নারীরা যেভাবে হারিয়ে যায় …….
একুশে সংবাদ : সুচিত্রা সেনকে দেখার পর মনে হয়েছিলো এই জীবনে বোধহয় আর কোনদিন কোন নারীকে ভালো লাগবে না । টানা টানা চেহারার আশ্চর্য মায়াবী চোখের সুচিত্রা সেন । মনে পড়ে প্রথম কৈশোরে কতো রাতের পর রাত সুচিত্রা সেনের চোখের কথা ভেবে ভেবে তার মাঝে জীবনানন্দের নক্ষত্রের ছায়া দেখেছি । সেই সুচিত্রা সেন ….
সেই স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা …..
জীবনানন্দের কবিতার সাথে মনে হয় খেয়ালি রাজকন্যার আশ্চর্য মিল রয়েছে …
আগুন , বাতাস – জল
আদিম দেবতারা তাদের বঙ্কিম পরিহাসে
তোমাকে দিলো রূপ —
কী ভয়াবহ নির্জন রূপ তোমাকে দিলো তারা
আর তোমার সংস্পর্শের মানুষদের রক্তে দিলো
মাছির মতো কামনা ।
তারপর সুচিত্রা সেন চলে গেলে আসে সোনালী বেন্দ্রে ….
কৈশোরের সেই অবসেশনে কোন মেয়ে দেখলেই সোনালীর সাথে তুলনা করতে ইচ্ছে করতো । ক্লাসমেট কোন মেয়েকেই ভালো লাগতো না । মনে হতো ইশ সোনালী যদি আমার চেয়ে কয়েক বছরের ছোট হতো তবে পৃথিবীর কী এমন ক্ষতি হয়ে যেতো ? :)
1পাশের বাড়ির পাড়াতো মামা তাজুল মামার নতুন বউ ছিলো রাঙামামি । রাঙামামির গায়ের রঙ যেনো সত্যি দুধে আলতায় রাঙা ছিলো । তখন আমার বয়েস কতোই বা হবে ? নয় কিংবা দশ । রাঙামামি আমাকে খুবই আদর করতো । পায়েস রান্না করে আমার জন্য বাড়িতে নিয়ে আসতো । একদিন ভরদুপুরে মামির জন্য আম পাড়তে যেয়ে গাছ থেকে পড়ে পা মচকে গিয়েছিলো । মামি একথা শোনে দৌড়ে এসে আমায় বুকে জড়িয়ে ধরে কাদতে লাগলো । সেই অপূর্ব সুন্দরী রাঙামামিকে আশ্চর্য রকম ভালো লাগতো আমার ।
এরপর হিন্দু পাড়ার বকুলদি , ক্লাস টেনে পড়ার সময় বাংলা ম্যাডাম … আরো কতোশতো রমনীকে দেখে ব্যাকুল হয়েছি । কবিতা লিখেছি হিসেব নেই …..
শুরু করেছিলাম সুচিত্রা সেনের কথা বলে । মাঝে মাঝে বড্ড আফসোস লাগে …… নারীরা বোধহয় এমনই ….
নারীরা এমনই । রূপ মাধুর্য হঠাত করেই একদিন বিকেলের রোদের মতো ম্লান হয়ে যায় । হাতের রেখাগুলো গাঢ় হতে গাঢ়তর হয় …. চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয় … কিছুটা সময়ের টানে , বাকিটা বোধহয় ফেলে আসা বয়েসের কথা ভেবে ।
রূপবতীদের মতো সুন্দর , নরোম , কোমল কোনকিছু বোধহয় নেই পৃথিবীতে । হুমায়ূন আজাদ বলেছিলো … আমি এই পৃথিবীতে বেচে আছি ফুল , নারী এবং শিশুদের জন্য ….
আর আমি বলি , জীবনানন্দের ভাষায় ….
”আগুন বাতাস জল : আদিম দেবতারা তাদের বঙ্কিম পরিহাসে
রূপের বীজ ছড়িয়ে চলে পৃথিবীতে
ছড়িয়ে চলে স্বপ্নের বীজ।
অবাক হয়ে ভাবি
আজ রাতে কোথায় তুমি?
রূপ কেন নির্জন দেবদারু-দ্বীপের নক্ষত্রের ছায়া চেনে না-
পৃথিবীর সেই মানুষীর রূপ?
স্থুল হাতে ব্যবহৃত হ’য়ে- ব্যবহৃত –ব্যবহৃত –ব্যবহৃত –ব্যবহৃত –হয়ে
ব্যবহৃত –ব্যবহৃত –
আগুন বাতাস জল : আদিম দেবতারা হো_ হো ক’রে হেসে উঠলোঃ
‘ব্যবহৃত – ব্যবহৃত হ’য়ে শুয়োরের মাংস হয়ে যায়? ”
সত্যি , সবকিছু শেষ হয়ে যায় ….সবকিছু ….
একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২০-০৮-০১৪:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :