটির বড় প্রয়োজন তিনি হলেন— ‘রাহমাতুল্লিল আলামিন’। কারণ আল্লাহ বলেছেন, ‘হে নবী! আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি, বিশ্বের শান্তি, কল্যাণ ও মুক্তির পথ প্রদর্শক হিসাবে।’ (আল-কুরআন)
ইসলাম শব্দ উত্পন্ন হয়েছে—‘সলম’ থেকে যার অর্থ শান্তি। আর সে শান্তির মূর্ত প্রতীক হলেন মোহাম্মদ (সা.)। ইসলামে শান্তির ধারণা মৌলিক ও ব্যাপক। ইসলাম ও নবী (সা.) এর সাথে এটা গভীরভাবে জড়িত। তাই, ব্যক্তি জীবনে, সমাজ জীবনে, রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এবং আত্মিক জীবনে রাসূল (সা.) হলেন অনুসরণীয় ও অনুকরণীয়। কেহ যদি মনে করে থাকেন ১৪শ বছর পূর্বের ইসলাম ও মোহাম্মদ (সা.) এর আদর্শ আজ অচল তা হলে বড় ভুল করা হবে। কারণ আল্লাহ বলেন, ‘হে রাসূল! আমি আপনাকে সমগ্র মানবজাতির জন্য রাসূল (সা.) রূপে প্রেরণ করেছি এবং আল্লাহর সাক্ষীই যথেষ্ট। রাসূল (সা.) কেবল সে সময়ের জন্য নয়, সর্বকালের জন্য শান্তি ও মুক্তির আদর্শ।
শান্তির দুনিয়া গড়ার জন্য এবং মানবাধিকারের সে সুন্দর আদর্শ তিনি রেখে গেছেন তা বর্তমান অশান্ত ও মানবাধিকার এ বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে।
ইসলামের দৃষ্টিতে মানবাধিকার হলো ‘মানুষকে মানুষ হিসেবে সমাজে, স্বাধীন ও সুন্দর জীবন যাপনের জন্য প্রয়োজনীয় অধিকার দেয়া ও কর্তব্য সম্পাদন।’ ১৯৪৮ সালের ডিসেম্বর মাসে জাতিসংঘে মানবাধিকার ঘোষণা করে তাতে বলা হয় মানুষ হিসেবে মানুষের কতকগুলো অধিকার রয়েছে-এগুলোর মর্যাদা রক্ষা করা সকলের কর্তব্য। অধিকারগুলো হলো— স্বাধীনতার অধিকার, সাম্য, সমতার অধিকার, মালিকানার অধিকার—ইত্যাদি।
দুঃখজনক হলেও সত্য আজ জাতিসংঘ ও তার মুরব্বি রাষ্ট্রগুলোর মানবাধিকারের খেলাপ আমরা দেখছি তা পক্ষপাতদৃষ্ট। পশ্চিমা বিশ্ব আজ প্রচার করছে ইসলামে মানবাধিকার কে ততটা গুরুত্ব দেয়নি যেভাবে তারা গুরুত্ব দিচ্ছে। অথচ আজ হতে ১৪শ বছর পূর্বে ‘মদিনাসনদ’ এবং বিদায় হজ সুন্দরভাবে বাস্তবায়িত হয়েছিল।
মোহাম্মদ (সা.) বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম মানবাধিকার প্রবক্তা, জাতিসংঘ সনদ এক পেশে এবং ইসলামের মানবাধিকারের তুলনায় তা অসম্পূর্ণ। আজকের সঙ্কটতাপন্ন নির্যাতিত ও অধিকারহারা মানবতার সত্যিকার মুক্তির জন্য মোহাম্মদ (সা.) এর কোনো বিকল্প নেই।
একুশে সংবাদ ডটকম/আর/১৬-০৮-০১৪:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :