মরিচ চাষে বদলে গেছে কৃষকের ভাগ্য
একুশে সংবাদ: কুড়িগ্রামে এবার মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। সেই সাথে মরিচের বাজার চাঙ্গা থাকায় লাভের মুখ দেখেছে কৃষকরা। গত কয়েক বছর ধরে কুড়িগ্রামের কয়েকটি এলাকায় মরিচ চাষ করে বদলে গেছে অনেক কৃষকের ভাগ্য।
অনুকূল আবহাওয়া ও চাষ কৌশলের কারণে এ বছর মরিচের ভাল ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষীরা। অল্প পরিমাণ জমিতে মরিচ বেচে লাখ টাকা ঘরে তুলতে পেরে খুশি তারা।
জেলার সদর উপজেলার শিবরাম, খালিসা কালোয়া, গয়ারী, রাজারহাট উপজেলার ছিনাই, দেবালয়সহ কয়েকটি গ্রামে মরিচ চাষের প্রসার ঘটছে। মরিচের মড়ক রোগের কারণে আগে কৃষকরা মরিচ চাষে আগ্রহী না হলেও এখন বদলে গেছে দৃশ্যপট। কৃষি বিভাগের পরামর্শে নিত্য নতুন চাষ কৌশল আর ওষুধ প্রয়োগ করে মরিচের ভাল ফলন ঘরে তুলছে চাষীরা। সেই সাথে বাজারে মরিচের দাম এবার চাঙ্গা থাকায় লাভের অংক বেড়েই চলেছে।
সদর উপজেলার খালিসা কালোয়া গ্রামের চওড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায় দিগন্ত বিস্তৃত মরিচের ক্ষেত। এখানে প্রায় এক সাথে ৩০ একর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে এবার। মরিচ ক্ষেতের পরিচর্যা ও গাছ থেকে মরিচ তোলায় ব্যস্ত নারী ও পুরুষ মজুররা।
মরিচ চাষী লায়েক আলী (৪০) জানান, এ বছর তিনি ৪০ শতক জমিতে মরিচ চাষ করে এ পর্যন্ত ৩০ মণ মরিচ থেকে ১ লাখ টাকার মরিচ বিক্রি করেছেন। খরচ পড়েছে ৩০ হাজার টাকার মতো। বর্তমান বাজার অব্যাহত থাকলে আরো ৫০ হাজার টাকার মরিচ বিক্রির আশা তার।
মরিচ চাষী চান্দ ব্যাপারী জানান, ক্ষেতের ৫ কিলোমিটার দূরে কুড়িগ্রাম বাজারে। আর সেখানে মরিচ বিক্রির সুবিধা ছাড়াও ঢাকার পাইকাররাও এখান থেকে মরিচ কিনে নিয়ে যান। কাজেই বাজারজাত করার কোন সমস্যা নেই। মরিচ ক্ষেতে ঠিকমত ওষুধ প্রয়োগ না করলে পোকার উৎপাত আর মড়কে বেশী হয়। তবে মরিচের মড়ক প্রতিরোধে আরো কার্যকর ওষুধ ও পরামর্শ পাওয়া গেলে আবাদ আরো বাড়তো বলে তার মত।
কৃষকরা আরো জানান, দোঁ আশ মাটি, সেখানে পানি জমে না, এমন জমিতে মরিচের আবাদ ভাল হয়। চৈত্র মাসে মরিচ চারা রোপন করে আষাঢ় থেকে কার্তিক পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। অল্প জমিতে পরিচর্যা করে মরিচ ক্ষেত থেকে অধিক লাভ করা যায় বলে অনেকেই ঝুঁকে পড়ছেন মরিচ চাষে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মজনুর রহমান জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে মরিচের আবাদ করায় এবং সাফল্য পাওয়ায় কুড়িগ্রামে দিনে দিনে মরিচ চাষের প্রসার ঘটছে।
একুশে সংবাদ ডট কম/মামুন/২০.০৮.২০১৪
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :